মিয়ানমারের রাখাইনে নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়ে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন বিষয়ে ঢাকায় বাংলাদেশ-মিয়ানমারের জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের দ্বিতীয় বৈঠক চলছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ মে) সকাল ১১টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন মেঘনায় এ বৈঠক শুরু হয়। বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক এবং মিয়ানমারের পক্ষে দেশটির পররাষ্ট্র সচিব মিন্ট থোরে বৈঠকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
বৈঠক সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে দুই দেশের পক্ষ থেকে গ্রহণ করা পদক্ষেপগুলোর বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হতে পারে।
২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোতে দুই দেশের মধ্যে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন বিষয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়।
চুক্তি স্বাক্ষরের দুই মাসের মধ্যে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন শুরুর কথা থাকলেও সেটা এখনও হয়নি। এদিকে চুক্তির ৬ মাস শেষ হতে চললেও এখনো পর্যন্ত কোনো রোহিঙ্গাকে ফেরত নেয়নি মিয়ানমার।
প্রসঙ্গত, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বসবাসকারী দেশটির সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে না মিয়ানমার সরকার। সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের শিকার হয়ে প্রাণ বাঁচাতে চার দশক ধরে পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে লাখ লাখ রোহিঙ্গা। সর্বশেষ ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইন রাজ্যে একটি নিরাপত্তা চৌকিতে কথিত হামলার অভিযোগ তুলে সেনা অভিযানের নামে নৃশংসতা শুরু হলে লাখ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এ সংখ্যা ১১ লাখ ছাড়িয়ে যায়। এদের আশ্রয় হয়েছে কক্সবাজারে উখিয়া উপজেলার বিভিন্ন ক্যাম্পে।
জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর দমন-পীড়নের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের আলামত খুঁজে পেয়েছে বলে জানিয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন রোহিঙ্গা নিধনের ঘটনাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের ‘পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’বলেও আখ্যা দিয়েছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন দেশ রোহিঙ্গা নিপীড়নকে জাতিগত নিধন বলে অভিহিত করেছে। তবে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ সমস্ত অভিযোগই বরাবরের মতো অস্বীকার করে আসছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩:০৩:২৯ ৩১৯ বার পঠিত