
দেশে আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা ও জুলাই গণহত্যার বিচারের আগে কোনো নির্বাচন জনগণ মেনে নেবে না। বলেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম (চরমোনাই পীর)।
শুক্রবার (৯ মে) বগুড়ার সাতমাথায় মুক্তমঞ্চে ইসলামী আন্দোলন বগুড়া জেলা আয়োজিত গণসমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।
চরমোনাই পীর বলেন, ‘ইসলামবিরোধী নারী নীতিমালা বাতিল, শাপলা ও জুলাই হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শান্তি, দূর্নীতিবাজদের বিচার এবং নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা, ইসলামি হুকুমত কায়েম করতে হবে।
সংস্কার ও নির্বাচন সম্পর্কে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির বলেন, ‘সংস্কার ও নির্বাচন উভয়ই জরুরি। তবে নির্বাচন যখনই হোক না কোনো তার আগে সংস্কার অতিব জরুরি।’
একই সঙ্গে চরমোনাই পীর বলেন, দেশে আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ এবং জুলাই গণহত্যার বিচারের পর নির্বাচন। এর আগে কোনো নির্বাচন জনগণ মেনে নেবে না।
নারী সংস্কার কমিশন ও নারী নীতিমালা কুরআন-হাদিসের সাথে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক বলে মন্তব্য করেন চরমোনাই পীর। তিনি বলেন, ‘এতে বলা হয়েছে সকল উত্তরাধিকার নিশ্চিতকরণে মুসলিম ও হিন্দু উত্তরাধিকার আইন সংশোধন করা জরুরি। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, একজন পুরুষের জন্য আছে দুটি নারীর সমান অংশ।’
নারী নীতিমালায় বলা হয়েছে, শ্রম আইনে যৌন কর্মীদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করতে হবে। এতে যৌন কর্মীকে স্বাভাবিক শ্রমিক হিসেবে দেখানো হয়েছে। এর বিরোধিতা করে চরমোনাই পীর বলেন, পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে ব্যভিচারী নারী ও পুরুষকে কঠোর শাস্তি প্রদান করতে হবে।
সাম্প্রতিক আলোচিত বিষয় মানবিক করিডোর নিয়েও কথা বলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির। বলেন, ‘মিয়ানমারকে মানবিক করিডোরের প্রস্তাব প্রকৃতপক্ষে রাখাইন ও পার্বত্য অঞ্চলকে একটি খ্রিষ্টান রাষ্ট্র বানানোর সাম্রাজ্যবাদীদের পাঁয়তারা। অথচ ১৩ লাখ রোহিঙ্গা মুসলমানকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর জন্য জাতিসংঘ কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।’
ফিলিস্তিনে ইসরায়েল যে মানব ইতিহাসের জঘন্যতম বর্বরতা চালাচ্ছে জাতিসংঘ কাগুজে বিবৃতি ছাড়া ইসরাইলকে বিরত রাখার জন্য কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
চরমোনাই পীর ভারতে সংখ্যালঘুদের ওপর সেদেশের সাম্প্রদায়িক শাসকদল বিজেপি ও তার উগ্রবাদীদের উন্মাদনার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘মোদি সরকার ভারতে মুসলমান, মাদ্রাসা এবং মসজিদের ওপর যে চরম নির্যাতন ও ধ্বংসলীলা চালাচ্ছে বিশ্বসম্প্রদায় সম্পূর্ণভাবে নীরবতা পালন করছে।’ মাওলানা আ. ন. ম মামুনুর রশীদের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের নায়েবে আমির আল্লামা আব্দুল হক আজাদ।
আরো উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মুহাম্মাদ নূরুন নাবী, বগুড়া জেলার প্রধান উপদেষ্টা মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, জেলা সহ-সভাপতি প্রভাষক মীর মাহমুদুর রহমান (চুন্নু) জেলা সেক্রেটারি সহকারী অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম শফিক, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সভাপতি মাওলানা আব্দুল মতিন, জাতীয় শিক্ষক ফোরামের সভাপতি মাওলানা আলতাব আলী, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের সভাপতি মুহা. ফরহাদ হোসেন মন্টু, ইসলামী যুব আন্দোলনের সভাপতি মুহা. সোহরাব হোসেন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সাধারণ সম্পাদক মুহা. সোহেল রানা প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২১:২৬:৫৫ ১০ বার পঠিত