
পর্বতারোহণ ও অভিযাত্রার মাধ্যমে বাংলাদেশ ও নেপালের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করতে বাংলাদেশি অভিযাত্রীদের অসাধারণ অবদানের কথা স্মরণ করে ৭২তম আন্তর্জাতিক সাগরমাথা (মাউন্ট এভারেস্ট) দিবস উদ্যাপন করেছে ঢাকাস্থ নেপাল দূতাবাস।
শুক্রবার সন্ধ্যায় এখানে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের ‘স্টোরিজ ফ্রম দ্য সামিট: মাউন্টেইনস থ্রু দ্য বাংলাদেশ আইজ’ শিরোনামের অধিবেশনে বাংলাদেশের পর্বতারোহী, ট্রেকার ও প্রকৃতি আলোকচিত্রীদের অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে হিমালয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের দৃঢ় সম্পর্ককে তুলে ধরা হয়।
বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন। তিনি বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গসমূহ জয় করার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশি পর্বতারোহীদের প্রশংসা করেন।
তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি মোকাবেলায় পাহাড় ও নদী-নির্ভর প্রতিবেশব্যবস্থা সংরক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, এই পরিবেশব্যবস্থাগুলো দক্ষিণ এশিয়ার কোটি মানুষের জীবিকায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারি সাগরমাথার (মাউন্ট এভারেস্টের নেপালি নাম) প্রতি বাংলাদেশি মানুষের আগ্রহ ও অভিযাত্রার আকর্ষণের কথা উল্লেখ করে তাদের নির্ভীক অভিযাত্রাপ্রবণতার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
তিনি বৈশ্বিক জলবায়ু আলোচনায় পর্বত-সম্পর্কিত বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন এবং হিমালয়ের পরিবেশব্যবস্থার ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক করেন।
অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল ইকরামুল হাসান শাকিলকে সংবর্ধনা প্রদান, যিনি ২০২৫ সালের ১৯ মে ‘সি টু সামিট’ অভিযানের অংশ হিসেবে কক্সবাজার থেকে পায়ে হেঁটে ১,৩০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে এভারেস্টের চূড়ায় পৌঁছেন।
উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান ও রাষ্ট্রদূত ভান্ডারি যৌথভাবে তাকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রথম সর্বমহিলা অভিযাত্রী দল: নিশাত মজুমদার, ইয়াসমিন লিসা, অর্পিতা দেবনাথ, মৌসুমী আক্তার ও তাহুরা সুলতানা রেখাকে সম্মাননা দেওয়া হয়। তারা ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে সফলভাবে নেপালের লাংটাং অঞ্চলের তিনটি শৃঙ্গ আরোহণ করেন।
অনুষ্ঠানে প্রকৃতিপ্রেমী ও লেখক ইনাম আল-হকের সঞ্চালনায় একটি মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এভারেস্টজয়ী এমএ মোহিত, নিশাত মজুমদার, মোহাম্মদ বাবর আলী এবং ইকরামুল হাসান শাকিল তাদের অভিজ্ঞতা, পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ এবং হিমালয়ের প্রতি আবেগময় সম্পর্কের কথা শেয়ার করেন।
নেপাল দূতাবাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এই সন্ধ্যা শুধু পর্বতারোহণের উৎসব ছিল না; বরং এটি পরিবেশ ও জলবায়ু সংরক্ষণে আন্তঃসীমান্ত সহযোগিতা জোরদারের একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবেও কাজ করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৪০:২৯ ১৭ বার পঠিত