
নেদারল্যান্ডসের হেগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) রোহিঙ্গা গণহত্যা ইস্যুতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার দায়ের করা মামলার শুনানির প্রথম দিন শেষ হয়েছে। প্রথম দিনে গাম্বিয়া তাদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেছে। গাম্বিয়া মিয়ানমারে রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে চলতে থাকা গণহত্যা বন্ধে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক আদালতের বিচারকদেরকে ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে। খবর রয়টার্স’র
শুনানির শুরুতে বক্তৃতায় গাম্বিয়ার আইনমন্ত্রী আবুবকর মারি তামবাদু বলেন, গাম্বিয়া আপনাদের যা বলতে চায় তা হলো, আপনারা মিয়ানমারকে কাণ্ডজ্ঞানহীন হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে বলুন।’
তিনি আরও বলেন, ‘তাদের বর্বরতা এবং নিষ্ঠুরতায় আমরা স্তম্ভিত, এটি আমাদের বিবেককে প্রতিনিয়ত যন্ত্রণা দিচ্ছে। আমরা চাই তারা নিজ দেশে গণহত্যা বন্ধ করুক।’
এর আগে মঙ্গলবার নেদারল্যান্ডসের হেগে তিন দিন ব্যাপি এই শুনানির প্রথমদিন শুরু হয়। শুনানিতে মিয়ানমারকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন অং সান সু চি। অন্যদিকে গাম্বিয়ার নেতৃত্বে রয়েছেন দেশটির আইনমন্ত্রী আবুবকর মারি তামবাদু।
শুনানিতে আদালতের নির্দিষ্ট ১৫ জন বিচারকের পাশাপাশি আরও দুজন এডহক বিচারপতি অংশ নিয়েছেন। গাম্বিয়ার পক্ষ থেকে নাভি পিল্লাই এবং মিয়ানমারের পক্ষ থেকে প্রফেসর ক্লাউস ক্রেস এডহক বিচারপতি হিসেবে যোগ দিয়েছেন। নিয়ম অনুযায়ী শুনানির শুরুতেই তাদের দুজন শপথ নেন। তিন দিনের শুনানি শেষে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে তারা সিদ্ধান্ত নেবেন।
প্রথম দিনের শুনানি শেষ, মিয়ানমারে গণহত্যা বন্ধের দাবি গাম্বিয়ার
এদিকে পররাষ্ট্র সচিব এম শহিদুল হকের নেতৃত্বে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদল তথ্য উপাত্ত নিয়ে শুনানিতে উপস্থিত হয়েছে। প্রতিনিধিদলে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিও রয়েছেন।
২০১৭ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে সাত লাখ ৩০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। জাতিসংঘ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বর্বর এই অভিযানকে জাতিগত নিধন হিসেবে উল্লেখ করে। মানবাধিকার গ্রুপগুলো একে গণহত্যা বলে বর্ণনা করে।
গত মাসে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশন’র (ওআইসি) পক্ষে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে চালানো গণহত্যার ঘটনায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে গাম্বিয়া। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে আইসিজে আয়োজিত শুনানির প্রথমদিনে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) গাম্বিয়া যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে। ১১ ডিসেম্বর মিয়ানমার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করবে। ১২ ডিসেম্বর শুনানির শেষ দিনে প্রথমে গাম্বিয়া এবং পরে মিয়ানমার যুক্তিখণ্ডন করবে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:০২:২৫ ২১৯ বার পঠিত