সুইডেনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস নানা আয়োজনে বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হওয়ার যোগ্যতা অর্জনের স্বীকৃতি উদযাপন করছে।
উল্লেখ্য জাতিসংঘের ‘কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি)’ সম্প্রতি এই স্বীকৃতি প্রদান করে এবং সে অনুযায়ী ২০২৪ সালে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বিশ্বসভায় আসন করে নেবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেত্বত্বে অর্জিত অভূতপূর্ব এই সাফল্য উদযাপনের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দূতাবাস চত্বরে ‘বাংলাদেশ : এ জার্নি ফরম এলডিসি টু ডেভলপিং কান্ট্রি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
দূতাবাসের কাউন্সেলর শেখ মো. শাহরিয়ার মোশাররফ-এর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশী ছাড়াও সুইডিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সুইডিশ দাতা সংস্থা সিডা, সুইডিশ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভিন্ন সরকারি সংস্থা যেমন বিজনেস স্ইুডেন এবং সুইডিশ ন্যাশনাল বোর্ড অব ট্রেড এর প্রতিনিধিরা যোগ দেন এবং গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন।
রাষ্ট্রদূত মো. নাজমুল ইসলাম তার বক্তব্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর নেতৃত্বে ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধের পর কিভাবে একটি যুদ্ধবিদ্ধস্ত অর্থনীতি বহু চড়াই উৎরাই পেরিয়ে আজ এ অর্জনের দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে তার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেন। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বিগত প্রায় এক দশক ধরে বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে যে অভূতপূর্ব সাফল্য দেখিয়েছে তা তিনি পরিসংখ্যানসহ তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, সমগ্র বিশ্ব বিগত কয়েক বছর ধরেই এমডিজি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণসহ বাংলাদেশের বিবিধ অর্জনের ভূয়সী প্রশংসা করে আসছিল এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ জন্য জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা কর্তৃক বহু পুরস্কার ও সম্মাণে ভূষিত হয়েছেন। এ বিবেচনায় উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি লাভ ছিল অনেকটা সময়ের ব্যাপার মাত্র। তিনি বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় শুরু থেকেই পাশে থাকার জন্য সুইডেনকে ধন্যবাদ জানান এবং দু’দেশের সম্পর্কও যে উন্নয়ন সহযোগিতা নির্ভর হতে ক্রমান্বয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য নির্ভর-এ রুপান্তরিত হচ্ছে সে বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
সুইডিশ দাতা সংস্থা সিডা-এর উপ-পরিচালক মিজ অসা হেডেন উন্নয়নশীল দেশের যোগ্যতা অর্জন করায় বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানান এবং স্বাধীনতার অব্যবহিত পর হতেই বাংলাদেশের এ অগ্রযাত্রায় শরিক থাকতে পেরে গর্ব বোধ করেন। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় ও সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করায় তিনি বাংলাদেশ ও প্রধানমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করেন।
বিজনেস সুইডেনের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফ্রেডরিক উডেনফেল্ডট্ তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশে সুইডেনের পঞ্চাশটির মত কোম্পানীর ব্যবসা বাণিজ্য রয়েছে। পক্ষান্তরে ভারত ও চীনে সুইডিশ কোম্পানির সংখ্যা যথাক্রমে ২০০ ও ৬০০-এর কাছাকাছি। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গর্বিত যাত্রা শুরুর প্রাক্কালে তিনি বৈদেশিক বাণিজ্য সম্প্রসারণের উপর গুরুত্বারোপ করেন।
সুইডিশ ন্যাশনাল বোর্ড অব ট্রেড-এর সিনিয়র এ্যাডভাইজার হেনরিক ইসাকসন বাংলাদেশ এলডিসি পর্যায় থেকে উত্তরণ ঘটানোর যোগ্যতা অর্জন করায় সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবেলার জন্য বৈদেশিক বাণিজ্যের বিষয়ে অধিকতর দক্ষতা ও যোগ্যতা অর্জনের পরামর্শ দেন এবং এ বিষয়ে সুইডিশ ন্যশনাল বোর্ড অব ট্রেড এর সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮:৫৩:১৮ ৪৮৭ বার পঠিত