![]()
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘এবারের নির্বাচন এত সহজ হবে না। ষড়যন্ত্র থেমে নেই। তাই যেকোনো মূল্যে নির্বাচন হতে হবে, আমাদের এমন পরিস্থিতি তৈরি করতে হবে।’
তারেক রহমান বলেন, ‘যে কথাটা আমি আগে বলেছিলাম যে, নির্বাচন এতো সহজ হবে না, ষড়যন্ত্র কিন্তু থেমে নেই। গত কয়েকদিনের ঘটনা, গতকালকের ঘটনা, চট্টগ্রামে আমাদের প্রার্থীর উপরে গুলিবর্ষণের ঘটনা এই সবকিছু নিয়েই প্রমাণিত হচ্ছে যে, যা আমি বলছিলাম তা কিন্তু সত্য হচ্ছে আস্তে আস্তে। কাজেই আমরা যদি নিজেদের মধ্যে মতপার্থক্য কমিয়ে নিয়ে না আসি, আমরা যদি নিজেরা ঐক্যবদ্ধ না হই। এই দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে। ’
আজ শনিবার বিকেলে দেশ গড়ার পরিকল্পনা শীর্ষক এক কর্মশালায় সারাদেশ থেকে আসা দলের মাঠ পর্যায়ের নেতাদের উদ্দেশে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।
রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’র সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচির আজ সমাপনী অনুষ্ঠান হয়। এতে সারা দেশ থেকে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতারা অংশ নেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সবাইকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘যে ষড়যন্ত্রগুলো চলেছে তা থেমে থাকবে না। আরো খারাপ রূপ নিতে পারে। কিন্তু আমাদের ভয় পেলে চলবে না। আতঙ্কগ্রস্ত হলে চলবে না। মানুষকে সাহস দিতে হবে। নিজেদেরকে আরো ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। দেশের স্বাধীনতাকামী মানুষতে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। আমরা যতো সামনে এগিয়ে আসবো, পরিস্থিতি তৈরি করবো— যেকোনো মূল্যে নির্বাচন হতে হবে, ষড়যন্ত্রকারীরা তত পিছু হটতে বাধ্য হবে। কারণ, ষড়যন্ত্রকারীদের পিছু হটানোর ক্ষমতা এবং শক্তি একমাত্র বিএনপিরই আছে।’
প্রত্যেকবার দেশকে ধ্বংসের হাত থেকে বিএনপি উদ্ধার করেছে উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘প্রত্যেকবার এই দেশ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে গিয়েছে, প্রত্যেকবার আপনারা— কখনো শহীদ জিয়ার নেতৃত্বে, কখনো দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে, আস্তে আস্তে সেই খাদের কিনারা থেকে দেশকে আবার বের করে নিয়ে এসেছেন।’
আমি কী পেলাম এটা বাদ দিতে হবে উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘এখন আমাদের সময় এসেছে আমি কী পেলাম, এটা বাদ দিতে হবে। সময় এসেছে আমি দেশ এবং জাতির জন্য কতটুকু করতে পারলাম। আজ সময় এসেছে নিজে কী পেলাম এটা ভুলে যাওয়ার। দেশ এবং জাতিকে কী দিতে পারলাম, কতোটুকু করতে পারলাম, কী দেবো সেটা নিয়ে ভাবতে হবে। যদি দিতে পারি ইনশাআল্লাহ আমরা সম্মান, মর্যাদা পাবো। আমাদের লক্ষ্য হোক দেশের জন্য কাজ করার।’
নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘এখন আর ঘরে বসে থাকার সময় নেই। দয়া করে আসুন, এই যুদ্ধে আমাদেরকে জিততে হবে, এই যুদ্ধে জেতার সবচেয়ে বড় সহযোগী কে? বাংলাদেশের জনগণ। তাই বাংলাদেশের জনগণকে সাথে নিয়ে এই যুদ্ধে আমাদেরকে জিততে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। আসুন তিনটি বিষয়ে আপনাদের সহযোগিতা চাই। ইনশাল্লাহ আমি পাবো। দেখা হবে যুদ্ধের মাঠে, দেখা হবে সংগ্রামের মাঠে, দেখা হবে আপনাদের সাথে ভোটের ময়দানে।’
ফ্যামিলি কার্ড, কৃষক কার্ড, স্বাস্থ্য কার্ড, শিক্ষা, বেকার সমস্যা সমাধানসহ ৮টি বিষয় জনগণের কাছে সহজ ভাষায় তুলে ধরার জন্য উপস্থিত তরুণ নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘আমাদের দলের পরিকল্পনাগুলো তোমাদের কাছে অর্পণ করছি। আমি বিশ্বাস করি আজকে যে দায়িত্ব তোমাদেরকে দিলাম মানুষকে বোঝানোর জন্য, যে দায়িত্ব দিলাম মানুষের সমর্থন যোগাড়ের জন্য, সেটি তোমাদের সফল করতে হবে। কারণ, তোমাদের সেই যোগ্যতা আছে, তোমাদের সেই মেধা আছে।
তোমরা চাইলেই করতে পারবে। ফার্মার্স কার্ড, ফ্যামিলি কার্ড, হেলথ কার্ড প্রভৃতি বিষয়ে তোমাদের সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে, ঘরে ঘরে মানুষের কাছে পৌঁছে দেবে।’
দেশ গড়া পরিকল্পনা শীর্ষক কর্মসূচির বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলের সঞ্চালনায় এই কর্মশালা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৪৫:০৯ ৮ বার পঠিত