আজ (মঙ্গলবার) ২৬ মার্চ’২০১৯
মহান স্বাধীনতা দিবস
বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাস-ঐতিহ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন ২৬ মার্চ।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ ঘোষিত হয়েছিলো এ দিনে। পাকিস্তানি সামরিক স্বৈরশাসকের শোষণ, বঞ্চনা, বাংলা ও বাঙালি বিদ্বেষ, মৌলিক অধিকার হরণের করুণ অধ্যায় থেকে বাঙালি জাতিকে মুক্ত করার সশস্ত্র যুদ্ধ শুরু হয় ৭১’র এ দিনে। ১৯৭১’র পুরো মার্চ মাসটাই ছিলো তুখোড় গণ আন্দোলন। নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করলেও তৎকালীন স্বৈরাচারী সরকার আওয়ামী লীগকে সরকার গঠনে বাধা প্রদান করে। কূটকৌশলের আশ্রয় নিয়ে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ৩ মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেন। বেতারে এই খবর প্রচারের সাথে সাথেই ঢাকাসহ সারা বাংলাদেশে বিদ্রোহের আগুন দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে। শেখ মুজিবুর রহমান অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন ফলে স্কুল, কলেজ, বিশ^বিদ্যালয়সহ সকল সরকারী, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মূলত বন্ধ হয়ে যায়। প্রতিদিন দেশের সর্বত্র বিক্ষোভ সমাবেশে শ্লোগান ওঠে “তোমার দেশ আমার দেশ বাংলাদেশ বাংলাদেশ”। মার্চের শেষ সপ্তাহটার অবস্থা ছিলো ভয়াবহ। পাকিস্তানিরা কখনো নমনীয় কখনো উগ্রভাবের সংমিশ্রণে একটি অভূতপূর্ব পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়। কখনো মনে হচ্ছিলো আলোচনার মধ্য দিয়ে পরিস্থিতির একটা ফয়সালা হবে। আবার কখনো মনে হয় সশস্ত্র যুদ্ধ ছাড়া কোনো কুল কিনারা হবে না। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া পূর্ববাংলায় (বাংলাদেশে) এসে একদিকে শেখ মুজিবের সাথে প্রতিক্রিয়ার ভাব সৃষ্টি করেছেন। অন্যদিকে পাকিস্তান থেকে হাজার হাজার সৈন্য, অস্ত্র এসেছে পূর্ববাংলায়। ২৫ মার্চ বিকেলে ইয়াহিয়া চলে যান পাকিস্তানে। সন্ধ্যার পর শুরু হয় ঢাকায় পাকিস্তানিদের অতর্কিত আক্রমণ। শেখ মুজিব গ্রেফতার হন। এ পর্যন্ত ঘটনা প্রবাহ নিয়ে তেমন বিতর্ক নেই। বিতর্ক হচ্ছে স্বাধীনতার ঘোষক এবং ঘোষণাকাল নিয়ে। একপক্ষ বলতে চান গ্রেফতার হবার পূর্বে অর্থাৎ ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। অন্যপক্ষ সেটা মানতে নারাজ। স্বাধীনতার ঘোষনা ও ঘোষক নিয়ে এ স্টাইলের বিরতিহীন বিতর্ক চলে আসছে। তার পরিসমাপ্তি ঘটার কোনো আলামত দেখা যাচ্ছে না। বরং দিনকে দিন বিতর্ক আরো চাঙ্গাই হচ্ছে ।
(ড. এফআর খানের মৃত্যু)
স্বাধীন বাংলাদেশকে সমরাস্ত্র ক্রয়ে আর্থিক সাহায্যকারী, আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন স্থাপত্য শিল্পী, ক্ষণজন্মা বাঙালি ড. এফআর খানের মৃত্যুদিবস আজ। ১৯৮২ সালের এই দিনে তিনি জেদায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। আন্তর্জাতিক গগনচুম্বী ভবন ও নগরায়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। ১শ’ তলা বিশিষ্ট জন হ্যানকার সেন্টার, জেদ্দা আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর, হজ্ব টার্মিনালের পঞ্চাশ হাজার বর্গফুট আয়তন বিশিষ্ট বৃহত্তম ছাদ অবকাঠামো, মক্কা ইউনিভার্সিটির