সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫

জামালপুরে ওয়ার্ড বিএনপির কার্যালয়ে ধর্ষণের অভিযোগ ধামাচাপার চেষ্টা, গ্রেপ্তার ৩

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » জামালপুরে ওয়ার্ড বিএনপির কার্যালয়ে ধর্ষণের অভিযোগ ধামাচাপার চেষ্টা, গ্রেপ্তার ৩
সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫



জামালপুরে ওয়ার্ড বিএনপির কার্যালয়ে ধর্ষণের অভিযোগ ধামাচাপার চেষ্টা, গ্রেপ্তার ৩

জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে ১২ বছর বয়সী এক কিশোরীকে একাধিকবার ধর্ষণের ঘটনায় সালিশ বৈঠকের মাতব্বরসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কিশোরীর মা মোছাঃ ফরিদা বেগম বাদী হয়ে ২৩ জুন সরিষাবাড়ী থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন। সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ রাশেদুল ইসলাম রাশেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, সরিষাবাড়ী উপজেলার আওনা ইউনিয়নের কুমারপাড়া এলাকার বাসিন্দা মোঃ জহুরুল ইসলামের মেয়ে (১২) পড়াশোনা বাদ দিয়ে বাড়িতেই থাকত। গত ১৪ জুন দুপুর আনুমানিক ২টার দিকে প্রতিবেশী শাহিন (৩৫) ফুসলিয়ে ও ভয় দেখিয়ে তাকে জোরপূর্বক নিজের ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করে। এরপর শাহিন একইভাবে ৪ দিন ধরে বিভিন্ন সময়ে ওই কিশোরীকে তার বসতঘরে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।

এরপর গত ১৭ জুন বিকাল আনুমানিক ৩টার দিকে আরেক প্রতিবেশী পারভেজ (৪০) বিষয়টি জানতে পেরে ভুক্তভোগীকে তার বসতঘর থেকে নিজের ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে ঘটনার কথা সবাইকে বলে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে পারভেজও তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে।

এরপর প্রতিবেশী লাভলু (৩২) বিষয়টি জানতে পেরে ভুক্তভোগীর সাথে খারাপ কাজ করার সুযোগ খুঁজতে থাকে। গত ১৯ জুন দুপুর ১টার দিকে লাভলু ভুক্তভোগীদের বাড়িতে আসে। বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে লাভলু ওই কিশোরীকে ঘরে একা পেয়ে ধর্ষণের উদ্দেশ্যে তার বুকে হাত দেয় এবং খাটের উপর শুইয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় ওই কিশোরী চিৎকার শুরু করলে লাভলু দ্রুত পালিয়ে যায়।

ঘটনাটি জানাজানি হলে, গত ২২ জুন রোববার রাত আনুমানিক ৮টার দিকে আওনা ইউনিয়নের কুমারপাড়া (করিম দহ) মোড় এলাকায় স্থানীয় ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির কার্যালয়ে সাবেক ইউপি সদস্য লিটন তালুকদারের (৫৫) নেতৃত্বে একটি সালিশ বৈঠক বসে। অভিযোগ উঠেছে, এ সময় গ্রেপ্তারকৃত আসামী মোঃ লিটন তালুকদার, মোঃ সেলিম (২৩), মোঃ কবির মিয়া (২৮) সহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪/৫ জন মিলে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার উদ্দেশ্যে ধর্ষণকারীদের সহযোগী হিসেবে কাজ করে। তারা আপোষ মীমাংসার কথা বলে ফরিদা বেগম ও তার মেয়েকে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করে।
পরে ফরিদা বেগম নিরুপায় হয়ে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পায়। এ সময় লিটন অনুসারীদের সাথে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ সেনাবাহিনীকে খবর দেয়। সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে এসে লিটন তালুকদার, সেলিম এবং কবির মিয়াকে আটক করে। এ সময় ধর্ষকরা পালিয়ে যায়। পরে আটক আসামিদের নিয়ে পলাতক আসামি শাহিন, পারভেজ ও লাভলুসহ অন্যদের আটকের চেষ্টা করা হলেও তাদের গ্রেপ্তার করা যায়নি।

সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রাশেদুল ইসলাম রাশেদ জানান, এ ঘটনায় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, সংশোধিত ২০২০ এর ৯(৩) ধারা ধর্ষণে অভিযুক্ত করে আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১:৪৩:৪১   ৬৪৭ বার পঠিত