জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের পশ্চিম মালিপাড়া গ্রামের দীর্ঘদিনের বেহাল দশায় পড়ে থাকা একটি কাঁচা রাস্তা সংস্কার করে গ্রামবাসীর দুর্ভোগ লাঘব করেছেন শিক্ষানুরাগী রোবায়েত হোসেন বিপুল মাস্টার।
শুক্রবার (২০ জুন) সকালে পশ্চিম মালিপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বিপুল মাস্টারের এই মহতী উদ্যোগ গ্রহণ করায় গ্রামবাসী স্বতঃস্ফূর্তভাবে সহযোগিতা করছেন এবং রাস্তাটি চলাচলের উপযোগী হওয়ায় পশ্চিম মালিপাড়ার বাসিন্দারা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।
স্থানীয় মকবুল হোসেন ও তোফিল উদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই পশ্চিম মালিপাড়া গ্রামের এই রাস্তাটি চরম বেহাল অবস্থায় ছিল। সামান্য বৃষ্টিতেই কাদা-পানিতে একাকার হয়ে যেত, ফলে পথচারী ও যানবাহন চলাচলে মারাত্মক ভোগান্তির শিকার হচ্ছিলেন স্থানীয়রা। অসুস্থ রোগী বা গর্ভবতী মায়েদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়াও কঠিন হয়ে পড়তো। জনপ্রতিনিধিদের কাছে বারবার আবেদন করেও কোনো সুফল না পাওয়ায় হতাশায় ভুগছিলেন গ্রামবাসী।
এমন পরিস্থিতিতে এগিয়ে আসেন গ্রামেরই কৃতি সন্তান, শিক্ষানুরাগী রোবায়েত হোসেন বিপুল মাস্টার। গ্রামবাসীর দুর্ভোগ দেখে তিনি নিজ উদ্যোগেই রাস্তাটি সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেন। তার ব্যক্তিগত অর্থায়নে শুরু হয় রাস্তা মেরামতের কাজ।
এই মহতী কাজে বিপুল মাস্টারের ডাকে সাড়া দিয়ে গ্রামের আপামর জনসাধারণ শ্রম দিয়ে সহযোগিতা করেন। ছোট-বড় সকলে মিলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করায় অল্প সময়ের মধ্যেই রাস্তাটি সুন্দর সুগম হয়ে ওঠেছে।
শুক্রবার মসজিদে নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিরা বলেন, রাস্তা সংস্কারের ফলে পশ্চিম মালিপাড়া গ্রামের বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের কষ্ট দূর হয়েছে। এখন আমরা নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারবো এবং মসজিদে এসে জামাতের শহীদ নামাজ পড়তে পারবো। তাই রোবায়েত হোসেন বিপুল মাস্টারের এই মহানুভবতার জন্য গ্রামবাসী গভীর কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক সদস্য মামুন বলেন, বিপুল মাস্টার কেবল একটি রাস্তা সংস্কার করেননি, তিনি গ্রামবাসীর মুখে হাসি ফুটিয়েছেন এবং সমাজে সেবার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
এবিষয়ে বিপুল মাস্টারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন “গ্রামের এই রাস্তাটি দীর্ঘদিনের কষ্টের কারণ ছিল। বিভিন্ন জায়গায় খানাখন্দ হয়ে ছোট বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছিল। বর্ষায় কাদা আর শুকনায় ধুলায় যাতায়াত করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। গ্রামের মানুষজন দিনের পর দিন এই ভোগান্তি সহ্য করেছেন। তাদের দুঃখ আর কষ্ট আমি নিজের চোখে দেখেছি।
এই কষ্ট লাঘবে এবং তাদের ঐকান্তিক অনুরোধে, আমি নিজের সামান্য সামর্থ্য নিয়ে রাস্তাটি সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি। এটা আমার একার কাজ নয়, এটা আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফল।
আমি বিশ্বাস করি, এই রাস্তা সংস্কারের ফলে গ্রামের মানুষের জীবনে কিছুটা হলেও স্বস্তি আসবে। ছেলেমেয়েরা নির্বিঘ্নে স্কুলে যেতে পারবে, কৃষকেরা তাদের ফসল সহজে হাটবাজারে নিতে পারবে, আর অসুস্থদের দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া সম্ভব হবে।
গ্রামের প্রতিটি মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারাটাই আমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। আমি চাই আমাদের গ্রাম আরও উন্নত হোক, প্রতিটি মানুষ সুখে থাকুক। আপনাদের সকলের সহযোগিতা ও ভালোবাসাই আমার অনুপ্রেরণা।”
বাংলাদেশ সময়: ১৮:৪৭:০৯ ১৫৮ বার পঠিত