(বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস)
তামাকের ক্ষতিকারক দিক এবং এ থেকে মুক্ত থাকার আহবান জানিয়ে ৩১ মে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস পালন করা হয়। মানুষকে তামাকের বিষক্রিয়া সম্পর্কে সচেতন করতে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ১৯৮৭ সালে এ দিবসটির সূচনা করে। এ উপলক্ষে র্যালি, সেমিনার, সিম্পোজিয়ামসহ সরকারিভাবে বিস্তারিত কর্মসূচি পালন করা হয়। তামাকবিরোধী বেসরকারি কয়েকটি সংগঠনও যথাযথ মর্যাদায় দিবসটি পালন করে।
কবে থেকে ধূমপান শুরু হয় এ বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। তবে ধারনা করা হয় প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে ১৯১৪-১৯১৮ সালে মানুষ তুঙ্গে ওঠে। মহিলারা ধূমপান শুরু করে ১৯৩৯-১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে। ক্রমশ ধূমপান নেশায় আচ্ছন্ন হয় সমানতালে নারী-পুরুষ। অথচ মানুষ জানতো না ধূমপানের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে। এই ধূমপান বা তামাকের ব্যবহারের কারণেই মৃত্যুমুখী হচ্ছে পৃথিবীর লাখ লাখ মানুষ-এটা মানুষের জানা ছিল না। ১৯৬২ সালে বৃটেনের রয়্যাল কলেজ অব ফিজিশিয়ান্স ধূমপানের সাথে শারীরিক অসুস্থতার সম্পর্ক নির্ণয় করে। আমেরিকার সার্জন জেনারেল ১৯৭০-এ উল্লেখ করে “ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর । বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞগণ ১৯৭৮ এ প্রমাণ করেন পরিবেশযোগ্য অসুস্থতা ও অকালমৃত্যুর কারণসমূহের মধ্যে ধূমপান অন্যতম। পর্যায়ক্রমে বিশ্বব্যাপী ৫০ হাজারের মতো গবেষণায় ধূমপান ও অসুস্থতার মধ্যে সম্পর্ক সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
এভাবেই ধূমপানের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে তৎপর হয়ে ওঠে বিশ্ব । ধূমপান ও তামাক গ্রহণের বিরুদ্ধে জেগে ওঠে সমাজের সচেতন অংশ। গৃহীত হয় বিভিন্ন পদক্ষেপ । সুইডেন, ফিনল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, ইংল্যান্ড ইত্যাদি দেশ ধূমপানের বিরুদ্ধে গড়ে তোলে আইনগত প্রতিরোধ। এরকম বিশ্বব্যাপী ধূমপানের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধের তীব্রতা বেড়ে ওঠার প্রেক্ষাপটে ১৯৭৮ সালে বিশ্ব সংস্থার নজরে পড়ে বিষয়টি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ধূমপানের বিরুদ্ধে মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি ও সামাজিক আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে ৩১ মে কে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস ঘোষণা করে। সেই থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সকল সদস্য দেশে প্রতি বছর দিবসটি পালিত হচ্ছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও গড়ে উঠছে সামাজিক প্রতিরোধ। প্রতি বছর বিশ্ব সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী পালিত হয় বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবস। বাংলাদেশে সরকারিভাবে ধূমপানবিরোধী বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- (১) ১৯৮৮ সালের ৭ এপ্রিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রথম তামাক নির্মুল দিবসে বঙ্গভবনকে ধূমপানমুক্ত এলাকা ঘোষণা ।
(২) জাতীয় সম্প্রচার মাধ্যম বেতার, টেলিভিশনে ধূমপানের বিজ্ঞাপন প্রচার নিষিদ্ধ।
(৩) হাসপাতাল, ক্লিনিক, সরকারি অফিস, আলোচনা সভা ধূমপানমুক্ত এলাকা ঘোষণার হিড়িক।
(৪) সিগারেটের প্যাকেটে ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর লেখা।
(৫) অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচলে ধূমপান নিষিদ্ধ
(৬)সিগারেটের ওপর কর বৃদ্ধি
(৭) বাংলাদেশ তামাক শিল্পের কোন নতুন প্রতিষ্ঠানের অনুমতি প্রদান বন্ধ।
(৮)বই পুস্তকে ধূমপানের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে প্রবন্ধ সংযোজন।
১৮০৯ খ্রিস্টাব্দের ৩১শে মে অস্ট্রিয়ার বিশিষ্ট সঙ্গীতজ্ঞ ও গীতিকার যোশেফ হেইডেন মৃত্যুবরণ করন। তিনি ১৭৩২ সালে অস্ট্রিয়ার বুরজেনল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেন। ১৭৮১ সালে তিনি সম্পূর্ণ নতুন পদ্ধতিতে গাওয়া গানের একটি বিশেষ অ্যালবাম প্রকাশ করেন। ঐ অ্যালবামটি প্রকাশের পর সঙ্গীত জগতে তার বিশেষ সুনাম ছড়িয়ে পড়ে এবং এজন্য তাকে সিম্ফনী বা ঐক্যতান সঙ্গীতের জনক বলা হয়ে থাকে।
