
জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার বালিজুড়ী-সরিষাবাড়ী ভাটারা সড়কের প্রায় ১৮ কিলোমিটার অংশ এখন স্থানীয়দের কাছে দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পিচ, ইট, ও পাথর উঠে গিয়ে সড়কে তৈরি হয়েছে অসংখ্য ছোট-বড় গর্ত। সামান্য বৃষ্টি হলেই এসব গর্তে পানি জমে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা, যা যানবাহন চলাচলকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে। এতে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন এই পথে চলাচলকারী হাজারো মানুষ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বালিজুড়ী থেকে ভাটারা পর্যন্ত পুরো ১৮ কিলোমিটার সড়কের বেশিরভাগ অংশই ভাঙাচোরা। বিশেষ করে জোনাইল বাজার ব্রিজ থেকে আদারভিটা ইউনিয়নের পলিশা মোড় পর্যন্ত অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। এই পথে বাস, ট্রাক, ভ্যান, এবং অন্যান্য যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।
বাসচালক সোলাইমান মিয়া জানান, দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় চালকরা সবসময় দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে থাকেন। বৃষ্টির সময় গর্তগুলো পানিতে ভরে যাওয়ায় সেগুলো বোঝা যায় না, যার ফলে প্রায়ই গাড়ি উল্টে যাওয়ার মতো দুর্ঘটনা ঘটে। ভ্যানচালক নাছির আকন্দেরও একই অভিজ্ঞতা। তিনি বলেন, ভাঙা রাস্তার কারণে যাত্রী ও মালামাল নিয়ে ভ্যান চালানো খুবই কষ্টকর।
শুধু চালকরাই নন, এই সড়কের বেহাল দশায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সব স্তরের মানুষ। জোনাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সিয়াম জানায়, বর্ষায় রাস্তা কাদাপানিতে ভরে গেলে যাতায়াত করতে গিয়ে তাদের জামাকাপড় ও বইপত্র নষ্ট হয়ে যায়। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ওমর ফারুক বলেন, বৃষ্টির সময় রাস্তা চলাচল প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। গর্তের গভীরতা বুঝতে না পেরে প্রায়ই যানবাহন উল্টে যায়, যা বড় ধরনের দুর্ঘটনার জন্ম দেয়।
সড়কের এমন করুণ অবস্থার পেছনের কারণ হিসেবে স্থানীয়রা অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থাকে দায়ী করছেন। সড়কের পাশে গড়ে ওঠা বাজার ও বাড়িঘর থেকে পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টির পানি সরাসরি সড়কে এসে জমে। এতে পিচ-খোয়া উঠে গিয়ে রাস্তা আরও দ্রুত ভাঙছে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) গোলাম কিবরিয়া তমাল জানান, সড়কটি সংস্কারের জন্য এলজিইডির সদর দপ্তরে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে তারা অনুমোদনের অপেক্ষায় আছেন। অনুমোদন পেলে দ্রুতই সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।
এখন দেখার বিষয়, স্থানীয়দের দুর্ভোগের অবসান ঘটিয়ে সড়কটি কবে নাগাদ নতুন রূপ ফিরে পায়।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:২৮:৫৩ ১০ বার পঠিত