গাজা উপত্যকায় মার্কিন সহায়তায় পরিচালিত একটি খাদ্য বিতরণকেন্দ্রে প্রবেশের অপেক্ষায় থাকা মানুষদের লক্ষ্য করে বুধবার ইসরায়েলি বাহিনী গুলি চালিয়েছে। এতে ৩১ জন নিহত ও প্রায় ২০০ জন আহত হয়েছে। ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের সিভিল ডিফেন্স সংস্থার বরাত দিয়ে এএফপি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
সংস্থাটির মুখপাত্র মাহমুদ বাসসাল এএফপিকে বলেন, ‘আমরা অন্তত ৩১ জন নিহতের দেহ ও প্রায় ২০০ জন আহত ব্যক্তিকে সরিয়ে নিয়েছি, যারা মার্কিন সহায়তাকেন্দ্র থেকে খাদ্য সংগ্রহের পথে ইসরায়েলি ট্যাংক ও ড্রোন হামলার শিকার হয়।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এ ঘটনায় মন্তব্যের জন্য এএফপির অনুরোধে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো জবাব দেয়নি। এ ছাড়া গাজা উপত্যকায় সাংবাদিকদের চলাচলে আরোপিত সীমাবদ্ধতা ও সেখানে প্রবেশের জটিলতার কারণে সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষ ঘোষিত হতাহতের সংখ্যা এএফপি স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি।
মুখপাত্র বাসসাল আরো জানান, স্থানীয় সময় রাত ২টা থেকে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি ওই মার্কিন ও ইসরায়েলি সহায়তা কেন্দ্রের দিকে যাওয়ার আশায় জড়ো হতে শুরু করে। তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলি ট্যাংক থেকে একাধিকবার গুলি ছোড়া হয়, এরপর ভোর সাড়ে ৫টার দিকে গোলাবর্ষণ আরো তীব্র হয়ে ওঠে, সেই সঙ্গে ড্রোন থেকেও ব্যাপক গুলি চালানো হয়, যার লক্ষ্য ছিল বেসামরিক মানুষ।
গাজা শহরের আল-শিফা হাসপাতালের পরিচালক মোহাম্মদ আবু সালিমা এএফপিকে জানান, তারা সহায়তাকেন্দ্রে প্রবেশের অপেক্ষায় থাকা ২৪ জন নিহত ব্যক্তির দেহ গ্রহণ করেছে এবং ৯৬ জন আহত ব্যক্তিকে চিকিৎসা দিচ্ছে। পাশাপাশি মধ্য গাজার নুসিরাত শরণার্থীশিবিরের আল-আওয়দা হাসপাতাল এক বিবৃতিতে জানায়, তারা সাতটি মরদেহ গ্রহণ করেছে এবং একই ঘটনায় আহত ১১২ জনকে চিকিৎসা দিচ্ছে।
এএফপির তথ্য মতে, গত ২৭ মে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) প্রথম খাদ্য সহায়তা বিতরণকেন্দ্র চালুর পর থেকে একের পর এক প্রাণঘাতী গুলির ঘটনা ঘটছে। অন্যদিকে ইসরায়েল ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে পড়ছে সেখানকার মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে।
২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েলে এক নজিরবিহীন হামলা চালায় হামাস। সরকারি পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে এএফপির হিসাবে, সেই হামলায় ইসরায়েলে এক হাজার ২১৯ জন নিহত হয়, যাদের বেশির ভাগই বেসামরিক নাগরিক। অন্যদিকে হামাস শাসিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত সেখানে কমপক্ষে ৫৪ হাজার ৯৮১ জন নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক। জাতিসংঘ এই হিসাবকে নির্ভরযোগ্য বলে বিবেচনা করে।
বাংলাদেশ সময়: ২০:০৩:৪৭ ৩০ বার পঠিত