বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন করলে ভারত যাওয়ার প্রয়োজন নেই।’
তিনি বলেছেন, এবারের বাজেটে স্বাস্থ্য খাতকে গুরুত্ব দিতে হবে। কেন আমরা এতো ডলার খরচ করে ভারতে যাব? কেন তাদের টাকা দিয়ে আসব? আমাদের দেশের ডাক্তার নার্সদের ঠিক মতো লজিস্টিক সাপোর্ট দিতে পারলে কেউই চিকিৎসার জন্য ভারতে যেত না। এসব কাজের প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারকে নজর দিতে হবে।
আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আন্তর্জাতিক নার্স দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ন্যাব) এই সভার আয়োজন করে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে রিজভী বলেন, আপনারা অনেক দূর তাকিয়ে সিদ্ধান্ত নিন, না হলে কিন্তু বিপদ হতে পারে। যে কোনো ঘটনায় আবেগবশত সিদ্ধান্ত নিলে পরে সমস্যা হতে পারে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও ওয়েলফেয়ার খাত উন্নত করার উদ্যোগ নিন।
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল একজন মহীয়সী নারী ছিলেন। একজন ধনী পরিবারের মেয়ে হয়ে তিনি সমাজকল্যাণ কাজে নেমে আসেন। তিনি মানুষের সেবার জন্য নার্সিং পেশা চালু করেন। তিনি শত্রু-মিত্র সবার সেবা করেছেন।
একজন নার্স মায়ের সেবা হিসেবেই দায়িত্ব পালন করেন উল্লেখ করে রিজভী বলেন, রাজনৈতিক কারণে অনেকবার আমাকে হাসপাতালে যেতে হয়েছে। সেখানে নার্সিংয়ের যে মহিমান্বিত রূপ- যা মনোমুগ্ধকর। তাদের সেবার ভাষা আমি প্রকাশ করতে পারব না। পৃথিবীতে শ্রেষ্ঠ সেবা মায়ের সেবা। কিন্তু আমাদের দেশে নার্সকে সামাজিকভাবে হেয় করা হয়।
তিনি বলেন, নার্সের প্রতি কেবল বৈষম্য দেখানো হয়। শুধু আমাদের দেশেই নয়, দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে এ অবস্থা। এমনকি নার্সদের আবাসন সুবিধা নেই। তাদের কাজের কারণে তিন শিফটেও কাজ করতে হয়, কিন্তু ক্যাম্পাসে তাদের আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়নি। নিজের বেতন থেকে বাসা ভাড়া দিতে হয়। আমাদের যেমন ভালো ডাক্তার দরকার, তেমনি নার্সদের যে লজিস্টিক সাপোর্ট দরকার সেটি দিতে হবে।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, দেশে উড়াল সেতু, মেগা প্রজেক্ট হয়েছে তবে সত্যিকারের উন্নতি হয়নি। যে দেশের হিউম্যান উন্নতি হয় না, সে দেশ কখনো সামনে এগিয়ে যেতে পারে না। লুটপাট ও পাচার হওয়া টাকার অর্ধেক স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় করলে দেশ উন্নতি লাভ করত। করোনার সময় স্বাস্থ্য খাতে অনিয়ম হয়েছে, যার নায়ক দরবেশ। তিনি এখন জেলে আছেন।
নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জাহানারা সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী, বিএনপির স্বনির্ভর বিষয়ক সহ-সম্পাদক নিলোফার চৌধুরী মনি, সহ-প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৩৫:৫৮ ৮৬ বার পঠিত
