১৯৪৭ সালের ২৯ নভেম্বরে ফিলিস্তিন বিষয়ক জাতিসংঘ বিশেষ কমিটির রিপোর্ট বিবেচনার ভিত্তিতে জেরুজালেমকে আন্তর্জাতিক শহরের মর্যাদা দিয়ে আরব ও ইহুদী অধুষিত দুটি রাষ্ট্রে ফিলিস্তিনকে বিভক্ত করার পরিকল্পনা সাধারণ পরিষদে অনুমোদিত হয়। এ অনুমোদনের পূর্ব পর্যন্ত ফিলিস্তিন ছিলো একটি পৃথক রাষ্ট্র। লীগ অব নেশনস এর ম্যান্ডেট বলে যুক্তরাজ্য এ ভূখ-টি শাসন করতো। সে সময় রাষ্ট্রটির জনসংখ্যা ছিলো প্রায় ১০ লাখ-যার তিনভাগের দু’ভাগ আরব এবং একভাগ ছিলো ইহুদী। ১৯৭৭ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ এ দিনটিকে প্রতিবছর ফিলিস্তিন জনগণের সঙ্গে সংহতি আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে উদযাপনের আহবান জানায়। ১৯৯৯ সালের ১ ডিসেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ সদস্য রাষ্ট্রসমূহ কর্তৃক দিবস উপলক্ষে গৃহীত কার্যক্রম অবহিত হয় এবং এ বিষয়টিকে সম্ভব অনুযায়ী ব্যাপক প্রচারের জন্য সবাইকে অনুরোধ জানায়।
ফিলিস্তিন অধিবাসীদের ভবিষ্যৎ প্রশ্নে উদ্ভূত মধ্যপ্রাচ্য সমস্যাটি ১৯৪৭ এ জাতিসংঘে উত্থাপিত হওয়ার পর থেকে এ বিষয়টিতে জটিলতা নিরসনে ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘের রয়েছে বিরাট ভূমিকা ও অসংখ্য কার্যক্রম। ১৯৪৭ এ ফিলিস্তিনকে বিভক্ত করার পরিকল্পনা পিলিস্তিনের আরব ও মধ্যপ্রাচ্যের আরব রাষ্ট্র সমূহ প্রত্যাখ্যান করে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ১৯৪৮ সালের ৪ মে ফিলিস্তিন পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ পুনর্বিন্যাসের উদ্যোগ নিয়ে মধ্যাস্থতাকারী নিয়োগ করে। ওই দিনই ব্রিটেন মধ্যস্থতাকারীর উপর অর্পিত ম্যান্ডেট পরিত্যাগ করে এবং ইসরাইল রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা ঘোষিত হয়। ফিলিস্তিনীরা অস্ত্র ধরে নতুন রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে। নিরাপত্তা পরিষদের আহবানে এবং জাতিসংঘ মধ্যস্থতাকারীর তত্ত্বাবধানে স্বাক্ষরিত একটি যুদ্ধ বিরতি চুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধ থামিয়ে দেয়া হয়। সেই থেকে শুরু হয় জাতিসংঘের ভূমিকা। ৫ দশক অতিক্রান্ত হলেও আজ আদি ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধান হয়নি। হয়নি ফিলিস্তিনীদের জন্য একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। ফিলিস্তিন সমস্যায় মধ্যপ্রাচ্যের মূল সমস্যা এবং তাদের অবিচ্ছেদ্য জাতীয় অধিকার সমূহ অর্জন না হওয়া পর্যন্ত এ এলাকার সার্বিক ন্যায়সংগত ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভবপর নয়। এ ব্যাপারে বিশ্ব কূটনীতিকদের প্রায় সবাই একমত।
(হাজী মোহাম্মদ মহসীনের মৃত্যু)
