![]()
মেগাপ্রকল্প নয়, মানুষের কল্যাণে বিনিয়োগে বিএনপি গুরুত্ব দেবে জানিয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘আমরা কোনো মেগাপ্রজেক্টে যাব না। মানুষের আত্মকর্মসংস্থান, কর্মসংস্থান, বিদেশে চাকরির সুযোগ, এসবই আমাদের অগ্রাধিকার।’
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির ব্যবস্থাপনায় মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এসএসসি ও এইচএসসি কৃতী শিক্ষার্থী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আমীর খসরু বলেন, ‘আগামী দিনের বাংলাদেশ গঠনে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেবে বিএনপি।
এ জন্য দলের প্রণীত বাজেটে সর্বাধিক বিনিয়োগ রাখা হবে এই দুই খাতে। আমাদের বাজেটের সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ হবে শিক্ষার জন্য। সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ হবে স্বাস্থ্যব্যবস্থার জন্য। পরিবেশ এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে আমাদের আরো অনেক কাজ আছে।
’
শিক্ষাব্যবস্থার গুরুত্ব উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, ‘দেশে এখন শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার গুরুত্ব রাজনৈতিক পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছেছে। তাদের মেধা, দক্ষতা ও শিক্ষার ওপরই নির্ভর করছে আগামীর বাংলাদেশ কেমন হবে।’
তিনি বলেন, ‘লেখাপড়া করেও অনেকে চাকরি পাচ্ছে না, এ জন্য ১৮ মাসে ১ কোটি চাকরির ব্যবস্থা করাই প্রথম দায়িত্ব। লেখাপড়া ভালো করলে একটা স্বীকৃতির ব্যাপার আছে।
স্বীকৃতিটা শুধু সামাজিক পর্যায়ে না, এখন রাজনৈতিক পর্যায়েও পৌঁছেছে। স্বৈরাচার বিদায়ের পর নতুন আশা, নতুন স্বপ্ন এবং নতুন আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে, যা এক দুই বছর আগেও ছিল না। মেধা আগামীর বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।’
বিএনপির শিক্ষা ভাবনা তুলে ধরে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আগামী দিনের বাংলাদেশ কেমন হবে, শিক্ষাটা কেমন হবে, শিক্ষকের প্রশিক্ষণ কেমন হবে, এসব বিষয়ে আমরা পরিকল্পনা করছি। লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলা, মিউজিক, নাটক থিয়েটারের প্রয়োজনীয়তাও রয়েছে।
নতুন বিশ্বে কিভাবে আমরা সম্পৃক্ত হবো, সেসব বিষয়ও আগামী দিনের শিক্ষাব্যবস্থায় প্রবর্তিত হবে।’
প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন সবার হাতে একটি করে স্মার্টফোন আছে। মোবাইল ফোন থেকেই বিশ্বের যেকোনো লাইব্রেরিতে প্রবেশ করা যায়, বই অর্ডার করা যায়। মেধার যে ব্যবহার শুরু হয়েছে, সেটাকে যত বেশি কাজে লাগাতে পারবে, তত বেশি এগিয়ে যাবে। আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ হবে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ।’
স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে আরো উন্নত করার পরিকল্পনা জানিয়ে আমীর খসরু বলেন, ‘অনেক মানুষ আছে যারা ঠিকমতো দুই বেলা খেতে পারে না। শরীর ভালো না থাকলে মেধা বিকাশও হবে না। এ জন্য আমরা সবার জন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা বিনা পয়সায় নিশ্চিত করব, ইনশাল্লাহ। পাশাপাশি প্রতিরোধমূলক চিকিৎসার ব্যবস্থাও করা হবে।’
কর্মসংস্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে অনেক ডাক্তার আছে, কিন্তু চাকরি নেই। অনেকেই ২০-৪০ হাজার টাকা বেতনে কাজ করছে। এ ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আমাদের পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে আগামী দিনে বিনা পয়সার চিকিৎসা ব্যবস্থার পাশাপাশি সেখানে অনেকের চাকরির সুযোগ তৈরি হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘বিএনপির সবচেয়ে বড় যে ঘোষণা, ১৮ মাসে এক কোটি লোকের কর্মসংস্থান। সারা বাংলাদেশে আমরা স্কিল সেন্টার করব। ছেলেমেয়েরা গ্রাম থেকে কলসেন্টার, ডেটা সেন্টারে কাজ করতে পারবে। অনেকে ঘরে বসে আচার বা পণ্য তৈরি করে অনলাইনে বিক্রি করছে, এটা আরো বড় পরিসরে ছড়িয়ে দিতে গ্রামে ইন্টারনেট পৌঁছে দেব।’
ই-কমার্সকে গ্রামে-গঞ্জে ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা উল্লেখ করে খসরু বলেন, ‘নকশিকাঁথা তৈরি করেও অনলাইনে বিক্রি করা সম্ভব হবে, শুধু বাংলাদেশে নয়, অ্যামাজন আলিবাবার মাধ্যমে বিশ্বের যেকোনো জায়গায়। সেই ব্যবস্থাও বিএনপি করবে ইনশাআল্লাহ।’
ডিজিটাল যুগের দক্ষতা অর্জনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এআইয়ের সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হচ্ছে। এতে যাতে আমাদের ছেলেমেয়েরা যুক্ত হতে পারে, তাদের জীবনের মান উন্নয়ন করতে পারে, এটা নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য।’
আমীর খসরু তরুণদের প্রতি আহ্বান জানান, এটা বিএনপি একা করতে পারবে না, সবার সহযোগিতা লাগবে। তরুণ মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা এগিয়ে আসুন।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব নাজিমুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম আহ্বায়ক শওকত আজম খাজা ও আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেলের পরিচালনায় এতে মুখ্য আলোচক ছিলেন বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ড. মওদুদ হোসাইন আলমগীর পাভেল। আলোচক ছিলেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৪৫:০৮ ৮ বার পঠিত