টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীর মোনছের বিয়ে করলেন মা ও মেয়েকে

প্রথম পাতা » আইন আদালত » টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীর মোনছের বিয়ে করলেন মা ও মেয়েকে
রবিবার, ২৭ অক্টোবর ২০১৯



---

নিউজটুনারায়ণগঞ্জ : টাঙ্গাইলের গোপালপুরে সম্প্রতি জামাইয়ের সঙ্গে শাশুড়ির বিয়ের ঘটনায় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের তালুকদারসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন শাশুরড়ি মাজেদা বেগম।

রোববার দুপুরে টাঙ্গাইল জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোপালপুর আমলি আদালতে এ মামলা দায়ের করা হয়।

এ ঘটনায় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোপালপুর আমলি আদালতের বিচারক ও সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শামসুল আলম গোপালপুর থানাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন ।

বিষয়টি নিশ্চিত করে টাঙ্গাইলের আদালত পরিদর্শক তানবীর আহম্মেদ জানান, আইন লঙ্ঘন করে বিয়ে,ধর্ম অবমাননা, শারিরীক নির্যাতনের মত গুরুত্বর এ মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। উপজেলার হাদিরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কাদের তালুকদার, নিকাহ রেজিষ্ট্রি কাজী, নিকাহ রেজিষ্ট্রি সহকারী কাজী ও ইউপিসদস্য সহ ১১জনকে আসামী করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট হাবিবুর রহমান জানান, আমাদের কাছে যেসব প্রমাণ রয়েছে, আশাকরি এ মামলায় আসামীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে।

সম্প্রতি গোপালপুরে হাদিরা ইউনিয়নে কড়িয়াটা গ্রামে স্ত্রীকে ১১ দিনের মাথায় তালাক দিয়ে শাশুড়িকে বিয়ের ঘটনাটি বেশ আলোচিত হয়ে উঠে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। এমনকি গণমাধ্যমেও ঘটনাটির খবর প্রকাশিত হয়। তবে এই আলোচিত-সমালোচিত বিয়েটি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানকেও দায়ী করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত ২ অক্টোবর টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার কড়িয়াটা গ্রামের নূর ইসলামের মেয়ে নূরন্নাহার খাতুন (১৯)কে বিয়ে করেন ধনবাড়ী উপজেলার হাজরাবাড়ী পূর্বপাড়া গ্রামের মৃত ওয়াহেদ আলীর ছেলে মোনছের আলী (৩২)। বিয়ের পরদিন শ্বাশুড়ি মাজেদা বেগম বেড়াতে যান মেয়ের বাড়ি। সেখানে এক সপ্তাহ অবস্থানের পর গত শুক্রবার (১১ অক্টোবর) বর কণেসহ নিজবাড়িতে ফেরেন শাশুড়ি মাজেদা। শনিবার (১২ অক্টোবর) সকালে নূরন্নাহার স্বামী মোনছেরের সংসার করবেন না বলে আপত্তি তোলেন। শুরু হয় পারিবারিক কলহ।

অপরদিকে মেয়ে নূরন্নাহারের স্বামী মোনছেরের সংসার না করার আপত্তি থাকায় শ্বাশুড়ি মাজেদা বেগম (৪০)নতুন জামাতার সংসার করার সম্মতি জানান। পারিবারিক এ সংকট নিরসনে অসহায় শ্বশুর নূর ইসলাম গ্রাম্য সালিশের স্মরণাপন্ন হন।
এরপর এই বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে অন্যান্য ইউপি সদস্য ও গ্রামবাসীদের নিয়ে সালিশ বৈঠক বসে।

সালিশে শ্বাশুড়ি মাজেদা বেগমকে মেয়ের জামাতা মোনছের আলী বিয়ে করার খবরে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসি বাড়ি ঘেরাও করাসহ মারপিট করে। সালিশ বৈঠকের মাঝে এক পর্যায়ে শাশুড়ি ও জামাতার মধ্যে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ তুলে প্রচুর মারধর করা হয়। এরপর নুরুন্নাহারকে তালাক দিতে মোনছের আলীকে এবং তার শাশুড়িকে তালাক দিতে শ্বশুরকে বাধ্য করা হয়। একই বৈঠকে মোনছের আলী ও তার শাশুড়ির বিয়ের রেজিষ্ট্রি সম্পন্ন করেন কাজী গোলাম মওলা জিনহা।

যদিও ১৯৭৪ সালের মুসলিম বিবাহ আইন অনুযায়ী, একই দিনে তালাক ও বিবাহ দন্ডনীয় অপরাধ। ফলে একই বৈঠকে তালাক দিয়ে এই বিয়ে কোনোভাবেই আইনসিদ্ধ নয়। আবার ইসলামি বিধান ও অনুশাসন অনুযায়ী, শাশুড়ি অর্থাৎ নিজের স্ত্রীর মাকে বিয়ে করা চিরস্থায়ী হারাম।

তবে এই ঘটনায় কোনো অভিযোগ না থাকায় এতো দিন কাউকে আইনের আওতায় আনা যায়নি বলে জানিয়েছেন গোপালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান ।

বাংলাদেশ সময়: ২২:১৯:৪৩   ৩০৪ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আইন আদালত’র আরও খবর


এমসি কলেজে দলবেঁধে ধর্ষণ: আদালত পরিবর্তন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন
পিকে হালদারের সহযোগী শঙ্খ ব্যাপারী কারাগারে
নির্বাচন কমিশনারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ফের রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি
আর্থিক বিচারে এখতিয়ার বাড়লো সিভিল কোর্টের
সাবেক বিচারক শাহবাগ থানায় মেয়ের বিরুদ্ধে জিডি করলেন
কারাগারে ফরিদপুরের দুই ইউপি চেয়ারম্যান
নারী সাক্ষীর সঙ্গে অশোভন আচরণ করায় বিচারক প্রত্যাহার
রাজধানীতে মা-ছেলে হত্যা মামলায় স্বামীসহ ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড
বিকৃত যৌন আচরণের শিকার হচ্ছে নারী ও শিশুরা
মাদক মামলায় পাপিয়া ও তার স্বামীর বিচার শুরু

আর্কাইভ