
পঞ্চগড়ে প্রেমিকাকে হারানোর আশঙ্কায় থানায় পুলিশি হেফাজতে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে ১৭ বছর বয়সি এক কিশোর।
রোববার (১ জুন) বিকেলে পঞ্চগড় সদর থানার নারী ও শিশু হেল্প ডেস্কের একটি কক্ষে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, বিকেল সাড়ে ৬টার দিকে ওই কিশোর কক্ষের দরজা ভেতর থেকে ছিটকিনি লাগিয়ে জানালার পর্দা ছিঁড়ে তা ফ্যানের সঙ্গে বেঁধে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। বিষয়টি টের পেয়ে পুলিশ দ্রুত দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে চিকিৎসকরা নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, সম্পর্কের দিক থেকে তারা চাচাতো ভাই-বোন হলেও দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ২৮ মে কিশোর তার সমবয়সি প্রেমিকাকে নিয়ে পালিয়ে যায় এবং পরদিন এফিডেভিট করে বিয়ে করে। সেদিনই তারা কিশোরের বাড়িতে ফিরে আসে। তবে মেয়ের বাবার পক্ষ থেকে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হলে পুলিশ রোববার দুপুরে দুজনকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
থানায় নারী ও শিশু হেল্প ডেস্কে পৃথক কক্ষে তাদের রাখা হয় এবং দুই পরিবারের মধ্যে সমঝোতার আলোচনা চলছিল। এ সময়ই কিশোর গোপনে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
কিশোরের বাবা বলেন, ‘মেয়ের পরিবার আর্থিকভাবে ভালো, তাই শুরু থেকেই তারা এই সম্পর্ক মেনে নিতে চাচ্ছিলেন না। ছেলে-মেয়ের ভালোবাসা গভীর ছিল, তাই আমরা বিষয়টি সমঝোতার মাধ্যমে মীমাংসার চেষ্টা করছিলাম। থানায় নেওয়ার পর হঠাৎ এই দুর্ঘটনা ঘটে।’
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ হিল জামান বলেন, ‘মেয়ের বাবার সাধারণ ডায়েরির ভিত্তিতে আমরা আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে দুই পক্ষকে থানায় এনেছিলাম। দুই পরিবারই সমঝোতায় পৌঁছেছিল এবং সন্তানদের বাড়িতে নেয়ার প্রস্তুতি চলছিল। এরইমধ্যে কিশোরটি আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পুলিশি তৎপরতায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো গেছে।’
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. রেজওয়ানুল্লাহ জানান, কিশোরটি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল। তার গলায় গুরুতর কোনো চোট পাওয়া যায়নি। বর্তমানে সে শঙ্কামুক্ত এবং তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
এ ঘটনায় থানার নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ প্রশাসন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩:৫৪:৫৯ ১৫ বার পঠিত