আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় একত্রে কাজ করছে বাংলাদেশ-চীন

প্রথম পাতা » আন্তর্জাতিক » আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় একত্রে কাজ করছে বাংলাদেশ-চীন
মঙ্গলবার, ১১ জুন ২০১৯



---

চীন শুধু বাংলাদেশের নির্ভরযোগ্য বন্ধুই নয় বরং গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার বলে মন্তব্য করেছেন চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম. ফজলুল করিম। দুই দেশ আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক শান্তি প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

সোমবার চীনের ইউনান প্রদেশের ইউশিতে দ্বিতীয় চীন-দক্ষিণ এশিয়া কো-অপারেশন ফোরামের (সিএসএসিএফ) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

চীনের এই প্রাদেশিক সরকার আয়োজিত এ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন রাষ্ট্রদূত ফজলুল করিম। এছাড়া ইউনান প্রদেশের গভর্নর রুয়ান চেংফা, আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত বাণিজ্যমন্ত্রী আজমল আহমদী, মালদ্বীপের অর্থমন্ত্রী আহমেদ শরীফসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর প্রতিনিধিরা এতে অংশগ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত ফজলুল করিম বলেন, চীন ও বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শুধু ব্যবসা ও অর্থনৈতিক খাতেই সহযোগিতা বাড়াবে না, এসব দেশগুলোর অভিন্ন স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয় যেমন দারিদ্র্য বিমোচন, কৃষি, শিক্ষা, সংস্কৃতিতে সহযোগিতা বাড়াবে। সিএসএসিএফের নেতৃত্ব দেয়ার সক্ষমতা ইউনান প্রদেশের রয়েছে। বাংলাদেশ ও চীনের সহযোগিতা ও বন্ধুত্বের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। ২০১৬ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিং পিংয়ের ঢাকা সফরের মধ্য দিয়ে দুদেশের কৌশলগত অংশীদারিত্ব বেড়েছে।

রাষ্ট্রদূত বলেন, দুই দেশের নেতৃত্বের কারণের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হয়েছে। বর্তমানে বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। সম্প্রতি বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হয়েছে। গত তিন বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে ৭ শতাংশের উপরে প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে বাংলাদেশ। আগামী ২০২১ সালের মধ্যে মধ্য আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। চলতি বছরে আমাদের প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশের উপরে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকার বিনিয়োগের জন্য ট্যাক্স হলিডে, কাঁচামাল আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা, রপ্তানিতে নগদ সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। সরকার ১০০টিরও বেশি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করছে। যেখানে চীনের বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করতে পারবে। এছাড়া চট্টগ্রামে চীনের জন্য আলাদা করে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করা হয়েছে।

রাষ্ট্রদূত বলেন, বর্তমানে আমাদের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, শিক্ষা ও সংস্কৃতি, কৃষি, বিজ্ঞানের মতো খাতগুলোতে সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমানে চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার। দুদেশের মধ্যকার বর্তমান বাণিজ্যের পরিমাণ ১৫ বিলিয়ন ডলার।

রাষ্ট্রদুত আরও বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ তার রপ্তানি পণ্যের বৈচিত্র্য সম্প্রাসরণ করছে। যার মাধ্যমে চীনে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির আরও সুযোগ বৃদ্ধি পাবে।

ফজলুল করিম বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের অর্থ হচ্ছে সরাসরি ১৬ কোটি মানুষের একটি বাজারে বিনিয়োগ করা। সেইসঙ্গে চীন, ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশে তিনশ কোটি মানুষের বাজারে বিনিয়োগ। এ অঞ্চলে কৌশলগত অবস্থান এবং বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর বাজারে শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য আকর্ষণীয়।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশে লৌহজাত খাত, ফার্মাসিউটিক্যালস, হালকা শিল্প, ইলেক্ট্রনিক্স এবং গাড়ি উৎপাদনের মতো খাতগুলোতে বিনিয়োগের মাধ্যমে চীনের বিশেষ করে ইউনানের ব্যবসায়ীর সর্বোচ্চ মুনাফা আয় করতে পারবে। এছাড়া তারা বাংলাদেশ থেকে সর্বোচ্চ মানের এবং প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে কাঁঠাল, আম, কলাসহ বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি আমদানি করতে পারে। আমি আশা করি আরও ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তরা বিশেষ করে ইউনানের বাংলাদেশ সফরের মাধ্যমে ব্যবসায়িক সম্ভাবনা খতিয়ে দেখবে।

ইউনান প্রদেশের গভর্নর বলেন, ইউনান প্রদেশ চীনের অর্থনৈতিক হাব এবং দেশটির সাথে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সংযোগস্থল। দ্বিতীয়বারের মতো ইউনানে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গত বছর প্রথম সম্মেলনে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো একত্রে বাণিজ্য, সংস্কৃতি, প্রযুক্তি, শিক্ষাসহ অন্যান্য বিষয়ে সহযোগিতার ঐক্যমত দিয়েছে। এই ফোরাম আমাদের নিজেদের মধ্যকার সহযোগিতাকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩:১২:২৫   ১১৬ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আন্তর্জাতিক’র আরও খবর


কানাডায় এলোপাথাড়ি গোলাগুলি, চার বাংলাদেশি আহত
মিয়ানমারের সামরিক অভ্যুত্থান ব্যর্থ করতে চায় জাতিসংঘ - গুতেরেস
ব্রাজিলে করোনায় ২ লাখ ২৭ হাজার ৫৬৩ জনের মৃত্যু
করোনায় বিশ্বে মৃত্যুর সংখ্যা ২২ লাখ ৭৬ হাজার ছাড়াল
ঘরের মাঠে টানা দ্বিতীয় হার লিভারপুলের
ফেসবুক বন্ধ করল মিয়ানমারে সামরিক জান্তা
করোনার বিরুদ্ধে ৯২ শতাংশ কার্যকর স্পুটনিক ভি
করোনার ছোবলে থামছে না প্রাণহানি, মৃত্যুর সংখ্যা ২২ লাখ ৪৭ হাজার
মিয়ানমার ইস্যুতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক আজ
তুর্কি নিয়ন্ত্রিত উত্তর সিরিয়ায় গাড়ি বোমা বিস্ফোরণে ১২ জন নিহত

আর্কাইভ