একুশে জুলাই: কংগ্রেসের দোষেই এই দিন একা মমতার

প্রথম পাতা » আন্তর্জাতিক » একুশে জুলাই: কংগ্রেসের দোষেই এই দিন একা মমতার
শুক্রবার, ২০ জুলাই ২০১৮



---একুশে জুলাইয়ের ‘শহিদ দিবস’ হওয়া উচিত ছিল যুব কংগ্রেসেরই কর্মসূচি। কিন্তু ১৯৯৮ সালের পর থেকে কংগ্রেসই তা আর সেভাবে পালন করেনি৷ দিনটির তাৎপর্য উপেক্ষা করে কংগ্রেসই কার্যত ওই ‘শহিদ দিবস’ পালনের অধিকার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে সঁপে দেয়৷ এবারও তাই ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে সাড়ম্বরে ‘শহিদ-স্মরণ’ করবে পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। প্রদেশ কংগ্রেস নেতারাও মানছেন, একুশে জুলাই নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে টক্কর দেওয়ার সামর্থ্য আর তাঁদের নেই৷

১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই৷ যুব কংগ্রেসের অভিযান ঘিরে রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল ধর্মতলা ও তৎসংলগ্ন অঞ্চল৷ সিপিএম পরিচালিত বামফ্রন্ট সরকারের আমলে পুলিশের গুলিতে ১৩ জন যুব কংগ্রেস কর্মী নিহত হন৷ সেই ভয়াবহ ঘটনা এবার ২৫ বছরে পা দেবে৷

১৯৯৩ সালের পর থেকে প্রতি বছর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে যুব কংগ্রেসের ব্যানারে শহিদ দিবস সমাবেশ পালিত হয়েছে৷ প্রথমে ময়দানে, তার পর থেকে ধর্মতলায়৷ ১৯৯৮ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেস তৈরি করার পর থেকে এই কর্মসূচি ছিল ঘাসফুলের মূল প্রেরণা৷ এ ব্যাপারে কংগ্রেসের যখন হুঁশ ফেরে তখন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে৷ যুব কংগ্রেসও পৃথকভাবে শহিদ স্মরণের উদ্যোগ নিয়েছিল৷ কিন্তু সে উদ্যোগের কোনও মূল্য ছিল না৷

পুলিশের অনুমতি না পেয়ে ২০১৫ সালে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী হাজরা মোড়ে ম্যাটাডোর ভ্যানে দাঁড়িয়ে ইন্দিরা গান্ধীর আবক্ষ মূর্তির শহিদ স্মরণে সভা করেন৷ সেটাও আবার দলের চাপে৷ কিন্তু তার পরের বছর, অর্থাৎ গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে সিপিএম-কংগ্রেস জোট হওয়ায় প্রদেশ কংগ্রেসের একাধিক নেতা সোনিয়া গান্ধীর কোপে পড়ার ভয়ে একুশে জুলাইয়ের অনুষ্ঠান এড়িয়ে যান৷ তার মধ্যে কিন্তু অধীর চৌধুরী, আবদুল মান্নানও ছিলেন৷ সোনিয়া গান্ধী তখন চাইছিলেন না, একুশে জুলাই স্মরণের মঞ্চে জ্যোতি বসু-বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের পুলিশি প্রতাপের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলুক৷ নেত্রীকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে একুশে জুলাইয়ের সভায় সিপিএমের বিরুদ্ধে মুখ খোলার মতো সাহস প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা দেখাতে পারেননি৷

বিগত কয়েক বছর ধরে একুশে জুলাইয়ের ১৩ জন শহিদের স্মৃতির প্রতি অমর্যাদা করা হয়েছে বলে প্রদেশ কংগ্রেসের অন্দরে আগে থেকে চর্চা শুরু হয়েছিল৷ এখন তো সেই চর্চা আরও বেড়েছে৷ সেই ছবি এবারও বদলাচ্ছে না৷ সাদামাটাভাবেই একুশে স্মরণ করবে যুব কংগ্রেস৷ কারণ কংগ্রেসের সঙ্গে এ রাজ্যে যুবরা আর নেই৷ যারা এখন কংগ্রেসের যুব অংশ বলে দাবি করে তারা আসলে সিপিএমের ট্রোজান হর্স৷ প্রদেশ যুব কংগ্রেসের সভাপতি জানিয়েছেন, কলকাতাকে এড়িয়ে তাঁরা জেলায় জেলায় ২১ জুলাই পালনের কর্মসূচি নিয়েছেন৷

তবে এবারেও ২১ জুলাইয়ের শহিদ স্মরণে যথারীতি ধর্মতলায় সমাবেশের আয়োজন করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। ক্ষমতায় আসার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথমবার শহিদ দিবসের এই অনুষ্ঠানকে জলসার পরিণত করেছিলেন৷ পরে অবশ্য আর সে রকম কিছু দেখা যায়নি৷ এ বছরের একুশে জুলাইয়ের সমাবেশ হয়তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আগামী সাধারণ নির্বাচনের জন্য লড়ার প্রস্তুতি মঞ্চ হতে পারে৷ কারণ, ক্ষমতায় আসার পর একবার কিংবা দুইবারের বেশি ২১ জুলাইয়ের শহিদ স্মরণ অনুষ্ঠানকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কখনই রাজনৈতিক মঞ্চ ছাড়া আর কোনও ভাবেই ব্যবহার করেননি৷ কিন্তু ওই সমাবেশের আসল ক্রাউডপুলার তিনিই৷ রংচং মাখা অভিনেতা-অভিনেত্রী কিংবা কবি-শিল্পীরা নন৷

তবে দুঃখের বিষয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর থেকে ২১ জুলাইয়ের শহিদ স্মরণ অনুষ্ঠানে তাদেরই বুক ফুলিয়ে ঘুরতে ফিরতে দেখা যায়, সিপিএম ক্ষমতায় থাকতে যারা ওই পার্টির ব্রিগেড ভরানোর দায়িত্ব পালন করত৷

বাংলাদেশ সময়: ২২:২১:২৬   ৩২০ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আন্তর্জাতিক’র আরও খবর


কানাডায় এলোপাথাড়ি গোলাগুলি, চার বাংলাদেশি আহত
মিয়ানমারের সামরিক অভ্যুত্থান ব্যর্থ করতে চায় জাতিসংঘ - গুতেরেস
ব্রাজিলে করোনায় ২ লাখ ২৭ হাজার ৫৬৩ জনের মৃত্যু
করোনায় বিশ্বে মৃত্যুর সংখ্যা ২২ লাখ ৭৬ হাজার ছাড়াল
ঘরের মাঠে টানা দ্বিতীয় হার লিভারপুলের
ফেসবুক বন্ধ করল মিয়ানমারে সামরিক জান্তা
করোনার বিরুদ্ধে ৯২ শতাংশ কার্যকর স্পুটনিক ভি
করোনার ছোবলে থামছে না প্রাণহানি, মৃত্যুর সংখ্যা ২২ লাখ ৪৭ হাজার
মিয়ানমার ইস্যুতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক আজ
তুর্কি নিয়ন্ত্রিত উত্তর সিরিয়ায় গাড়ি বোমা বিস্ফোরণে ১২ জন নিহত

আর্কাইভ