গাজার নতুন যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার বিষয়ে মঙ্গলবার পর্যন্ত ইসরায়েলি প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় রয়েছে মধ্যস্থতাকারীরা। হামাসের প্রস্তাবটি গ্রহণ ও প্রায় দুই বছরের যুদ্ধের অবসান ঘটাতে নতুন দফা আলোচনার জন্য প্রস্তুতির ইঙ্গিত দেওয়ার একদিন পর মধ্যস্থতাকারীরা এখন ইসরায়েলের দিকে তাকিয়ে।
যুদ্ধ চলাকালে উভয় পক্ষ বারবার পরোক্ষ আলোচনা করেছে, যার ফলে দুটি স্বল্পমেয়াদি যুদ্ধবিরতি ও ইসরায়েলি জিম্মিদের বিনিময়ে ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি পেয়েছে। তবে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির কোনো সমঝোতা হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় মিসর ও কাতার ঘন ঘন ‘শাটল কূটনীতির’ মাধ্যমে অচলাবস্থা ভাঙার চেষ্টা ও মধ্যস্থতা চালিয়ে আসছে। কাতারের সঙ্গে মিলে নতুন প্রস্তাব ইসরায়েলের কাছে পাঠিয়েছে জানিয়ে মিসর বলেছ, ‘এখন বল ইসরায়েলের কোর্টে।’
মিসরের রাষ্ট্রীয়সংযুক্ত গণমাধ্যম আল-কাহেরা জানিয়েছে, সর্বশেষ চুক্তির প্রস্তাবে প্রাথমিক ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি, আংশিক জিম্মি মুক্তি, কিছু ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তি ও ত্রাণ ঢোকার ব্যবস্থার কথা উল্লেখ রয়েছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এখনো প্রকাশ্যে এ পরিকল্পনা নিয়ে মন্তব্য করেননি।
তবে গত সপ্তাহে তিনি বলেছিলেন, ‘আমরা কেবল এমন একটি চুক্তি মেনে নেব যাতে সব জিম্মি একসঙ্গে মুক্তি পাবে ও আমাদের শর্তানুযায়ী যুদ্ধ শেষ হবে।’
হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মাহমুদ মারদাভি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলেছেন, তাদের দল ‘সমঝোতায় পৌঁছনোর সম্ভাবনার দরজা উন্মুক্ত করেছে, তবে প্রশ্ন রয়ে গেছে নেতানিয়াহু আবারও সেটি বন্ধ করবেন কি না, যেমন তিনি অতীতে করেছেন।’
যুদ্ধ বন্ধের জন্য নেতানিয়াহু যখন দেশে ও বিদেশে ক্রমবর্ধমান চাপের সম্মুখীন হচ্ছেন, তখন হামাস এ প্রস্তাব গ্রহণ করল।
ইসরায়েলের তেল আবিব শহরে রবিবার হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে যুদ্ধের অবসান ও এখনো বন্দি অবস্থায় থাকা জিম্মিদের মুক্তির জন্য চুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেছে।
হামাসের ২০২৩ সালের অক্টোবরের হামলার পর নেওয়া ২৫১ জন জিম্মির মধ্যে এখনো ৪৯ জন গাজায় আটক আছেন। যাদের মধ্যে ২৭ জন মারা গেছেন বলে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে।
নতুন প্রস্তাবটি এমন সময়ে এসেছে যখন ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা গাজা সিটি ও নিকটবর্তী শরণার্থী শিবিরগুলো দখলের পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে। এতে আশঙ্কা বেড়েছে, নতুন এ অভিযান বিধ্বস্ত এলাকায় ইতিমধ্যেই ভয়াবহ মানবিক সংকটকে আরো তীব্র করবে।
যুদ্ধ শেষের ঘোর বিরোধী ইসরায়েলের ডানপন্থী জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন ভির পরিকল্পনাটিকে তীব্র সমালোচনা করে সতর্ক করেছেন, ‘নেতানিয়াহু হামাসের কাছে নতি স্বীকার করলে একটি বিপর্যয় ঘটবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭:১১:১০ ১০ বার পঠিত