দানবীর হাজী মোহাম্মদ মহসীন ১৮১২ সালের এ দিনে হুগলীতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। দান, দয়া এসবের সঙ্গে হাজী মোহাম্মদ মহসীনের নামটি প্রবাদের মতো ইতিহাস হয়ে রয়েছে। সেইসঙ্গে ধর্ম ও বিদ্যানুরাগীও ছিলেন তিনি। ১৭৩২ সালে হুগলীর এক সন্ত্রান্ত বনিক পরিবারে তার জন্ম। আরবি, ফার্সি শিখেছেন ঘরে প-িতের কাছে। সঙ্গীতবিদদের কাছে শিখেছেন গান এবং বিভিন্ন বাজনার তালিম। মুর্শিদাবাদে নিয়েছেন মক্তবের শিক্ষা। মধ্য বয়সে বের হন দেশ ভ্রমণে । ২৭ বছরকাল আরব মিশর, পারস্য ভ্রমণ করে ১৭৯৪ সালে ফেরেন বঙ্গদেশে। এরপর মুর্শিদাবাদ, হুগলী, ঢাকায় ঘুরে বেড়িয়েছেন। চিরকুমার ছিলেন তিনি। বিশাল সম্পদ-সম্পত্তি নিজের সুখের জন্যে ব্যয় না করে দীন-দুঃখীদের দুঃখমোচনে ব্যয় করেছেন। অকাতরে অন্ন, বস্ত্র, চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন। হুগলী, ঢাকা, চট্টগ্রাম, যশোর বিভিন্নস্থানে বহু মাদ্রাসা করেছেন। ১৮১৬ সালে একটি ফান্ড গঠন করে সেখানে তার সব সম্পত্তি ধর্ম ও জনহিতকর কাজের জন্যে দান করেন। এ দানের অর্থে বহু কলেজ, মাদ্রাসা, ছাত্রাবাস প্রতিষ্ঠা হয়েছে। ফান্ডের বৃত্তির টাকায় হাজার হাজার দরিদ্র মুসলমানের শিক্ষালাভ হয়েছে। আরবি, ফার্সি, উর্দু, ইংরেজি ভাষায় ব্যাপক দখল ছিলো তার। অগাধ পা-িত্য ছিলো ইতিহাস ও বীজগনিতে। অশ্বারোহন ও অস্ত্রচালনায়ও ছিলেন পারদর্শী। নিজ হাতে রান্না করে যেতেন তিনি। মানুষকেও খাওয়াতেন। বহু নবাব-নাজেম রাজপুরুষ তার কাছে খেতেন। কিন্তু তিনি কখনো রাজদরবারে যেতেন না। তিনি ধনী লোকদের পছন্দ করতেন না বলে জনশ্রুতি রয়েছে।
(মোহাম্মদ তোয়াহার মৃত্যু)
সমাজতন্ত্রবাদী সংগ্রামী রাজনীতিক মোহাম্মদ তোয়াহা ১৯৮৭ সালের এ দিনে মৃত্যুবরণ করেন। ৫২’র ভাষা আন্দোলন এবং সা¤্রাজ্যবাদ বিরোধী আন্দোলনে আপোষহীন ভূমিকা ছিলো তার। তোয়াহার জন্ম ১৯২২ সালের ২ জানুয়ারি লক্ষ্মীপুরের কুশাখালী গ্রামে। জোতদার পরিবারে জন্ম নিয়েও তিনি আন্দোলন করেছেন শ্রমিক-কৃষক-মেহনতি মানুষের জন্য । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে তিনি ফজলুল হক হলের ভিপি ছিলেন। সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা কর্মপরিষদের অন্যতম সদস্য হিসেবে ভাষা আন্দোলনে কারা নির্যাতন ভোগ করেন।
যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং পরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গেও সম্পৃক্ত হন । ৫৪ তে যুক্তফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে নোয়াখালী থেকে পূর্ববঙ্গ পরিষদের সদস্য নির্বাচিত এবং যুক্তফ্রন্ট সরকার ভেঙ্গে দেয়ার পর গ্রেফতার হন। ৫৭ তে কাগমারী সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সোহরাওয়াদী