‘বন শ্রমিক বন মজদুর’ পদের কর্মীদের স্থায়ী কর্মচারীদের মতো সুযোগ সুবিধা দেওয়া উচিৎ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এমন প্রস্তাব পেশ করবে রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশন।
অস্থায়ী কর্মীরা বন দফতরের প্রায় সমস্ত ‘ফিল্ড জব’ করে থাকেন। এরপরেও তাদের ভবিষ্যতের জন্য কোনও সুযোগ সুবিধা নেই রাজ্য সরকারের। তাই এমন প্রস্তাব দিতে চাইছে ফেডারেশন।
‘বন শ্রমিক বন মজদুর’ মূলত গ্রুপ ডি পদের চাকরি। কর্মীরা রাজ্য সরকারের এক নম্বর স্কেলের বেতন পেয়ে থাকেন। যা আট থেকে ১০ হাজার টাকার মধ্যে হয়। চাকুরী জীবনে তাঁদের বেতন বৃদ্ধি হয় মাত্র তিন শতাংশ। এরপরে তারা আর কোনও সুবিধাই পান না।
রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের পক্ষে বিল্পব রায় বলেন, “বন শ্রমিক বন মজদুররা অনেক কাজ করে। কিন্তু ওদের সমস্যা হল সেই কাজ অনুযায়ী ওদের সরকারি সুবিধা নেই। সরকারি সুবিধাগুলো পেলে ওদের ভবিষ্যৎ একটু ভালো হতে পারে। তাই আমাদের ফেডারেশন মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ওদের সুরক্ষিত ভবিষ্যতের জন্য কিছু প্রস্তাব রাখতে চায়।”
কি কি কাজ করে থাকেন বন শ্রমিক বন মজদুররা? গ্রাস কাটার থেকে কাঠ কাটা গার্ডেনিং, মাটি কাটা, ওয়াচ টাওয়ারে দিনের পর দিন থেকে বনের সুরক্ষার কাজ করা সবই করে থাকেন। ‘বন শ্রমিক বন মজদুর’-রা আগে ১০০ ইএমপি স্কিমের মধ্যে ছিলেন। এখন রাজ্য সরকার পিডিএল বা প্যাকেজিং পদ্ধতিতে গ্রুপ ডি-এর বেতন দিতে শুরু করেছে। সূত্রের খবর, এই পদগুলি আবার সুপার নিউমেরিক পদ। অর্থাৎ এই পদের কর্মীদের চাকুরী জীবনের মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে আর নতুন করে নিয়োগ হয় না। ফাঁকা অবস্থাতেই পরে থাকে।
রাজ্য সরকারি কর্মী ফেডারেশনের দাবি, এই পড়ে থাকা পদে নতুন কোনও নিয়ম চালু করে যদি ‘বন শ্রমিক বন মজদুর’-দের স্থায়ী কর্মীদের মতোই সুযোগ সুবিধা দেওয়া যায় তাহলে এদের ভবিষ্যৎ সুন্দর হতে পারে। ফেডারেশনের পক্ষে বিপ্লব রায় বলেন, “এই পদে নিয়োগ করার জন্য ওই ব্যক্তির দক্ষতার উপর জোর দেওয়া যেতে পারে। পাশাপাশি অভিজ্ঞতার একটা দামও রয়েছে। সেটা দেখে নিয়োগ করা যেতে পারে।”
সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, সরকারের কোষাগারে টাকা কম থাকার জন্যই ‘বন শ্রমিক বন মজদুর’-দের প্যাকেজের মধ্যে আনা হয়। পাহাড়ে যে সব বন শ্রমিকরা রয়েছেন তারা কোনওরকম যাতায়াত ভাতা পায় না , হিল অ্যালাউয়েন্স পায় না। সুন্দরবনে যারা কাজ করেন তারা রিস্ক অ্যালাউয়েন্স পায় না। মেলে না ট্রান্সফার ভাতাও। এই সমস্ত কিছুর পক্ষেই সরকারি কর্মচারী সংগঠনের এমন বিশেষ প্রস্তাব।
এই প্রসঙ্গে বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ বলেন, “আমাদের সরকার অনেক মানবিক। এই বছরেও ৪৭ হাজার কোটি টাকা ঋণ শোধ করার পরেও সরকারি কর্মচারীদের অনেক সুযোগ সুবিধা করে দিয়েছে। ওদের জন্যও প্যাকেজিং ব্যবস্থা করে দিয়েছে।” একইসঙ্গে তিনি বলেন, “এই বিপুল অর্থসঙ্কটের মাঝে আবার নতুন করে এখন কিছু করা সম্ভব নয়। যদি কিছু করা সম্ভব হয় তাহলে সেটা করা হবে। তবে সেটা সময় সাপেক্ষ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:০১:৫৬ ৩০১ বার পঠিত