
লকডাউনের মধ্যেই সাইকেল চালিয়ে বিয়ে করার জন্য একশ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিলেন ভারতের উত্তরপ্রদেশের এক তরুণ। বিয়ে করে স্ত্রীকে নিয়ে ফিরলেনও সাইকেল চালিয়েই। তবে লকডাউনের নিয়ম মেনে মুখে রুমাল বেঁধে গোটা পথ সাইকেল চালিয়েছিন তিনি।
ভারতের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, উত্তরপ্রদেশের হামিরপুরের পাউথিয়া গ্রামের বাসিন্দা কালকু প্রজাপতি। করোনা সংক্রমণের অনেক আগেই পছন্দের পাত্রী রিঙ্কির সঙ্গে বিয়ের তারিখ নির্ধারণ করা ছিল। ২৫ এপ্রিল বিয়ের দিন নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু দেশটিতে মারণ ভাইরাসের দাপট বেড়ে যাওয়ায় বাতিল হয়ে যায় কালকু ও রিঙ্কির বিয়ের অনুষ্ঠান। তাই আর অপেক্ষা না করে যেমন ভাবা তেমন কাজ। সাইকেল নিয়ে একাই বিয়ে করতে বেরিয়ে পড়লেন বছর ২৩ এর এই তরুণ। প্রায় একশ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে মাহোবা জেলার পুনিয়া গ্রামে রিঙ্কির বাড়ি যান কালকু।
পেশায় কৃষক কালকু বলেন, আমরা বিয়ে করার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি পাচ্ছিলাম না। তাই সাইকেলে করে যাওয়া ছাড়া আমার কাছে কোনো উপায় ছিল না। আমাদের বিয়ের কার্ডও আত্মীয়দের মধ্যে বিলি করা হয়ে গিয়েছিল। তাই নির্ধারিত দিনে বিয়ে করার প্রয়োজন ছিল।
দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনার পর কালকু বাবার সঙ্গে কৃষি কাজ করেন। প্রায় পাঁচ মাস আগেই এই বিয়ের সমস্ত আয়োজন করা হয়। তাই বিয়ের দিন রিঙ্কির পরিবারের পক্ষ থেকে কালকুকে ফোন করা হলে তিনি বিয়ে করতে হাজির হন সাইকেল চালিয়েই। কালকুর কথায়, আমার বাইক থাকলেও ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকায় সাইকেল চালিয়েই হাজির হই। তবে লকডাউনের নিয়ম মেনে মুখে রুমাল বেধে গোটা পথ সাইকেল চালিয়েছি।
গ্রামের একটি মন্দিরে বিয়ের আয়োজন করা হয়। পাত্রী ও পাত্রী দুজনেই বিয়ের সময় মুখ ঢেকেই বসেছিলেন। তবে বিয়ের পর স্ত্রীকে নিয়ে ফেরার সময় বেগ পেতে হয় নতুন বরকে। সারা রাস্তা সাইকেলে করে স্ত্রীকে নিয়ে ১০০ কিলোমিটার পার হওয়া মুখের কথা নয়।
কালকু বলেন, বাড়ি ফিরে প্রচণ্ড পায়ের ব্যথায় ভুগেছিলাম। ঘুমিয়েও স্বপ্নের ঘোরে মনে হচ্ছে সাইকেল চালাচ্ছি। মা প্রচণ্ড অসুস্থ থাকায় আমায় তাড়াহুড়ো করে বিয়ে করতেই হলো। আমার স্ত্রী থাকলে মাকে দেখার কেউ থাকবে। রান্না করে মাকে খাওয়াতে পারবে স্ত্রী।
বাংলাদেশ সময়: ২১:৫১:৫৫ ১৯০ বার পঠিত