নওগাঁয় হঠাৎ করেই বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ৫ থেকে ৬ গুন দাম বেড়েছে। বর্তমানে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
শুক্রবার (১১ জুলাই) সকালে শহরের পৌর খুচরা বাজার ও সিও অফিস কাঁচা বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বিক্রেতারা জানান, বৃষ্টির কারণে জমি থেকে কাঁচামরিচ তুলতে পারছেন না চাষিরা। এ ছাড়া জমিতে পানি জমে মরিচের গাছ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে বাজারে কাঁচা মরিচের সরবরাহ কমে গেছে। এতে দাম কিছুটা বেড়েছে।
জানা গেছে, এক সপ্তাহ আগেও নওগাঁর বিভিন্ন হাটবাজারে কাঁচামরিচ পাইকারি বিক্রি হয়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা আর খুচরা বাজারে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে। বর্তমানে সেই কাঁচামরিচ পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা আর খুচরা বাজারে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা কেজি দরে। এদিকে কাঁচা মরিচের দাম হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ায় অস্বস্থিতে পড়েছেন ক্রেতারা।
শহরের সিও অফিস বাজার করতে আসা মাসুদ রানা বলেন, যে মরিচ এক সপ্তাহ আগে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে কিনেছি, সেই মরিচ আজ ২৪০ টাকা কেজি দরে কিনেতে হচ্ছে। কালকেও ১২০ টাকা কেজি নিয়ে গেছি অথচ আজকে দ্বিগুন দাম। বাজারের যে অবস্থা মনে হচ্ছে কালকে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি হবে।
বাজার করতে আসা আরেক ক্রেতা আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, বর্ষার কারণে গাছ নষ্ট ও সরবরাহ কম হওয়ার অজুহাত দেখিয়ে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু এমন পরিস্থিতি তো এখনো তৈরি হয়নি যে বাজারে মরিচ পাওয়া যাচ্ছে না। নিয়মিত বাজারে অভিযান চালানো হলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হবে না।
নওগাঁ সিও অফিস বাজারের খুচরা বিক্রেতা সাগর আলী বলেন, টানা বৃষ্টির কারণে হঠাৎ করে কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে। গত সপ্তাহে এই বাজারে ৩০ টাকা থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি। আজ ভোরে পৌর পাইকারি বাজার থেকে কিনতে হয়েছে ২০০ টাকা কেজিতে। সেগুলো এখন ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। বৃষ্টি কমলে দাম স্বাভাবিক হবে।
সদর উপজেলার ব্রুজরুক আতিতা গ্রামের মরিচ চাষি রাসেল হোসেন বলেন, এক সপ্তাহ আগেও হাটে গিয়ে মরিচ বিক্রি করতে হয়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা কেজি দরে। জমি থেকে মরিচ শ্রমিকদের মজুরির টাকাও উঠতো না। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে গাছের ক্ষতি হয়েছে। মরিচ ওঠানো যাচ্ছে না।
মরিচের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাইলে নওগাঁ কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কৃষি বিপণন কর্মকর্তা সোহাগ সরকার ঢাকা পোস্টকে বলেন, বর্ষা মৌসুমে মরিচের ফলন কমে আসে। সেইসঙ্গে কয়েকদিনের বৈরী আবহাওয়ার কারণে বাজারে মরিচের আমদানি কিছুটা কমে এসেছে। যার কারণে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। বাজারে আমাদের মনিটরিং টিম কাজ করছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
উল্লেখ্য, নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, জেলায় এ বছর ৯৬৫ হেক্টর জমিতে কাঁচা মরিচের চাষ হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:৪১:০৮ ১৫ বার পঠিত