স্থাপত্য মডেল অংকন তার অনন্য অবদান। মুসলিম স্থাপত্য নিয়ে তিনি অনেক গবেষণা করে গেছেন। বিশ্বখ্যাত ঞঁনব রহ ঞঁনব স্থাপত্য পদ্ধতির উদ্ভাবক তিনি। তার গগনচুম্বী ভবনের ওপর সাতখ-ে প্রকাশিত পুস্তক আজও বিশ্বব্যাপী একটি অমূল্য দিক নির্দেশনা। এফ আর খানের জন্ম ১৯২৯ সালের ৩ এপ্রিল মাদারীপুরের শিবচর । পুরো নাম ফজলুর রহমান খান। তার পিতা শিক্ষাবিদ খান বাহাদুর আবদুর রহমান খা । কলকাতার শিবপুরে ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেন এফ.আর খান। প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকারের পর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজেই শিক্ষকতা শুরু করেন। ৫২ তে পিএইচডি’র জন্যে চলে যান আমেরিকায় । একই সঙ্গে এমএস করেন স্ট্রাকচারাল ও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। ৫৬ তে দেশে ফিরে সরকারি চাকরি করেন কিছুদিন। পরে আবার আমেরিকায় চলে যান। সেখানে প্রাইভেট চাকরি এবং স্থাপত্যকলায় অধ্যাপনা করেন। বিশ্বের উচ্চতম গগনচুম্বী সিয়ার ব্যক্তি নির্বাচন করা হয় তাকে । বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালে প্রবাসে গৌরবোজ্জল ভূমিকা ছিলো এফআর খানের ।
২৬ মার্চের এ দিনটি ১৯৭২ সাল থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস হিসেবে উদযাপিত হয়। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নয় মাসের এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের জন্ম হয়। বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান অষ্টম। কিন্তু আয়তনের হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বে ৯৩তম, ফলে বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশগুলোর একটি। মুসলমান-সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৪র্থ। বাংলাদেশের ওয়ারী-বটেশ্বর অঞ্চলে ২০০৬ সালে প্রাপ্ত পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন অনুযায়ী বাংলাদেশ অঞ্চলে জনবসতি গড়ে উঠেছিলো প্রায় ৪ হাজার বছর আগে।
ইতিহাসের এ দিনে বিখ্যাত সংগীতজ্ঞ এবং সুরকার বেটোভেন লিভারের অসুখ সিরোসিসে ভুগে পরোলোকগমন করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৫৭। ১৭৭০ সালে জার্মানির বন নগরীতে তার জন্ম হয়েছিলো। দারিদ্রের কশাঘাতে জর্জরিত হয়ে মাত্র ১১ বছর বয়সে বেটোভেনকে স্কুল ত্যাগ করতে হয় এবং ১৮ বছর বয়সে তিনিই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিতে পরিণত হন। এই সুর¯্রষ্টা এবং সংগীতবিদ শেষ বয়সে বধির হয়ে গিয়েছিলেন। ধীরে ধীরে বধির হয়ে যাচ্ছেন তা তিনি আগে থেকেই বুঝতে পেরেছিলেন। বেটোভেনের অমর সৃষ্টিগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো মুনলাইন সোনাটা, নাইনথ সিম্ফনি।
১৯১১ সালের এ দিনে মার্কিন নাট্যকার ও দুইবার পুলিৎজার পুরস্কার বিজয়ী টেনিসি উইলিয়াম জন্মগ্রহণ করেন। তার জন্ম হয়েছিলো মিসিসিপি অঙ্গরাজ্যের কলোম্বাস শহরে। তার জীবনের বেশির ভাগ কেটেছে মিসৌরীর সেন্ট লুইস নামের শহরে। ১৯৩৮ সালে তিনি বিএ পাস করেন। এরপর তিনি ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত নানা ধরণের চাকুরি করেছেন। সে সময় তার রচিত নাটক দি গ্লাস মেনাজেরি প্রকাশিত এবং ব্রডওয়েতে অভিনীত হয়। এটি সে বছরের শ্রেষ্ঠ নাটক হিসেবে পুরস্কৃত হয়। ১৯৫০ সালে এই নাটকের উপর ভিত্তি করে চলচ্চিত্র নির্মিত হয়। ১৯৪৭ সালে প্রকাশিত হয় এ স্ট্রীটকার নেমড ডিজায়ার। আবেগ ঘন এ নাটককে যুক্তরাষ্ট্রের সেরা নাটক হিসেবে অভিহিত করা হয়ে থাকে। দ্বিতীয় পুলিৎজার পুরস্কার এনে দেয় ক্যাট অন হট টিন রুফ নামের নাটক। ১৯৮৩ সালের এ নাট্যকার পরলোকগমন করেন।
