
জয়পুরহাট শহর ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক পিয়াল আহমেদ (২৮) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় থানায় মামলা করা হয়েছে। মামলায় ৮ জনের নাম উল্লেখ করে মোট ১৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। এরই মধ্যে মামলার তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দুপুরে জয়পুরহাট থানা পুলিশের ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. নাজমুল কাদের বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে বুধবার (২৮ মে) দুপুর ১২টার দিকে জেলা শহরের ইসলামনগর এলাকায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে পিয়াল আহমেদকে কুপিয়ে হত্যা করে হামলাকারীরা। ওই দিন সন্ধ্যা ৭টায় ছাত্রদলের ওই নেতার মা ইতি বেগম বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন- জয়পুরহাট পৌর শহরের ইসলামনগর এলাকার রুমেল হোসেনের স্ত্রী মোছা. নাসরিন (২৯), একই এলাকার সোহেলের স্ত্রী শ্রাবণী আক্তার (২৪) ও সদরের ভাদসা ইউনিয়নের দক্ষিণ কোঁচকুড়ি গ্রামের ছামছুদ্দীনের ছেলে মো. রাসেল (৩৫)।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, বুধবার দুপুর ১২টার দিকে আসামিরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে ইসলামনগর এলাকার পিয়াল বাইক ওয়াশ মোটরসাইকেল গ্যারেজের সামনে এসে অবস্থান নেয়। ওই সময় পিয়ালের মোবাইলে একটি কল আসলে কলটি রিসিভ করে কথা বলতে বলতে তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। এ সময় পিয়াল ওই বাইক ওয়াশের সামনে পৌঁছালে আসামিরা পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। পিয়াল প্রতিবাদ করলে তাকে মারধর করা হয়। তিনি দৌড়ে সেখান থেকে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে কয়েকজন আসামি ধাওয়া করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে পেটে আঘাত করে। পিয়াল মাটিতে পড়ে গেলে কয়েকজন আসামি তার হাত-পা ধরে থাকে এবং দুইজন ধারালো বারমিজ অস্ত্র দিয়ে পিয়ালের বুক-পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে জখম করা হয়। এতে ওই ছাত্রদল নেতা পিয়ালের নাড়িভুড়ির কিছু অংশ বের হয়। তার মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে আসামিরা সেখান থেকে চলে যান। তাৎক্ষণিক তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পিয়ালকে মৃত ঘোষণা করেন।
জয়পুরহাট থানা পুলিশের ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. নাজমুল কাদের বলেন, ঘটনার পর নিহত ছাত্রদল নেতার মা ইতি বেগম বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। মামলার পর নাসরিন ও শ্রাবণীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মামলার আরেকজন আসামি রাসেলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামিদের আজ সকালে আদালতে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটির বিষয়ে তদন্ত চলছে।
প্রসঙ্গত, ছাত্রদল নেতা পিয়াল আহমেদের সঙ্গে নিজ এলাকার কয়েকজনের সঙ্গে বিরোধ ছিল। বিরোধের জেরে হামলাকারীরা গত ১২ মার্চ রাতে তার নিজ বাড়ি এলাকার পাশে রেললাইনের ওপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে চলে যায়। দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন থাকার পরে তিনি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন। ওই ঘটনায় পিয়ালের বাবা বাচ্চু মিয়া বাদী হয়ে ৯ জনকে আসামি করে রেলওয়ে থানায় মামলা করেন। এর মধ্যে একজন কারাগারে রয়েছেন। আর অন্যরা জামিনে রয়েছেন। পূর্ব বিরোধের জের ধরে ২৮ মে তাকে আবারও নিজ এলাকায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন হামলাকারীরা। এতে তার মৃত্যু হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:৫৪:২০ ৩১ বার পঠিত