রবিবার, ১০ আগস্ট ২০২৫

বিচার বিভাগ কখনোই রাষ্ট্রের প্রভাবশালী অঙ্গ হয়ে ওঠেনি : প্রধান বিচারপতি

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » বিচার বিভাগ কখনোই রাষ্ট্রের প্রভাবশালী অঙ্গ হয়ে ওঠেনি : প্রধান বিচারপতি
রবিবার, ১০ আগস্ট ২০২৫



বিচার বিভাগ কখনোই রাষ্ট্রের প্রভাবশালী অঙ্গ হয়ে ওঠেনি : প্রধান বিচারপতি

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, ‘বিচার বিভাগ কখনোই রাষ্ট্রের অন্য দুটি অঙ্গে ওপর (নির্বাহী বিভাগ ও আইনসভা) আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে চায়নি। বিচার বিভাগের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা মানে ‘বিচার বিভাগীয় আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করা নয়। বরং রাষ্ট্রের অন্য দুটি অঙ্গের সঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিক সমতা নিশ্চিত করা।’

প্রয়াত সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ও সুপ্রিম আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এ জে মোহাম্মদ আলীর স্মরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

রবিবার (১০ আগস্ট) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এ জে মোহাম্মদ আলী অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

বিচার বিভাগের জন্য স্বতন্ত্র সচিবালয় প্রতিষ্ঠা নিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘৫০ বছর ধরে বিচার বিভাগ রাষ্ট্রের অন্য দুটি অঙ্গের সাথে সমতা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে যাচ্ছে। বিচার বিভাগের জন্য স্বতন্ত্র সচিবালয় প্রতিষ্ঠার চাওয়াকে সমতা প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা হিসেবেই বিবেচনা করা উচিত।

তিনি বলেন, ‘গত ৫০ বছরে বিচার বিভাগ কখনোই রাষ্ট্রের প্রভাবশালী অঙ্গ হয়ে ওঠেনি। যদিও এই পুরো সময়টায় বিচার বিভাগ একটি কার্যকর অঙ্গ হিসেবে কাজ করে গেছে। রাষ্ট্রের একমাত্র কর্মক্ষম অঙ্গ হিসেবে ভূমিকা রেখেছে।’

বিচার বিভাগের প্রধান বলেন, ‘বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক স্বাধীনতার অধিকারকে বিচার বিভাগীয় আধিপত্য প্রতিষ্ঠা হিসেবে দেখাটা একেবারেই ঠিক না।
এটি একটি ভ্রান্ত ধারণা, বিচার বিভাগ এমন কিছু চায় না। এমন ধরণা সম্পূর্ণ অমূলক।’

সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, ‘বিচার বিভাগীয় স্বাধীনতা কোনো বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, রাষ্ট্রের সাংবিধানিক কাঠামোর সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যবাবে শক্তিশালী, দৃশ্যমান, জবাবদিহিমূলক একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করা।’

প্রধান বিচারপতি ২০০৫ সালে যুক্তরাজ্যের সাংবিধানিক সংস্কার আইনের উদাহরণ টেনে বলেন, ‘এই আইনটি সে দেশের ক্ষমতা বিভাজনের ভারসাম্যকে অক্ষুণ্ন রেখেছিল।
একই সঙ্গে রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গের মধ্যে সমন্বয়ের পথও খোলা রেখেছিল। এই আইনের ফলে প্রধান বিচারপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে সংযোগ আরো দৃঢ় হয়েছিল। স্বাধীনতা অক্ষুণ্ন রেখে বিচার বিভাগ রাষ্ট্রের অন্য অঙ্গের সঙ্গে কার্যকর সম্পর্ক স্থাপন করেছিল।’

এ জে মোহাম্মদ আলীকে স্মরণ করে সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, ‘তিনি বিশ্বাস করতেন অবকাঠামোগত ভিত্তি ছাড়া স্বাধীনতা একটি অলীক কল্পনা। তিনি মনে করতেন কোনো জাতি উন্নতি ততক্ষণ পর্যন্ত হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত আদালত সাংবিধানিকভাবে সুরক্ষিত এবং প্রশাসনিকভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত না হয়।’

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। স্মরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন হাইকোর্টের সাবেক বিচারপতি মো. শরিফউদ্দিন চাকলাদার। এতে প্রধান আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন।

বাংলাদেশ সময়: ২২:১৩:১৩   ৮ বার পঠিত