
আসন্ন লোকসভা ভোটে তৃণমূল প্রার্থীদেরই সমর্থন করবে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা৷ সঙ্গে চলবে তাদের হয়ে প্রচার৷ মঙ্গলবার পাহাড়ে তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর জানিয়ে দিলেন বিনয় তামাং৷
গত শনিবার ব্রিগেডের ইউনাইটেড ইন্ডিয়া ব়্যালিতে অংশ নেন মোর্চা সভাপতি বিনয় তামাং৷ পরিষ্কার হয়ে যায় এবার আর ভোটে বিজেপির সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধতে রাজি নয় পাহাড়ের দলটি৷ তবে ভিন্ন উঠে আসে একদা মোর্চা সুপ্রিমো বিনল গুরুং-এর কথায়৷ অন্তরালে থেকেই তার বার্তা ছিল গেরুয়া বাহিনীর সঙ্গেই থাকবে পাহাড়ের মানুষ৷ এদিন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে গুরুংয়ের হুমকিকে কার্যত উড়িয়ে বিন তামাং জানিয়ে দেন লোকসভায় বিজেপি বিরোধী জোটকেই সমর্থন করবে তার দল৷
মঙ্গলবার দার্জিলিং-এ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন মোর্চা সভাপতি বিনয় তামাং৷ সঙ্গে ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক অনিত থাপা৷ বৈঠক সেরে বেড়িয়েই এদিন বিনয় তামাং বলেন, ‘‘বিমল গুরুং, রোশন গিরিদের সাহস থাকলে পাহাড়ে আসুক৷ তরাই-ডুয়ার্সে লোকসভা ভোটের প্রচার করে দেখাক। আমি দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রে মোর্চার হয়ে প্রচার করব। লোকসভা ভোটের আগে দেশে তৃতীয় ফ্রন্ট গড়ার তোড়জোড় চলছে। সেখানে তৃণমূল সহ বিভিন্ন দল থাকবে। মোর্চাও সেখানে থাকবে।’’
বিজেপি বিরোধী জোটের অন্যতম কারিগর তৃণমূল সুপ্রিমো৷ ফলে জোট ক্ষমতায় এলে মমতার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা থাকছেই৷ তৃণমূলের প্রথম সারির নেতারাও দলনেত্রীকেই প্রধানমন্ত্রী দেখতে মরিয়া৷ সম্প্রতি তাদের বাসনা উস্কে দিয়েছেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী তথা জেডিএস নেতা এইচডি কুমারস্বামী৷ তাঁর দেশ চালানোর সব গুণ আছে বলে আগেই জানিয়েছেন বিজেপি ত্যাগী যশবন্ত সিং, রাজ্যের প্রাক্তন দুই রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গান্ধী ও এমকে নারায়ণান৷ সেই সুরেই সুর মেলান মোর্চা সভাপতি৷ বিনয় তামাং বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আদর্শ। তিনি মুখ্যমন্ত্রী হলে ভালোই হয়৷’’ একই মত পাহাড়ের আরেক দল জিএনএলএফের৷
পৃথক রাজ্যের দাবিতে পাহাড়বাসীর আন্দোলন ২০০৭ সাল থেকেই নিজের হাতে নেন মোর্চা সুপ্রিমো বিমল গুরুং৷ বিজেপি ছোট রাজ্যের সমর্থক৷ তাই দাবি পূরণের স্বপ্নে ২০০৯ সালের লোকসভায় বিজেপির সঙ্গে হাত মেলায় মোর্চা৷ দার্জিলিং কেন্দ্র থেকে জয় পান বিজেপির যশবন্ত সিং৷ ২০১৪ তেও এই আসন থেকে জেতেন গেরিয়া প্রার্থী এসএস আলুওয়ালিয়া৷ কিন্তু দাবিপূরণ হয়নি৷ উলটে তীব্র আন্দোলনের জেরে স্তব্ধ হয়ে যায় পাহাড়ের জনজীবন৷ এরপর পাহাড়ী দলটির অভ্যন্তরীন রাজনীতিতে বদল আসে৷ গুরুংকে সরিয়ে দলের প্রধান হন বিনয় তামাং৷
দার্জিলিং সহ জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারে প্রভাব রয়েছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার৷ দার্জিলিং আসনে তৃণমূলের পতাকা নিয়েই দাঁড়াতে পারেন মোর্চা ঘনিষ্ট কোনও প্রার্থী৷ বাকি দুটি আসন রয়েছে রাজ্যের শাসক দলের দখলেই৷ এই পরিস্থিতিতে তিন কেন্দ্রে তৃণমূলের সমর্থনে প্রচার চালালে আখেড়ে লাভ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরই৷ একদিকে সুবিধা হবে মোদী বিরোধী লড়াইতে, অন্যদিকে বিজেপির জয়ী আসনটিও ছিনিয়ে নেওয়া যাবে৷
বাংলাদেশ সময়: ১০:০৭:২০ ১৯৪ বার পঠিত