
জুলাই সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে দিন দিন মতপার্থক্য বাড়ছে রাজনৈতিক দলগুলোর। অনেকেই সংশয় প্রকাশ করছেন ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজন নিয়েও। এর মধ্যে নতুন করে আলোচনায় আরপিও সংশোধনী।
গত ২৩ অক্টোবর ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-আরপিও সংশোধন, ২০২৫-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন করে উপদেষ্টা পরিষদ। এতে বেশ কিছু বিষয়ে পরিবর্তন আনা হয়েছে। ইভিএম ব্যবহার বাতিল, ‘না ভোট’ পুনর্বহাল, পলাতক আসামিদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করার মতো সিদ্ধান্তের সঙ্গে নেয়া হয়েছে নিজ প্রতীকে নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা।
নতুন নিয়মে জোটভুক্ত হলেও জোটের প্রধান দলের প্রতীকে নির্বাচন করতে পারবেন না শরিক দলের প্রার্থীরা। এ নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়েছে বিএনপি। একতরফাবে এমন সিদ্ধান্ত নেয়ার অভিযোগ দলটির। এ সংক্রান্ত আইন বাতিলে সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন এবং আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠিও দিয়েছে বিএনপি। বিশেষ দলকে সুবিধা দিতে এমন সংশোধনী আনা হয়েছে বলে অভিযোগ দলটির নীতিনির্ধারকদের।
তবে ইসির সংশোধনীর পক্ষে অবস্থান নিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বিএনপির চাপে সংশোধনী বাতিল করলে ইসি প্রশ্নবিদ্ধ হবে বলে মনে করেন দলটির নেতারা। সিদ্ধান্ত থেকে সরলে সরকার এবং নির্বাচন কমিশন বিতর্কিত হবে বলে মনে করে জামায়াতও।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘নির্বাচনে জোট করলেও যারা মেজর দল থাকে তারই মার্কায় ভোট করা যায়। যেমন বিগত সময়ে জামায়াত ধানের শীষে নির্বাচন করেছে। এটা বন্ধ করার কোনো অর্থ হয় না।’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা কন্ট্রিবিউট করতে পারে বা জাতীয়ভাবে পরিচিত, তাদের পার্লামেন্টে নিয়ে আসা পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে। কিন্তু সেটা এই প্রতীক ব্যবহার নিয়ে স্থগিত হয়ে যাচ্ছে। কোনো একটি বিশেষ দলকে ফেভার করার জন্য চেষ্টা চলছে।’
এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেন, ‘জোট করলেও যে দলের লোক সে দলের প্রতীকে নির্বাচন করবে। এটা একটা ফেয়ার সিস্টেম। যদি অন্য কিছু হয় তাহলে প্রতারণামূলক একটা বার্তা যায়। বিএনপি চাপেই যদি এটা বাতিল করে আবার সংশোধন করা হয়, তাহলে বারবারই আমরা নির্বাচন কমিশনসহ অন্যান্য যে সংস্থাগুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করে আসছি, আলটিমেট সেটাই হবে।’
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ বলেন, ‘জোট করলেও নিজ প্রতীকে ভোট করার বিষয় থেকে যদি নির্বাচন কমিশন সরে আসে, তাহলে বুঝতে হবে কমিশন একটি বিশেষ দলের পক্ষ হয়ে কাজ করছে। অতীতে নির্বাচন নিয়ে জনগণের যে অনাস্থা ছিল, আবারো সেই অনস্থার জন্ম দেবে। এতে সরকার বিতর্কিত হবে।’
বাংলাদেশ সময়: ১৩:০০:১২ ১৮ বার পঠিত