
লক্ষ্য ৪২-এ ৪২৷ কিন্তু পরিস্থিতি কঠীন৷ পাপড়ি মেলেছে পদ্ম শিবির৷ গো-বলয়ে যে বিজেপির সুবিধে বিশেষ হবে না তা পাঁচ রাজ্যের ভোটেই স্পষ্ট৷ মোদী-শাহজুটির নজরেও বাংলা৷ পঞ্চায়েত ভোটের ফলাফল বিচার করলে রাজ্যের দ্বিতীয় শক্তি গেরুয়া দলটি৷ বাম-কংগ্রেস জোটও পোক্ত নয়৷ স্বভাবতই এবারের লোকসভায় মেরুকরণের ভোটের ইঙ্গিত পশ্চিমবঙ্গে৷
পরিস্থিতি বুঝতে পারচ্ছেন তৃণমূল নেত্রী৷ বুঝছেন, ২০০৯ বা ২০১৪-এর অবস্থা নেই৷ এই পরিস্থিতে তাই প্রার্থী তালিকায় বেশি করে ঠাঁই পেল রাজনৈতিক মুখ৷ প্রবীন থেকে নবীন রয়েছেন সবাই৷ প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে খুবই সতর্ক হয়ে পদক্ষেপ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ৪২ জনের মধ্যে সংসদে প্রবেশ করতে জনগণের দ্বারে যাবেন তৃণমূল ১৭ জন নতুন প্রার্থী৷
তালিকায় রয়েছেন মন্ত্রী, বিদায়করা৷ রাজ্যসভায় সাংসদও জায়গা পেয়েছেন সেখানে৷ পাহাড়ের মোর্চা সমর্থিত তৃণমূল প্রার্থীও পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ৷ এর থেকেই স্পষ্ট এবারের ভোটকে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে কাজ্যের শাসক দল৷
রাজ্যমন্ত্রীসভার দু’জন জন সদস্য স্থান পেয়েছেন ২০১৯ লোকসভার প্রার্থী তালিকায়৷ এঁরা হলেন, পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও প্রতি মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা৷ বিধায়কদের মধ্যে থেকে প্রার্থী করা হয়েছে মহুয়া মৈত্র, আবু তাহের, অপূর্ব সরকারকে৷ রাজ্যসভার সাংসদ থাকলেও ভূমিপুত্র হিসাবে মেদিনীপুর থেকে শাসক দলের প্রার্থী মানস ভুইঞাঁ৷
দার্জিলিং লোকসভায় প্রার্থী অমর সিং রাই৷ ফরওয়ার্ড ব্লক ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পুরস্কার পেলেন বাম জমানার খাদ্যমন্ত্রী পরেশ অধিকারী৷ কোচবিহার আসন থেকে লড়বেন তিনি৷ গণিখানের গড় কংগ্রেসের থেকে ছিনিয়ে নিতে এবার মালদা উত্তরে মমতার বাজি মৌসম বেনজির নুর৷ সম্পর্কে যিনি গণিখানের ভাগ্নি৷
কথায় বলে আরেক কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরি হলেন নবাবের জেলা মুর্শিদাবাদের ‘রবিনহুড’৷ বাস্তবে অবশ্য কংগ্রেসের শক্তি কমেছে সেখানে৷ জল্পনা হাত ছেড়ে পদ্মে যাবেন ডাকসাইটে অধীরও৷ মরন কামড় দিতে মুর্শিদাবাদ ও বহরমপুরে তৃণমূল দলের দুই বিধায়কের উপরই আস্থাশীল৷
রানাঘাটের প্রার্থী নিহত দলের বিধায়কের স্ত্রী রুপালি বিশ্বাস৷ কৃষ্ণনগরে মহুয়া মৈত্র৷ প্রার্থী টলিউডের মিমি, নুসরতরা৷ রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা যাদবপুর ও বসিরহাটে গোষ্ঠীকোন্দল সামাল দিতেই অন্য পেশার মানুষদের প্রার্থী করা হল৷
২০০৯-এ হারা কেন্দ্র বাঁকুড়ায় জিতেছিলেন ‘গ্ল্যামার কুইন’ মুনমুন সেন৷ অতীতের সেই রেকর্ডে ভর করে মুনমুনকে পাঠানো হয়েছে আসানসোলে৷ ভোটের লড়াইয়ে বাবুল বধ কি করতে পারবেন তিনি? আশা রাখছেন তৃণমূল নেত্রী৷
তালিকায় নতুন হিসাবে রয়েছেন, মালা রায়৷ যিনি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব৷ রয়েছেন আদিবাসী অধ্যুষিত ঝাড়গ্রামে উমা সোরেনের জায়গায় বীরবাহা সোরেন লড়বেন৷ পুরুলিয়ায় মৃগাঙ্ক মাইতি, বিষ্ণপুরে শ্যামল মণ্ডল৷
তৃণমূল নেত্রী বলছেন, ‘‘কঠীন চ্যালেঞ্জ৷ কিন্তু ভোটের লড়াইয়ে জিতে একমাত্র লক্ষ্য মোদী সরকারেকে দিল্লি থেকে সরিয়ে নিরপেক্ষ, জনদরদী সরকার গঠন৷’’ ফলে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নিজের অবস্থান থেকে সরে এলেন স্বয়ং দলনেত্রীই৷ লোকসভার প্রার্থী তালিকায় ঠাঁই পেলেন মন্ত্রী, বিধায়ক সহ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা৷
বাংলাদেশ সময়: ২১:৪২:১০ ২২১ বার পঠিত