
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসারদেরকে আমি বলেছি, তিনটি ক্রাইটেরিয়ার মাধ্যমে আপনারা সিদ্ধান্ত নেবেন। প্রথমটি হলো, যে কাজটি করছেন সেটি আইন সংগত কিনা। দ্বিতীয়টি হচ্ছে, আপনাদের বিবেক এই সিদ্ধান্তে সায় দিচ্ছে কিনা। তৃতীয়টি হল, ১৮ কোটি মানুষের সামনে আমরা যারা নির্বাচনের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকব তারা আসামি। যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে না পারি তাহলে কিন্তু আমাদের জবাবদিহি করতে হবে। এই তিনটি ক্রাইটেরিয়া মেনে আমরা কাজ করছি।
সোমবার (৫ মে) সকাল ১০টায় ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষ্যে ময়মনসিংহ অঞ্চলের নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের শহীদ শাহাবুদ্দিন মিলনায়তনে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা যে শপথ নিয়েছি সেটা আমরা সমুন্নত রাখব। নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। বর্তমান নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান। সেই নিশ্চয়তা আমরা জাতিকে দিতে পারি।
মতবিনিময় সভায় তিনি আরও বলেন, আমাদের নির্বাচন কর্মকর্তাদের আমরা হাত তুলে শপথ করিয়েছি সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে আইনকানুন মেনে যাতে তারা নির্বাচন পরিচালনা করে। অতীতে নির্বাচন নিয়ে যা হয়েছে আগামীতে যেন তা না হয় আমি তাদেরকে এ কথাই বলেছি। আমরা সম্পূর্ণ একটি নিরপেক্ষ, বিশ্বাসযোগ্য এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এ ব্যাপারে সব রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা প্রয়োজন। তবে আশার কথা হচ্ছে বর্তমানে সকল রাজনৈতিক দল নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলছে। তারা সবাই বলছে, তারাও জাতির কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য। রাজনৈতিক দলগুলো বলছে ২৪ এর আন্দোলন করে কি লাভ হবে যদি আমরা একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত না করতে পারি।
সিইসি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা আমাদেরকে বলেছেন, একটি উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটের দিনটি যাতে পালিত হয়। আমরাও সে অনুযায়ী কাজ করছি। উৎসবমুখর পরিবেশে সবাই ভোট দিতে যাবে। নিরপেক্ষভাবে, নির্ভয়ে ও নির্দ্বিধায় নিজের পছন্দের প্রার্থীকে সবাই যাতে ভোট দিতে পারেন সে লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন কাজ করে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত যে সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তার কোনোটিই আমি এককভাবে নেইনি। আমরা সম্পূর্ণভাবে পাঁচজন একমত হয়ে ঐক্যমতের ভিত্তিতে আমরা সব সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
নির্বাচন কমিশন থেকে যত সিদ্ধান্ত এসেছে সেগুলো কারো একক সিদ্ধান্ত নয়। নির্বাচন কমিশন যত সিদ্ধান্ত নেয় সবগুলো হয়তো সবার পছন্দ হবে না, তবে এ সিদ্ধান্তগুলো আমরা সবাই একমত হয়ে গ্রহণ করি।
সামনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মাঠে এগুলো নিয়ে আলোচনা চলছে। যেগুলো নিয়ে বিতর্ক আছে আমরা সেগুলোতে যুক্ত হতে চাই না। সংস্কার কমিশনের সুপারিশ আমরা মানছি না বলে অনেকে মন খারাপ করছে। এ বিষয়ে আগে রাজনৈতিকভাবে ফয়সালা হোক। এই দেশে আইনকানুন যা হয় সব রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে হয়। আমরা রাজনীতির বাইরে কাজ করতে পারব না।
মতবিনিময় সভায় আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা শাহিনুর রহমান প্রামাণিকের সভাপতিত্বে বিভাগের চার জেলার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, এবং উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাগণ অংশ নেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:২২:৪৮ ৪ বার পঠিত