
করোনা ভাইরাস সঙ্কটের মধ্যেই সারা বিশ্বে শুরু হয়েছে পবিত্র রমজান মাস। লকডাউনের কারণে প্রায় পুরো বিশ্বেই এবার বন্ধ রাখা হয়েছে গণতারাবি-ইফতার। স্থগিত রাখা হয়েছে জামাতে নামাজও।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব ও ফিলিস্তিনে শুক্রবার রোজা শুরু হলেও সেখানকার পবিত্র স্থানগুলোতে মুসল্লিরা প্রবেশ করতে পারেননি।
মক্কার মসজিদুল হারাম এবং মদিনার মসজিদে নববীতে ১৪শ বছরের মধ্যে এই প্রথম রমজানে সাধারণ মুসল্লিদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সেখানে তারাবি নামাজও সীমিত আকারে আদায় করা হয়েছে। এদিকে এবারের রমজানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন সৌদি বাদশাহ সালমান। সৌদি প্রেস এজেন্সিকে পাঠানো এক বিজ্ঞপতিতে সৌদি বাদশাহ বলেন, মসজিদে প্রবেশ নিষেধাজ্ঞার পরিস্থিতিতে মহিমান্বিত রমজান মাসকে স্বাগত জানাতে হচ্ছে। এ জন্য আমি ব্যথিত।
সারাহ নামের রিয়াদের এক বাসিন্দা বলেন, এই বছর কোন বিশেষ কিছু মনে হচ্ছে না। জেরুজালেমের মসজিদুল আকসাতেও মুসল্লিদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। সেখানে কয়েকজন আলেম মিলে শুক্রবারের রমজানের প্রথম জুমা আদায় করেছেন। এ বিষয়ে মসজিদুল আকসার ইমাম বলেন, আমরা ইশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছি যাতে আমাদের প্রতি দয়া করেন এবং এই মহামারি থেকে আমাদের বাঁচান।
এদিকে এশিয়ার বিভিন্ন দেশেও করোনাকালে মুসলমানদের বাড়িতে নামাজ আদায়ের জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। এশিয়াতে প্রায় ১৮০ কোটিরও বেশি মুসলমান বাস করেন। ইতিমধ্যে বেশ কিছু জায়গায় মসজিদ অথবা তাবলিগে গিয়ে করোনা সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে।
করোনাকালে রমজান নিয়ে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দীন ইয়াসিন বলেন, রোজায় আমাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে যেমন সংগ্রাম এবং যুদ্ধ করি। করোনার সঙ্গেও তেমনি লড়াই করতে হবে। মালয়েশিয়ায় আগামী ১২ মে পর্যন্ত লকডাউন বাড়ানো হয়েছে। পাশপাশি দেশটিতে মসজিদে জামাতে নামাজও স্থগিত করা হয়েছে।
বিশ্বের সর্ববৃহৎ মুসলিম দেশ ইন্দোনেশিয়াতেও মুসল্লিদের ঘরে থেকে নামাজ পড়ার জন্য বলা হয়েছে। এ বিষয়ে জাভা দ্বীপের বাসিনা তাতান আগুসতুস্তানি বলেন, ঘরে এবং বাইরে আমাদের জন্য একই। আমাদের নামাজ চালিয়ে যেতে হবে অবশ্যই। যদিও আমরা মসজিদে গিয়ে পড়তে পারছি না। তবে ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশে করোনা প্রকোপ কম থাকায় মসজিদে জামাতে নামাজ আদায়ের অনুমতি দিয়েছে দেশটির সরকার।
দক্ষিণ এশিয়াতে শনিবার থেকে শুরু হয়েছে পবিত্র রমজান মাস। করোনা প্রকোপ থাকলেও দক্ষিণ এশিয়ার দেশ পাকিস্তান রমজানে মসজিদ খুলে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যদিও এতে আপত্তি জানিয়েছে দেশটির চিকিৎসকরা। এছাড়া বাংলাদেশে ১২ জন নিয়ে তারাবি নামাজ পড়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। পাশপাশি সকল ইফতারে গণজমায়েত নিষিদ্ধ করেছে সরকার। শ্রীলঙ্কা, ভারতেও বন্ধ রাখা হয়েছে মসজিদে নামাজ।
আফ্রিকার দেশ আলজেরিয়াতে রমজান উপলক্ষ্যে কারফিউ শিথিল করা হয়েছে। তবে রমজানের মুসল্লিদের নামাজের কথা মাথায় রেখে একটি প্রদেশের লকডাউন সেখানে তুলে নেয়া হয়েছে। এছাড়া আফ্রিকার আরেক দেশ নাইজেরিয়াতেও করোনা ভাইরাসের বিস্তারের কারণে বন্ধ রাখা হয়েছে মসজিদ। দেশটিতে করোনা প্রতিরোধে কারফিউও জারি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪:০৯:২৩ ১৬৪ বার পঠিত