![]()
জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় যমুনা নদীতে কৃত্রিম গ্যাস তৈরি করে এবং ব্যাটারিচালিত ‘বৈদ্যুতিক শক মেশিন’ ব্যবহার করে রাতের আঁধারে মাছ শিকারের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এই অবৈধ উপায়ে মাছ শিকারের ফলে এলাকার জীববৈচিত্র্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। এতে দিন দিন নদীতে মাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় সাধারণ জেলেরা পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার সাপধরী ইউনিয়নের প্রজাপতি, কোদালধুয়া, কাঁসারীডোবা, শীলদহ গ্রাম সংলগ্ন যমুনা নদীর বেশ কিছু শাখা নদীতে রাতের আঁধারে কিছু অসাধু জেলে কৃত্রিমভাবে গ্যাস তৈরির মাধ্যমে ও বৈদ্যুতিক ‘শক মেশিন’ ব্যবহার করে অবাধে মাছ শিকার করছেন।
নদীর পাড়ের স্থানীয়রা জানান, নদীতে মাছ শিকারে কারেন্ট জাল, রিং জাল ও চায়না চাইয়ের ব্যবহার আগে থেকেই বাড়ছিল, যার ফলে কাঙ্ক্ষিত মাছ মিলছিল না। এর সঙ্গে নতুন করে যোগ হয়েছে এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে গ্যাস তৈরির মেশিন এবং বৈদ্যুতিক ‘শক মেশিন’। এই পদ্ধতিতে মাছ শিকার করার কারণে পোনা, ডিমসহ অন্যান্য জলজপ্রাণীও মারা যাচ্ছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, এভাবে চলতে থাকলে এক সময় নদীতে মাছের জন্য হাহাকার দেখা দেবে।
গুঠাইল পাইলিং পাড়ের স্থানীয় জেলে মল্লিকচন্দ্র বলেন, “আগে নদীতে জাল ফেললেই মাছ পেতাম। এখন সারাদিন বসে থেকেও মাছের দেখা পাই না। আর যা পাই তা দিয়ে সংসার চলে না। একে তো কারেন্ট জাল আর চায়না চাই দিয়ে ব্যাপক আকারে মাছ ধরে আগেই মাছের বংশ শেষ করে ফেলছে। এখন আবার যোগ হয়েছে গ্যাস দিয়ে কৃত্রিম উপায়ে ও বৈদ্যুতিক মেশিনের ব্যবহারে। এইভাবে মাছ শিকার করলে মনে হয় নদীতে তারা আর কোনো মাছই রাখবো না।”
চর মন্নিয়া গ্রামের জেলে সদাগর আক্ষেপ করে বলেন, “নদীতে আগের তুলনায় মাছ পাওয়া যায় না। জেলেরা সারাদিন জাল নিয়ে বসে থাকেন, সারাদিনে ৪০০/৫০০ টাকার মাছও পান না। মেশিন দিয়েও ছোট-বড় সব মাছ মেরে ফেলা হচ্ছে, যার ফলে মাছের অভাব দেখা দিয়েছে। সারাদিনে ২০০/৩০০ টাকার মাছও পাই না। এভাবে চলতে থাকলে পরিবার-পরিজন নিয়ে অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটাতে হবে।”
এ বিষয়ে ইসলামপুর সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, “নদীতে এ ধরনের বৈদ্যুতিক ‘শক মেশিন’ দিয়ে এভাবে মাছ শিকার করা হচ্ছে বলে আমার কাছে কোনো অভিযোগ বা তথ্য নেই।” তবে তিনি এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:৫৪:৪৩ ১৬ বার পঠিত