১৮৮৭ সালের এই দিনে জার্মানীর বিশিষ্ট পদার্থবিজ্ঞানী ও গণিতবিদ গুসতাভ রবার্ট কিরসোফ মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ১৮২৪ সালের ১২ই মার্চ জার্মানীর কোনিগস্ব্জ€Œ বার্গে জন্মগ্রহণ করেন। প্রাথমিক জীবনে তিনি সূর্য রশ্মি নিয়ে গবেষণা করেন এবং ১৮৬১ সালে তিনি বেনসন নামে তার এক বন্ধুর সাথে যৌথভাবে গবেষণা করে বর্ণালী উৎপাদন ও নীরিক্ষণ যন্ত্র আবিস্কার করেন। ১৮৮২ সালে তিনি তার বর্ণালী উৎপাদন যন্ত্রের জন্য ব্জ€˜রামফোর্ড মেডেল’ পুরস্কার পান।
১৯১০ খ্রিস্টাব্দের ৩১শে মে ব্রিটিশ শাসনের আওতায় দক্ষিণ আফ্রিকা স্বায়ত্তশাসন লাভ করে। এরপর লুইস বোথা দেশটির প্রথম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগর তীরবর্তী এবং উত্তমাশা অন্তরীপের পাশে অবস্থিত এ দেশটিতে মুল্যবান খনিজ সম্পদ বিশেষকরে স্বর্ণের খনি থাকায় ইউরোপীয় উপনিবেশবাদীরা বিভিন্ন সময় সেখানে উপনিবেশ স্থাপন করে। ইউরোপীয়দের মধ্যে পর্তুগীজরাই প্রথম অর্থাৎ ১৪৮৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় উপনিবেশ গড়ে তোলে। এরপর ব্রিটিশরা দেশটির ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। দক্ষিণ আফ্রিকার জনগন ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে কয়েকবার যুদ্ধও করে। অবশেষ ১৯৩১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা পরিপূর্ণ স্বাধীনতা লাভ করে।
ফার্সী ১৩৬১ সালের ১১ই খোরদাদ ইরানের ক্যালিগ্রাফারস সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সাইয়েদ হুসেইন মীরখ’নী মৃত্যুবরণ করেন। তিনি নাস্তালিক পদ্ধতিতে ক্যালিগ্রাফী তৈরীতে বিশেষ পারদর্শী ছিলেন। অধ্যাপক মীরখ’নী শৈশব থেকেই সুলেখন শিল্পচর্চা শুরু করেন এবং মাত্র ১১ বছর বয়সেই সুন্দর হস্তলিপির অধিকারী হন। তিনি একটানা ৩০ বছর ছাত্রদেরকে ক্যালিগ্রাফীর ওপর শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। মীরখ’নী একজন সৃজনশীল শিল্পী ছাড়াও ব্যক্তিগত জীবনে উন্নত নৈতিকতার অধিকারী ছিলেন। তিনি জীবনে তিনবার নাস্তালিক পদ্ধতিতে পবিত্র কোরআন মজীদ লিখেছিলেন।
৫৮ বছর আগের এই দিনে ইরানের বিশিষ্ট আলেম ও ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ মীর্জা মুহাম্মদ ফায়েজ কোমী ইরানের ধর্মীয় নগরী কোমে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি কোমেই জন্মগ্রহণ করেন এবং সেখানে বহু বছর গবেষণা করার পর ইজতেহাদ করার যোগ্যতা অর্জন করেন। এরপর তিনি ইরাকের নাজাফে গমন করেন এবং সেখানকার বিশিষ্ট আলেম জনাব আখুন্দ খোরাসানীর কাছ থেকে ধর্মীয় বিষয়ে ব্যাপক জ্ঞান লাভ করেন। ফার্সী ১৩৩৩ সালে তিনি নিজ জন্মস্থান কোমে ফিরে আসেন এবং সেখানকার ছাত্রদের মাঝে শিক্ষাদান করেন।
পাঠক! এবার আমরা গত বছরের ৩১শে মের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ খবর আপনাদের জানিয়ে দেবো।
২০০৭ সালের এই দিনে আফগানিস্তানের দক্ষিণে হেলমান্দ প্রদেশে ন্যাটো নেতৃত্বাধীন বাহিনীর একটি হেভিলিফট চিনুক হেলিকপ্টার গুলি করে ভূপাতিত করে তালেবান বাহিনী। যুক্তরাষ্ট্র এই ঘটনায় সাতজনের নিহত হওয়ার কথা স্বীকার করলেও রয়টার্সের খবরে বলা হয়, ভারী সরঞ্জাম বহনের উপযুক্ত এই হেলিকপ্টারটিতে ৩৫ জন সৈন্য ছিল যাদের সবাই নিহত হয়েছে।
ইরানের পরমাণু বিষয়ক তৎকালীন প্রধান আলোচক আলী লারিজানি ইরানের পরমাণু কর্মসূচি সম্পর্কে আলোচনা করতে গত বছরের এই দিন স্পেনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান জ্যাভিয়ার সোলানার সাথে বৈঠকে মিলিত হন। ২০০৭ সালের এপ্রিল মাসে তুরস্কে অনুষ্ঠিত বৈঠকের পর ইরানের পারমাণবিক সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে তাদের মধ্যে এটি ছিল দ্বিতীয় দফা বৈঠক।
ইয়েমেনের সেনাবাহিনী সংখ্যালঘু জাইদি শিয়া সম্প্রদায় অধ্যুষিত এলাকার একটি পেট্রল স্টেশনে ভুল করে বোমা হামলা চালালে ১৫ জন নিহত হয়।
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে একজন বিশিষ্ট আলেমের বাড়িতে অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতকারীদের রকেট ও হাত বোমা নিক্ষেপের ঘটনায় কমপক্ষে ১৩ জন নিহত হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১২:০৩:৪০ ৫৩০ বার পঠিত