পৃথক বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠা কারো একক দাবি নয় : প্রধান বিচারপতি

প্রথম পাতা » আইন আদালত » পৃথক বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠা কারো একক দাবি নয় : প্রধান বিচারপতি
রবিবার, ১৭ আগস্ট ২০২৫



পৃথক বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠা কারো একক দাবি নয় : প্রধান বিচারপতি

প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমদ বলেছেন, পৃথক বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠা সংক্রান্ত সংস্কারের দাবি বহুবার করা হয়েছে। এটি কারো একক দাবি নয়; দীর্ঘদিন ধরেই বৃহৎ বিনিয়োগকারী থেকে শুরু করে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিভিন্ন সভা-সেমিনারে এই দাবি জানিয়ে আসছেন।

তিনি বলেছেন, নিজের গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে জুডিশিয়ারি। বিগত এক বছরে বিচারবিভাগের অনেক অর্জন হয়েছে।
সম্প্রতি জুডিশিয়াল পদায়ন ও গঠন বিধিমালা প্রথমবারের মতো বিশাল ক্ষমতা দিয়েছে।

আজ রবিবার দুপুরে সিলেটের একটি হোটেলে খসড়া বাণিজ্যিক আদালত গঠন বিষয়ক এক সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম অনেক দূর এগিয়েছে। বিভিন্ন ডেভেলপমেন্ট পার্টনার টিমের সঙ্গে এ বিষয়ে কাজ করা হচ্ছে।
জুলাই মাসে বিডা, ইউএনডিপি ও ইইউ মিলে সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে একটি ডায়লগে আইনজীবী ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি পাওয়া গেছে। এ বিষয়গুলোকে এজেন্ডা ধরে কাজ করা হচ্ছে। ফাইনাল ড্রাফট সরকারকে দেয়া হবে। কারণ বাস্তবায়ন করবে সরকার।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে বাণিজ্যিক বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য পৃথক কোনো বিচারিক ফোরাম নেই। কোটি কোটি টাকার বাণিজ্যিক বিরোধ ছোটখাটো দেওয়ানি মামলার সঙ্গে একই সারিতে নিষ্পত্তি করতে যাওয়ায় দ্রুত ও কার্যকর বিচার প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে। এটি বিচারকদের নয়, কাঠামোগত অসংগতি। ফলে মামলার জট বেড়ে যাচ্ছে এবং ব্যবসায়িক সম্পর্ক ও বিনিয়োগ পরিবেশও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত শুধু অর্থ ঋণ আদালতে প্রায় ২৫ হাজারেরও বেশি মামলা অমীমাংসিত রয়েছে।

প্রধান বিচারপতি বলেন, পৃথক বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠা সংক্রান্ত সংস্কারের দাবি বহুবার করা হয়েছে। এটি কারো একক দাবি নয়; দীর্ঘদিন ধরেই বৃহৎ বিনিয়োগকারী থেকে শুরু করে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিভিন্ন সভা-সেমিনারে এই দাবি জানিয়ে আসছেন।

তিনি রুয়ান্ডা, ভারত ও পাকিস্তানের উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, বাণিজ্যিক আদালত গড়ে দক্ষ, স্বচ্ছ ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি করা সম্ভব। বাংলাদেশের জন্য এ অভিজ্ঞতাগুলো গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা বহন করে।

প্রস্তাবিত বাণিজ্যিক আদালতের সাতটি মূল স্তম্ভের কথা উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, স্পষ্ট ও একীভূত এখতিয়ার নির্ধারণ, আর্থিক সীমারেখা ও স্তরভিত্তিক কাঠামো, বাধ্যতামূলক কেস ম্যানেজমেন্ট ও কঠোর সময়সীমা, সমন্বিত মধ্যস্থতা ব্যবস্থা, প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার (ই-ফাইলিং, ডিজিটাল ট্র্যাকিং, হাইব্রিড শুনানি), সবার জন্য ন্যায়সঙ্গত প্রবেশাধিকার এবং জবাবদিহি ও কর্মক্ষমতা পর্যবেক্ষণ।

তিনি জানান, আদালত প্রতিষ্ঠার পর বিচারকদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, মিশ্র আইন ব্যবস্থার সুফল কাজে লাগানো হবে এবং বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে জবাবদিহি নিশ্চিত করা হবে। এটি কেবল নতুন আদালত নয়, বরং অর্থনৈতিক ন্যায়বিচারের জন্য নতুন ভিত্তি।

সেমিনারের দ্বিতীয় সেশন বা মূল পর্বে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমদ। সূচনা বক্তব্য দেন সিলেটের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমান। এছাড়া ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার, ইউএনডিপি আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার এবং হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি জাফর আহমেদ বক্তব্য রাখেন।

সেমিনারে সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রির কর্মকর্তা, আইনজীবী এবং সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ২৩:২০:০৮   ১৫ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আইন আদালত’র আরও খবর


পৃথক বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠা কারো একক দাবি নয় : প্রধান বিচারপতি
গণ-অভ্যুত্থান ঘিরে রাজধানীতে ৭০৭ মামলা, গ্রেপ্তার ৫০৭৯ জন
শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনের মামলা হাইকোর্টে বাতিল
দুদকের পিপি নিয়োগ পেলেন অ্যাডভোকেট সুলতান
সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক ৭ দিনের রিমান্ডে
স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদন্ড
ফরিদপুরে প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণে চাচার মৃত্যুদণ্ড
গণধোলাইয়ের শিকার হয়ে চাঁদাবাজ ভেজাইল্যা সুলতান মাহমুদ কারাগারে
কদমতলীতে মা-মেয়ে হত্যা মামলায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড
ব্যবসায়ী হত্যা: এক পরিবারের ১০ জনসহ ১৩ জনের যাবজ্জীবন

News 2 Narayanganj News Archive

আর্কাইভ