ভারতের আগামী লোকসভা নির্বাচনে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিপক্ষে জোট হিসেবে লড়তে চাইছে রাহুল গান্ধী। জোটের পর মোদির বিপক্ষে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাকে রাখা হবে তা নিয়ে চলছে জল্পনা কল্পনা।
বিরোধী জোটের সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে উঠে এসেছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম। কিন্তু তৃণমূল নেত্রী সব বিরোধীদের সমর্থন পাবেন কি না এ বিষয়ে আশঙ্কা ছিলো। তবে এরই মধ্যে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জনতা দল সেকুলার নেতা এইচ ডি দেবেগৌড়ার সমর্থন পেয়েছেন মমতা। খবর বর্তমানের।
দেবেগৌড়া স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেশের প্রধানমন্ত্রী পদে তুলে ধরা হলে, আমি স্বাগত জানাব।
২০১৯ লোকসভা ভোটে বিজেপিকে ঠেকাতে আদাজল খেয়ে মাঠে নেমেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা। একার জোরে বিজেপিকে হারানো সম্ভব নয় বুঝেই ফেডারেল ফ্রন্ট গঠনে জোর দেন তিনি।
সেই ফ্রন্টে তিনি শামিল করতে চেয়েছেন বিভিন্ন বিরোধীদলকে। যার যেখানে জোর, সেখানে ‘একের বিরুদ্ধে এক’ নীতিতে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রার্থী দিতে চেয়েছেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই কৌশল যে বিজেপির পক্ষে বিপদের হতে পারে, তা সাম্প্রতিক একাধিক উপনির্বাচনে স্পষ্ট হয়েছে।
গত লোকসভা নির্বাচনে আসনের নিরিখে দেশের বৃহত্তম রাজ্য উত্তরপ্রদেশ থেকে হইহই করে জিতেছিল বিজেপি। সেবার ছিল তীব্র মোদি হাওয়া। এবার সেই দমকা ঝড়ের প্রভাব অনেকটাই কমেছে। তার উপর উত্তরপ্রদেশে বিজেপির দুই প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী এখন ভোট কাটাকাটির রাস্তা থেকে সরে আসতে চাইছে। রাজ্যে একের পর এক উপনির্বাচনে হাত মিলিয়েছে সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজ পার্টি।
বুয়া মায়াবতীর সঙ্গে ভাতিজা অখিলেশের এই হাত মেলানোর জেরে পরপর প্রেস্টিজ ফাইটে হেরেছে বিজেপি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাই জোরের সঙ্গেই বলেছেন, উত্তরপ্রদেশে অখিলেশ আর মায়াবতী এক হতে পারলে বিজেপি গোল্লা পাবে। বস্তুত, এই বিরোধী ঐক্যের জন্যই এখন উঠেপড়ে লেগেছেন তিনি।
দিল্লিতে গিয়ে কথা বলেছেন একাধিক বিরোধী নেতার সঙ্গে। তার এই উদ্যোগের কথা বলেছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী দেবেগৌড়াও। তিনি বলেন, তৃতীয় ফ্রন্ট গঠন এখন একদম প্রাথমিক পর্বে রয়েছে। দু’-তিন মাস পরে বিষয়টি বোঝা যাবে। বিজেপি বিরোধী হাওয়া জোরদার হবে। কিন্তু এখন থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমস্ত অ-বিজেপি দলকে এক ছাতার তলায় আনতে প্রাণপাত পরিশ্রম করছেন।
ফলে বিরোধী শিবিরের এমন প্রথমসারির নেত্রীকে প্রধানমন্ত্রী পদে সমর্থন করতে তার যে আপত্তি নেই, তা স্বীকার করতে কুণ্ঠাবোধ করেননি দেবেগৌড়া। বলেছেন, সবসময় কি ছেলেরাই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশ শাসন করবেন?
প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ১৭ বছর ধরে দেশ শাসন করেছিলেন। তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না কেন? তবে একই সঙ্গে মহিলা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মায়াবতীর নামেও তার খুব একটা আপত্তি নেই বলে জানিয়ে দেন জনতা দল সেকুলার নেতা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:২২:৩২ ৩১৭ বার পঠিত