![]()
ময়মনসিংহ অঞ্চলে পাটবীজ বিক্রয় বাড়ানোর লক্ষ্যে মাঠপর্যায়ে বীজ সরবরাহ ও ব্যবস্থাপনায় গতিশীলতা আনার জন্য বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) ‘পাটবীজ বিক্রয় ত্বরান্বিতকরণ কর্মশালা-২০২৫’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন কক্ষে এ কর্মশালার আয়োজন করে প্রতিষ্ঠানটির পাটবীজ বিভাগ। পাটচাষী, বীজ ডিলার ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এতে অংশ নেন।
বিএডিসির যুগ্ম সচিব ও বীজ ও উদ্যান বিভাগের সদস্য পরিচালক মো. মজিবর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মো. রুহুল আমিন খান।
কর্মশালায় বীজ বিক্রি, বীজের গুণগত মান নিশ্চিতকরণ, প্যাকেজিং ও সংরক্ষণ সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে স্টেকহোল্ডারদের দিকনির্দেশনা দেন বিএডিসি কর্মকর্তারা। পাটচাষী, ডিলার ও মাঠপর্যায়ে কাজ করা কর্মকর্তাদের সঙ্গে মুক্ত আলোচনায় তাঁরা বীজ সরবরাহে মাঠের বাস্তব সমস্যা শোনেন। প্রান্তিক কৃষকের হাতে যেন সহজে বীজ পৌঁছায় এ লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিশেষ দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে রুহুল আমিন খান বলেন, ‘ভালো বীজ না পেলে কৃষক ভালো ফলন পাবেন না। তাই এবার থেকে গুণগত মানে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। কৃষকের চাহিদা অনুযায়ী বীজের প্যাকেট ছোট করা হচ্ছে। কৃষকের প্রয়োজন যদি দুই কেজি হয়, তবে দুই কেজির প্যাকেটই দেওয়া হবে। কৃষক তখনই বীজ কিনবেন যখন তার প্রয়োজনীয় সার, চাষের উপকরণ, পরামর্শ, ফসল কাটার পর প্রক্রিয়াজাতকরণ সুবিধা ও ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত হবে। তাই এই সামগ্রিক প্রক্রিয়াটিকে শক্তিশালী করতেই বিএডিসি নতুনভাবে কাজ শুরু করেছে।’
বিএডিসির চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘ভুট্টা, গম ও পাট এই তিনটি ফসল নিয়ে আমরা এখন বেশি কাজ করছি। পাট উৎপাদনে পিছিয়ে পড়ার বড় কারণ হলো মানসম্মত বীজের ঘাটতি। এ ঘাটতি দূর করতেই আমরা নতুনভাবে বীজ উৎপাদন, প্যাকেটিং ও বাজারজাতকরণে মনোযোগ বাড়িয়েছি। দেশের বড় বড় পাটশিল্প কারখানা দীর্ঘদিন অচল থাকায় কৃষকের আগ্রহ কমে গিয়েছিল। তবে দেশের ভেতর ও বাইরে পাটপণ্যের বাজার আবারও প্রাণ ফিরছে। হস্তশিল্পেও পাটের ব্যবহার বাড়ছে।’
এ বছর থেকে প্রতি কেজি পাটবীজে ১০০ টাকা করে ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে বিএডিসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘আগে সারনির্ভর কাজ বেশি ছিল। এখন বীজের ওপর সমান গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সে লক্ষ্যে কৃষকদের ভালো বীজ কেনার দিকে আগ্রহী করতে প্রতি কেজি বীজে ১০০ টাকা ছাড় দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভালো বীজ পেলেই কৃষক ভালো ফসল ঘরে তুলতে পারবেন। মাথায় রাখতে হবে, পাটকে রক্ষা করতে হবে, দেশীয় পণ্য ব্যবহার করতে হবে এবং দেশকে রক্ষা করতে হবে।’
বিএডিসির যুগ্মসচিব ও বীজ ও উদ্যান বিভাগের সদস্য পরিচালক ম. মজিবর রহমান বলেন, ‘ময়মনসিংহের মানুষের ঐতিহ্য তাদের গীতিকাগুলো দেখলেই বোঝা যায়। তাদের এই ভালত্বকে তারা আজও লালন করছেন এটি দেখলেই ভালো লাগে। এই ভালত্বকে আরও ভালো করার জন্য আমরা ভালো বীজ দেওয়ার চেষ্টা করছি। ভালো বীজেই ভালো ফসল। দেশের বীজ, দেশীয় পণ্য ব্যবহার করার জন্য আমি সবাইকে অনুরোধ জানাচ্ছি। কৃষকের প্রয়োজন অনুযায়ী বীজের প্যাকেট আমরা তৈরী করছি। কৃষকের গ্রহণযোগ্যতা অনুযায়ী বীজ দেওয়ার আমরা চেষ্টা করছি।’
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৪৩:১৫ ৬ বার পঠিত