১৯৫২ সালের এ দিনে জুমো কেনিয়াত্তার নেতৃত্বে কেনিয়ায় ইংরেজ সা¤্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা আন্দোলনের শুরু হয়। তৎকালীন বৃটিশ ইষ্ট আফ্রিকা বর্তমানের কেনিয়ায় জুমো কেনিয়াত্তার জন্ম হয়েছিলো ১৮৯৪ সালে। ১৯২১ সালে ইস্ট আফ্রিকান এসোসিয়েশন বা ইএএর নেতৃত্ব কেনিয়ায় প্রথম শ্বেতাঙ্গ বিরোধী আন্দোলনের সূচনা হয়। কেনিয়াত্তা পরের বছর এ আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। ১৯৫২ সালের অক্টোবর মাসে তাকে মাও মাও বিদ্রোহের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। ১৯৬১ সালে তিনি মুক্তি লাভ করেন। ১৯৬৩ সালের ১২ ডিসেম্বর কেনিয়া স্বাধীনতা লাভ করে। সে সময় জুমো কেনিয়াত্তা দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব লাভ করেন। ১৯৬৪ সালে তিনি কেনিয়ার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
১৯৭৯ সালের এ দিনে মিসরের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাত এবং ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী মেনাচেম বেগিন যুক্তরাষ্ট্রে মধ্যস্থতা একটি শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করেন। মেরিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের ক্যাম্প ডেভিডে এই চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার কারণে এটি ক্যাম্প ডেভিড চুক্তি নামে খ্যাত হয়। মুসলিম বিশ্ব বিশেষ করে আরব দেশগুলোতে এ তীব্র বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছিলো। আরব লীগ থেকে মিশরকে বহিষ্কার করা হয়। চুক্তি স্বাক্ষরের মাত্র দুই বছরের মধ্যে অর্থাৎ ৬ই অক্টোবর ১৯৮১ সালে সামরিক কুচকাওয়াজে সালাম গ্রহণ করার সময় আনোয়ার সাদাত নিহত হন।
১৯৫৩ সালের এ দিনে যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসাবিদ এবং চিকিৎসা গবেষক ডা. জোনাস সাল্ক ঘোষণা করেন তিনি পোলিও রোগের টিকা নিয়ে পরীক্ষায় সফল হয়েছেন। পোলিওমাই লাইটিস নামের ভাইরাসে সংক্রমণে পোলিও রোগ হয়। এ রোগে আক্রান্ত শিশুর প্রাণহানী ঘটতে পারে বা শিশু পঙ্গু হয়ে যেতে পারে। ৯৫ শতাংশ ক্ষেত্রে পোলিও রোগের বিশেষ কোনো উপসর্গ আগে ভাগে দেখা দেয় না। সময়মত টিকা দেয়া হলে এ রোগ প্রতিহত করা সম্ভব।
নিউইয়র্কে বাণিজ্যিকভাবে চলচ্চিত্রের জন্যে ফিল্ম প্রস্তুত শুরু (১৮৮৫)
বিশিষ্ট রাজনীতিক ফজলুল কাদের চৌধুরীর জন্ম (১৯১৯)
পশ্চিমবঙ্গে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি বেআইনি ঘোষিত (১৯৪৮)
অবিভক্ত ভারতের মুসলিম আইসিএস গজনফর আলী খানের মৃত্যু (১৯৫৯)
বাংলাদেশে প্রথম স্বাধীনতা দিবস পালন (১৯৭২)
বাংলাদেশ-ভারত ৩ বিঘা নিয়ে চুক্তি স্বাক্ষর (১৯৯২)
সংসদে সংবিধান সংশোধনী বিল পাস (১৯৯৬)
সোহরাওয়াদী উদ্যানে ব্যাপক আয়োজনে বহুল আলোচিত শিখা চিরন্তন স্থাপন (১৯৯৭)
বাংলাদেশ সময়: ১১:২৯:২৫ ২৭৭ বার পঠিত