
জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুরে সরিষাবাড়ীতে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। মোছাঃ পারুল আক্তার (২৮) নামে এক নারী তার স্বামী মোঃ ফারুক হোসেন (৪৮) এর বিরুদ্ধে পালিত মেয়ে(১৬)কে বিয়ে করে নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ এনে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এই ঘটনা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বিকালে থানায় করা অভিযোগ ও স্থানীয় বরাদে জানা গেছে, গত ৮ জুন দুপুরে সরিষাবাড়ী বাউসী বাজার এলাকায় মা স্টুডিও ঘরে এই ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী স্ত্রী পারুল আক্তার জানান, ফারুক হোসেনের সাথে তার ১০ বছরের দাম্পত্য জীবন। তাদের দুটি মেয়ে ও একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। ফারুক হোসেন পূর্বে আরও দুটি বিয়ে করেছিলেন।
ওই সময় তার দ্বিতীয় স্ত্রী, তার প্রথম স্বামীর ঔরসজাত সন্তান মোছাঃ ফারিয়া আক্তারকে সাথে নিয়ে ফারুকের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। পরে দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথে কিছু দিন সংসার করার পর ফারুকের সাথে বনিবনার না হওয়ায় বিচ্ছেদ ঘটে। কিন্তু যাওয়ার সময় দ্বিতীয় স্ত্রী তার মেয়ে ফারিয়াকে ফারুকের কাছে রেখেই চলে যান। পরে মেয়েটিকে ফারুক তার নিজের কন্যা সন্তান হিসেবে লালন পালন শুরু করেন। এর কিছুদিন পর ফারুক আবারো পারুল নামে এক মেয়েকে তৃতীয় বিয়ে করেন।
পারুল বিয়ের পর ফারুকের ঘরে এসে ফারিয়াকে তার মেয়ে হিসেবেই দেখতে পান এবং পারুল ও তাকে মেয়ের যত্নে লালন পালন করেন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, পারুল আক্তার তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, আনুমানিক এক বছর পূর্বে তিনি তার স্বামী ফারুক হোসেন এবং পালিত কন্যা মোছাঃ ফারিয়া আক্তারকে অনৈতিক অবস্থায় দেখতে পান। এ বিষয়ে ফারুককে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে পারুলকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন শুরু করেন এবং কাউকে কিছু জানালে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন। পরে সন্তানদের মুখের দিকে তাকিয়ে পারুল এই অনৈতিক সম্পর্ক জেনেও সংসার করে আসছিলেন।
তবে, ফারুক হোসেন স্থানীয় লোকজনের কাছেও এ বিষয়ে উল্টাপাল্টা কথা বলতে শুরু করেন।
ঘটনার প্রায় ১৫ দিন পূর্বে ফারুক হোসেন কৌশলে পারুলকে তার পিত্রালয়ে পাঠিয়ে দেন। পারুল তার আট বছর বয়সী কন্যা সন্তান মরিয়ম আক্তারকে ফারুকের কাছে রেখে পিত্রালয়ে চলে যান। এরপর, ঘটনার দিন (৮ জুন) বিকাল ৪টার দিকে পারুল তার পিত্রালয় থেকে স্বামীর বাড়ী বাউসী বাজারস্থ বসতবাড়িতে ফিরে এসে দেখেন ঘর তালাবদ্ধ। স্থানীয়দের কাছে জানতে পারেন, তার স্বামী মোঃ ফারুক হোসেন তার পালিত কন্যা মোছাঃ ফারিয়া আক্তারকে বিয়ে করে তাদের শিশু সন্তান মরিয়মকে নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে চলে গেছেন।
পরে পারুল আক্তার তার শিশু সন্তান মরিয়মসহ ফারুক ও ফারিয়া আক্তারকে সম্ভাব্য সব স্থানে খুঁজেও তাদের কোনো সন্ধান পাননি। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের পরামর্শে তিনি আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন এবং থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
এবিষয়ে সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রাশেদুল ইসলাম রাশেদ বলেন, এই ঘটনার প্রেক্ষিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। ফারুক হোসেন ও ফারিয়া আক্তারের সন্ধান এবং শিশু সন্তান মরিয়মের খোঁজ পাওয়ার জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এছাড়াও এই ঘটনায় সমাজের নৈতিক অবক্ষয় এবং পারিবারিক সম্পর্কের জটিলতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তৈরি করেছে বলেও স্থানীয়রা জানান।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:১৪:৫৯ ৯৪ বার পঠিত