
রাজশাহীতে সরকারি সিদ্ধান্তকে কটাক্ষ করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন চার শিক্ষক। এ ঘটনায় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুস সালাম বাগমারা উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওই চার শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করেছেন।
সোমবার দুপুরে বরখাস্তের চিঠি ওই চার শিক্ষকের হাতে পৌঁছেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
বরখাস্তকৃত শিক্ষকরা হলেন- উপজেলার বুজরুকোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আয়নুল হক ও মোজাফফর হোসেন, কুলিবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক গোলাম মোস্তফা এবং বড়বিহানালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রেজাউল করিম ওরফে সুইট।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, করোনা ভাইরাস দুর্যোগে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো বন্ধ রয়েছে। শিক্ষকদের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিদের প্রস্তুত করা সুবিধাভোগীদের তালিকা যাচাই-বাছাই করার নির্দেশ দেয় মন্ত্রণালয়।
সংশ্লিষ্ট এলাকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এই দায়িত্ব পালন করতে বলা হয় ওই নির্দেশনায়।
নির্দেশনা অনুযায়ী গত ১২ মে বাগমারার ইউএনও শরিফ আহম্মেদ উপজেলা শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে তালিকাগুলো সংশ্লিষ্ট এলাকার শিক্ষকদের কাছে পৌঁছে দেন।
এরপর তালিকাগুলো শিক্ষকদের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যাচাই-বাছাই করে জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। দায়িত্ব পাওয়ার পরের দিন ১৩ মে শিক্ষক আয়নুল হক এই সিদ্ধান্তকে কটাক্ষ নিজেদের ‘কলুর বলদ’ হিসেবে উল্লেখ করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন।
আর আয়নুল হকের বক্তব্য সমর্থন করে স্ট্যাটাসে লাইক দেন এলাকার আরও তিনজন শিক্ষক। বিষয়টি ইউএনওর নজরে এলে তিনি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মনিরা খাতুন বলেন, অভিযোগ তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। এ কারণে চার শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে প্রতিবেদন পাঠানো হয়।
রোববার রাজশাহী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুস সালাম ওই চার শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করেন।
বাগমারার ইউএনও শরিফ আহম্মেদ বলেন, পরিপত্র জারির পর এ ধরনের স্ট্যাটাস দেয়ার কারণে সরকারি সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করা হয়েছে। এটি অমার্জনীয় অপরাধ।
চার শিক্ষক বরখাস্তের আদেশের চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তারা বলেন, আমরা বুঝতে না পেরে ফেসবুকে স্ট্যাটাস এবং লাইক দিয়েছি। এ জন্য ক্ষমা চাইছি।
প্রসঙ্গত, গত ৭ মে সরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের বিষয়ে পরিপত্র জারি করা হয়। ওই পরিপত্র জারির পর তা লঙ্ঘনের ঘটনায় রাজশাহীতে এটিই প্রথম ব্যবস্থা গ্রহণের ঘটনা।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৪৬:০০ ১১৪ বার পঠিত