ও ভাসানীর মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে তিনি ভাসানীর পক্ষে অবস্থান নেন। পরে ভাসানীর নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)’র রাজনীতিতে সক্রিয় হন। ৫৮ তে সামরিক শাসন জারির পর হুলিয়া নিয়ে প্রায় ৭ বছর ফেরারি জীবনযাপন করেন। মওলানা ভাসানীর সঙ্গে বিরোধ ঘটায় ৭০ সালে ন্যাপের রাজনীতি ত্যাগ করে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন সাম্যবাদী দল। ১৯৭১-এ মুক্তিযুদ্ধকালে লক্ষ্মীপুর-রামগতি অঞ্চলে পাক বাহিনী এবং মুক্তিবাহিনী উভয়ের বিরুদ্ধে একসঙ্গে যুদ্ধ পরিচালনা করেন। দেশ স্বাধীনের পর আত্মগোপন অবস্থায় সশস্ত্র সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। শেখ মজিবুর রহমানের মৃত্যুর পর ১৯৭৬ সালে আত্মপ্রকাশ হয়ে সাম্যবাদী দল পুনরুজ্জীবিত করেন। সমর্থন দেন জিয়াউর রহমানকে । ৭৯ তে নোয়াখালী-১৩ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন । আশির দশকে এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে ত্যাগী ভূমিকা ছিলো তার। ১৫ দলীয় জোট গঠনে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন।
১৫২০ সালের এই দিনে স্প্যানিশ নাবিক মাজলান নতুন একটি প্রণালীর সন্ধান পান। পরবর্তীতে তার নামেই ঐ প্রণালীর নামকরণ করা হয়। মি: মাজলান সে সময় সাগরে বিভিন্ন আবিস্কার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। ইতিহাসের এই দিনে তিনি ঐ প্রণালী দিয়ে আটলান্টিক মহাসাগর থেকে প্রশান্ত মহাসাগরে প্রবেশ করেন।
১৬৪৩ সালের এদিনে ইটালির বিখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ ক্লাওদিও মোন্তেভেরদে ৬৭ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। ১৫৬৭ সালে তার জন্ম হয়। শিশুকাল থেকেই সঙ্গীতের প্রতি তার ব্যাপক ঝোক ছিল এবং ব্যাপক ভাবে সঙ্গীত চর্চা করতেন। এ কারণে সঙ্গীতজ্ঞ হিসেবে তরুণ বয়সেই দেশ জুড়ে তার নাম ছড়িয়ে পড়ে।
১৯২৪ সালের এদিনে ইটালির মিউজিক কম্পোজার জিয়াকোমো পুচিনো মৃত্যুবরণ করেন। ১৮৫৮ শিল্পী পরিবারে তার জন্ম হয়। তিনিও অল্প বয়সেই ব্যাপক সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হন।
১৯১৩ সালের এই দিনে যুগোস্লাভিয়ায় মার্শাল টিটোর নেতৃত্বে এন্টি ফ্যাসিজম ফ্রন্ট গঠিত হয়। এই ফ্রন্টের গেরিলারা জার্মান বাহিনীর ব্যাপক ক্ষতিসাধন করতে সক্ষম হয়। ১৯৪৪ সালে তারা সোভিয়েত ইউনিয়নের রেড আর্মির সহায়তায় জার্মান বাহিনীকে যুগোস্লাভিয়া থেকে বিতাড়িত করে। এর পর মার্শাল টিটো যুগোস্লাভিয়ার ক্ষমতায় আরোহন করেন।
