নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় প্রতারনার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় নেী-মন্ত্রনালয়ের এক কর্মকর্তাসহ দুইজনকে কারাগারে প্রেরন করেছে নারায়ণগঞ্জ আদালত। শরীফ সায়েদ হোসেন নামের এক গার্মেন্ট মালিকের দায়েরকৃত প্রতারনা মামলায় গ্রেফতারী পরোয়না জারি করা হলে বুধবার সকালে নারায়ণগঞ্জ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটের কাছে আত্মসমর্পনের মাধ্যমে জামিনের আবেন করলে আদালত আসামিদের জামিন বাতিল করে জেলা কারাগারে প্রেরনের নির্দেশ প্রদান করেন। প্রতারক আসামিরা হলো ঢাকা খিলগাঁও এলাকার মৃত ইসাহাক আলীর শেখের ছেলে আকরাম হোসেন (৫০) এবং তার স্ত্রী রোজিনা আলতাফ (৪০)। রোজিনা আক্তার বর্তমানে বাংলাদেশ নৌ-পরিবহন মন্ত্রনালয়ের ইন্জিনিয়ারিং সেকশনের নকশাকর পদে কর্মরত আছেন।
আদালতে দায়েরকৃত মামলার বাদী শরীফ সায়াদ হোসেন জানান, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার শাসনগাঁও বিসিক শিল্পনগরী এলাকায় স্থাপিত বেলী কটন লিঃ নামে একটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান ২০১৬ সালেল ২৬ জুলাই ১ কোটি ৬ লক্ষাধিক টাকায় চুক্তি মোতাবেক ক্রয় করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন। ক্রয় করার সিদ্ধান্ত মোতাবেক উক্ত এলাকায় অবস্থিত অন্যান্য শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মালিকদের স্বাক্ষীর মাধ্যমে প্রতারক আকরাম হোসেন এবং রোজিনা আলতাফ নামের দুই ব্যাক্তির কাছে চুক্তি মোতাবেক অর্থ পরিশোধের মাধ্যমে শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মালিকানা বুঝে নেন। কিন্তু চুক্তি পত্রে শর্ত অনুয়ারী প্রতারক আকরাম হোসেন এবং রোজিনা আলতাফ শর্ত পালনে খাম খেয়ালী করে যাচ্ছিলেন। প্রতারকদের এমন খাম খেয়ালীপনায় মানষিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন তিনি। প্রতিষ্ঠানের মালিক পরিবর্তন হলেও শর্ত সাপেক্ষে শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সরকারী সনদপত্র প্রদান না করে উল্টো নানা ভাবে হয়রানীসহ বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিয়ে আসছিল উল্লেখিত প্রতারকচক্রটি। এমনকি প্রতারকদের খামখেলীপনার ফলে নিজ প্রতিষ্ঠানের সরকারী অনুমোদনের সনদপত্র প্রতারকরা নিজ হেফাজতে রাখার ফলে অন্য শিল্পপ্রতিষ্ঠানের লাইসেন্সের মাধ্যমে মালামাল রপ্তানি করতে হতো। ফলে অদ্যবদি তার প্রতিষ্ঠানের ৩ কোটি টাকারও অধিক অর্থ খোয়াতে হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন। প্রতারকদের কাছ থেকে ক্রয়কৃত প্রতিষ্ঠানের সরকারী সনদপত্র প্রতিষ্ঠানের ক্রয় করার সময় উপস্থিত স্বাক্ষীদের মাধ্যমে বিষয়টি একাধিকবার সুরাহা করার চেষ্টা করলেও উল্লেখিত প্রতারকরা বিষয়টি গুরুত্ব না দিয়ে উল্টো নানা ভাবে হুমকি প্রদান করে আসছিল বলেও আদালতে দায়েরকৃত মামলার বর্ননা থেকে জানা যায়। এমনকি প্রতারক আকরাম হোসেনের ন্ত্রী রোজিনা আলতাফ নৌ-পরিবহন মন্ত্রনালয়ে কর্মরত থাকায় বিভিন্নভাবে হয়রানী করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে বলেও অভিযোগে প্রকাশ। পরবর্তীতে তিনি শিল্পপ্রতিষ্ঠান ক্রয় করার দালিলিক প্রমানাদিসহ নারাণগঞ্জ বিজ্ঞ অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট-খ অঞ্চল বরাবর আকরাম হোসেন এবং রোজিনা আলতাফের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়ের করার পর আদালত আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করেন। পরোয়ানা জারির পর বুধবার সকাল ১০ টায় নারায়ণগঞ্জ বিজ্ঞ অতিরিক্ত চীফ জুডিয়িশাল ম্যাজিষ্ট্রেটে আতœসমর্পনের মাধ্যমে জামিনের আবেদন করেন। আদালত প্রতারক আকরাম হোসেন এবং রোজিনা আলতাফের জামিন না মন্জুর করে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে প্রেরন করার সিদ্ধান্ত প্রদান করেন।
এদিকে আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক নারায়ণগঞ্জ আদালত পাড়ায় দায়িত্বরত কর্মকর্তারা প্রতারকদের জেলা কারাগারে নেয়ার সময় অশ্লীল ভাষায় মামলার বাদীকে গালমন্দসহ মামলা তুলে নিতে বলে অন্যথায় মামলার বাদীকে বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা মামলা এমনকি প্রান নাশের হুমকি প্রদান করেন বলেও বেলী কটন লিমিটেডের বর্তমান স্বত্বাধিকার অভিযোগ করেন। প্রতারক আসামিদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ধারায় সুষ্ঠু বিচারের দাবি উঠেছে বিসিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান এলাকায় অবস্থানরত একাধিক মালিক পক্ষ থেকে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মাধ্যমে সরকার এমন দৃষ্ঠান্ত স্থাপন করবে এরপর যেনো কোন প্রতারক শিল্পপ্রতিষ্ঠানের আর কোন মালিককে এমন হয়রানী না করতে পারেন।
প্রসঙ্গ, ফতুল্লার শিল্পনগরী এলাকায় চিহ্নিত প্রতারক আকরাম হোসেন বেলী নীট নামক কটন প্রতিষ্ঠান স্থাপনের আগে উক্ত এলাকায় অবস্থিত অপর শিল্পপ্রতিষ্ঠান মার্টিন এ্যপারেল্স লিমিটেড নামক প্রতিষ্ঠানে উচ্চ পদে কর্মরত ছিলেন। কর্মরত থাকাকালে উক্ত প্রতিষ্ঠানের কয়েক লক্ষাধিক টাকা অর্থ আত্মসাতের করেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪:০১:১৪ ৪২১ বার পঠিত