মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গা পরিস্থিতি ভিন্নভাবে সামলাতে পারতো বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির বেসামরিক অংশের নেত্রী অং সান সুচি। ভিয়েতনামে এক অর্থনৈতিক সম্মেলনে যোগ দিয়ে একথা বলেন তিনি।
নোবেল পুরষ্কার বিজয়ী সুচি মিয়ানমারের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট নন। কিন্তু পুরো বিশ্বে তার ভাবমূর্তি অনেকটা এমনই। রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের বিষয়ে বহুদিন তিনি মুখ খুলেননি। এ বিষয়ে নীরব থাকার জন্য তার ওপর ব্যাপক আন্তর্জাতিক চাপ এসেছে। হয়েছেন নিন্দিত ও সমালোচিত।
বৃহস্পতিবার ভিয়েতনামে আয়োজিত এক আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সম্মেলনে যোগ দিয়ে এক ভাষণে তিনি বলেন, মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গা পরিস্থিতি আরো ভালোভাবে সামাল দিতে পারতো।
তিনি বলেন, অবশ্যই ঘটনার পর এমন অনেক উপায় দেখা গেছে, যেগুলোর মাধ্যমে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি আরো ভালোভাবে সামলানো যেতো।
রয়টার্সের সাংবাদিকদের কারাদণ্ডের প্রতি সমর্থন
রোহিঙ্গা ইস্যু ছাড়া সম্প্রতি রয়টার্সের দুই সাংবাদিকের বিষয়ে কারাদণ্ড পাওয়ার বিষয়েও কথা বলেন সুচি। এই ইস্যুতেও নীরব থাকায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক আকারে সমালোচিত হয়েছেন তিনি।
তিনি জানান, ওয়া লোন এবং কিয়াও সো ও আইন ভঙ্গ করেছেন। আর তাদের কারাদণ্ডের সঙ্গে মত প্রকাশের স্বাধীনতার কোন সম্পর্ক নেই।
প্রসঙ্গত, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নিপীড়নের তথ্য সংগ্রহের সময় গ্রেপ্তার রয়টার্সের ওই দুই সাংবাদিককে সম্প্রতি ঔপনিবেশিক আমলের রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে সাত বছরের কারাদণ্ড দেয় ইয়াংগনের একটি আদালত।
সুচি বলেন, রয়টার্সের সাংবাদিকদের কারাদণ্ডের সঙ্গে মত প্রকাশের স্বাধীনতার কোন সম্পর্ক নেই
এই সপ্তাহে জাতিসংঘের একটি অধিকার বিষয়ক সংস্থা অভিযোগ করেছে যে, মিয়ানমার সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে।
সুচি তার বক্তব্যে আইনের শাসনের বিষয় তুলে ধরে বলেন, অনেক সমালোচকই সাংবাদিকদের কারাদণ্ডে দেওয়া রায়টি পড়েননি। তিনি বলেন, ওই দুই সাংবাদিকের সকল ধরণের অধিকার ছিল রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার ও যুক্তি প্রদর্শন করার যে কেন ওই রায় ভুল।
তবে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে যে, সুচি পুরো বিষয়টা ভুল বুঝছেন। সংগঠনটির ডেপুটি এশিয়া পরিচালক ফিল রবার্টসন বলেন, তিনি এটা বুঝতে ব্যর্থ যে, সত্যিকার আইনের শাসন আদালতে উপস্থাপিত প্রমাণের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে, পরিষ্কারভাবে সংজ্ঞায়িত ও সুসামঞ্জস্য আইনের ওপর ভিত্তি করে কর্মকাণ্ডের বিবেচনা করে এবং সরকার বা নিরাপত্তাবাহিনীর প্রভাবমুক্ত বিচার বিভাগ চায়।
রবার্টসন বলেন, সব মিলিয়ে রয়টার্সের সাংবাদিকদের বিচার পরীক্ষায় পাস করেনি। -বিবিসি
বাংলাদেশ সময়: ২২:৪৪:০৮ ২৩৭ বার পঠিত