ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী ফয়জুল করিম বলেছেন, পিআর পদ্ধতির নির্বাচনে তো বিএনপির আপত্তি থাকার কথা না। কারণ, তাদের উচ্চপর্যায়ের এক নেতা দাবি করেছেন, নির্বাচনে তারা ৯০ শতাংশ ভোট পাবেন।
জুলাই সনদের আইনি স্বীকৃতি, জাতীয় নির্বাচনে পিআর পদ্ধতিসহ কয়েকটি দাবিতে বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিক্ষোভ-মিছিল করে ইসলামী আন্দোলন। তার আগে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে মিছিল-পূর্বক সমাবেশে একথা বলেন মুফতি ফয়জুল করিম।
আমি মনে করি, ভারত জুলাই চায় না। জুলাইয়ের আইনি ভিত্তি দিতে হবে। আপনারা কি ভারতের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন? অন্তর্বর্তী সরকার শুধু নির্বাচন দেয়ার জন্য ক্ষমতায় আসেনি। নির্বাচনের আগে ৩টি কাজ করতে হবে। সংস্কার, দৃশ্যমান বিচার এবং নির্বাচন। নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতে দিতে হবে। ৮০ শতাংশ জনগণ পিআরের পক্ষে।
তিনি বলেন, পিআরে তো বিএনপির আপত্তি থাকার কথা না। কারণ তাদের উচ্চপর্যায়ের এক নেতা দাবি করেছেন, নির্বাচনে তারা ৯০ শতাংশ ভোট পাবেন। আর তারা যেহেতু সবার সম্পৃক্ততায় নির্বাচন চান সেহেতু পিআর তো তাদেরই চাওয়ার কথা।
পিআর পদ্ধতির নির্বাচনে ফ্যাসিস্ট তৈরি হবে না, কালো টাকা সাদা করার সুযোগ থাকবে না, ভোট ছিনতাইয়ের সুযোগ থাকবে না।
পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে সব ধরনের মানুষের সংসদ হবে বলে মনে করেন মুফতি ফয়জুল করিম।
বাম, ডান হিন্দু মুসলমানের সংসদ হবে। যেকোনো আন্দোলনের জন্য রাস্তায় নামতে হবে না। আন্দোলন হবে সংসদে। যদি কোনো সংশয় থাকে গণভোট দেন। জনগণ চাইলে পিআরে নির্বাচন হবে, না চাইলে হবে না।
প্রাইমারি স্কুলে গান এবং নাচের শিক্ষক নিয়োগ না দেয়ারও দাবি জানান তিনি। বলেন, মুসলমানদের ট্যাক্সের টাকায় এই দেশে নাচ-গানের শিক্ষক নিয়োগ দেয়া যাবে না। কেউ যদি করতে চায় তাহলে সে মসনদে থাকতে পারবে না। যদি টিচার দিতে চান তাহলে কম্পিউটারের টিচার দেন। আর ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ বাধ্যতামূলক করতে হবে।
এছাড়া সমাবেশে অন্য বক্তারা বলেন, সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হবে না। পিআর পদ্ধতিতেই হতে হবে। জুলাই সনদের আইনের ভিত্তিতে নির্বাচন হতে হবে। যারা নির্বাচনে বানচাল করতে চায় তাদের আগামী নির্বাচনে জনগণ তাদের বঙ্গোপসাগরে পাঠাবে।
দাবি আদায় হওয়া পর্যন্ত রাজপথ না ছাড়ার ঘোষণা দেন তারা।
ঐকমত্য কমিশনে আলোচনার মধ্যেই রাজপথে জামায়াতসহ কয়েকটি ইসলামী দল। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ বিভিন্ন দাবি জানিয়েছে দলগুলো। এসব দাবি আদায়েই জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর ও দক্ষিণ গেটসহ কয়েকটি স্থানে আজ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করছে জামায়াতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসসহ সাতটি রাজনৈতিক দল।
জোহরের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে ইসলামী আন্দোলন, আসরের পর দক্ষিণ গেটে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল জামায়াতে ইসলামীর। ভিন্ন ভিন্ন সময়ে একই কর্মসূচি আরও পাঁচ দলের।
এই ইসলামী দলগুলোর অভিন্ন দাবির মধ্যে রয়েছে- জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা, জুলাই-আগস্ট গণহত্যার বিচার দৃশ্যমান করা ও বিশেষ ট্রাইব্যুনালে জাতীয় পার্টি এবং ১৪ দলের বিচার এবং বিচার চলাকালীন তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।
এছাড়া শুক্রবার বিভাগীয় শহরে এবং ২৬ সেপ্টেম্বর সব জেলা ও উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি পালন করবে দলগুলো।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:১৬:২১ ১০ বার পঠিত