১৯৪৭ সালের এই দিনে পাশ্চাত্য ও ইহুদিবাদীদের প্রভাবাধীন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ, ফিলিস্তিন ভূখন্ডকে বিভক্ত করার পক্ষে রায় দেয় এবং বায়তুল মোকাদ্দাসকে জাতিসংঘের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকা বলে ঘোষণা করে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ঐ ইশতেহারে ফিলিস্তিন ভূখন্ডে ইহুদিবাদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অনুমতি দেয়া হয়। সে সময় ফিলিস্তিন ছিল বৃটিশদের উপনিবেশ। বৃটিশরা নানা পন্থায় ইহুদিবাদীদের শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা দিয়েছে। ১৯৪৮ সালের ১৫ই মে বৃটিশরা ফিলিস্তিন থেকে সরে যাবার পরপরই বৃটিশদের সেনা ঘাটিগুলোতে ইহুদিবাদীরা অবস্থান নেয় এবং ইহুদিবাদী ইসরাইল প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়। এর ফলে আরব ও ইহুদিবাদী ইসরাইলের মধ্যে প্রথম যুদ্ধের সূচনা হয়।
হিজরী ২২০ সালের জিলক্বাদ মাসের শেষ দিন নবী বংশের নবম ইমাম হযরত মোহাম্মদ তাকী ওরফে জাওয়াদ (আ:) শাহাদাৎবরণ করেন। ইমাম তাকী যখন কিশোর তখন তার মহান পিতা ইমাম রেজা (আ:) তৎকালীন আব্বাসীয় রাজতান্ত্রিক সরকারের হাতে শহীদ হন। এরপর মুসলিম বিশ্বের হেদায়াতের পতাকা, ইমাম তাকীর হাতে ন্যস্ত হয়। ইমাম তাকী ছিলেন সে যুগের শ্রেষ্ঠ আলেম ও পন্ডিত। অলৌকিক ও আধ্যাত্বিক জ্ঞানেও শীর্ষস্থানের অধিকারী ছিলেন তিনি। ইমাম তাকী (আ:)-র বুদ্ধিবৃত্তিক আন্দোলন ও তার ব্যাপক জনপ্রিয়তায় ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে তৎকালীন খলিফা মোতাসেম তাঁকে মদীনা থেকে বাগদাদে আসতে বাধ্য করেন। কিন্তু সেখানেও ইমাম, ইসলামের মূল আদর্শ প্রচার অব্যাহত রাখেন। অবশেষে ইমাম তাকী (আ:)-কে বিষ প্রয়োগে শহীদ করা হয়। শাহাদাতের সময় তাঁর বয়স ছিল মাত্র ২৫ বছর।
১৯৯৪ সালের ২৯ শে নভেম্বর নেপালে কমিউনিস্ট পার্টির নেতা মহমোহন অধিকারী প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হন।
২০০৪ সালের এদিনে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসন বিল-২০০৪ পাস হয়।
ওয়ারশতে গণঅভ্যুত্থান (১৮৩০)
লিথুয়ানিয়া প্রজাতন্ত্র ঘোষণা (১৯১৮)
আলবেনিয়া নাৎসিদের কবল থেকে মুক্ত (১৯৪৪)
যুগোস্লাভিয়াকে গণপ্রজাতন্ত্রী ফেডারেল রাষ্ট্র ঘোষণা (১৯৪৫)
বাংলা সাহিত্যে দাদা মশাই খ্যাত কথাশিল্পী কেদারনাথ বন্দোপাধ্যায়ের মৃত্যু (১৯৪৯)
মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান সামরিক আইন প্রশাসক নিযুক্ত (১৯৭৬)
ঘূর্ণিঝড়ে বাংলাদেশে সহ¯্রাধিক লোকের মৃত্যু (১৯৮৮)
নবম লোকসভা নির্বাচনে ভারতের ক্ষমতাসীন কংগ্রেসের পরাজয় (১৯৮৯)
নেপালে প্রথমবারের কমিউনিস্টদের ক্ষমতারোহন । মনমোহন অধিকারী প্রধানমন্ত্রী (১৯৯৪)
চীন-ভারতের মধ্যে সীমান্ত চুক্তি স্বাক্ষর (১৯৯৬)
বাংলাদেশ সময়: ১১:১৩:২৫ ৩০৯ বার পঠিত