
ঘর ভাঙছে৷ সেই ভাঙনের থাবা এসে পরতে পারে কলকাতার ছোট লালবাড়ির অন্দরেও৷ শাসক তৃণমূলের বেশ কয়েকজন কাউন্সিলরই নাকি পা বাড়িয়ে রয়েছেন পদ্মফুলের দিকে৷ তালিকা প্রথম দিকে নাম রয়েছে প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের৷ তাঁর পথই অনুসরণ করতে পারেন বেহালার বেশ কয়েকজন তৃণমূল পুরপ্রতিনিধি৷ দলত্যাগ রুখতে মরিয়া জোড়াফুল নেতৃত্ব৷ শুক্রবার বেহালার ১৯ দলীয় কাউন্সিলরকে ডাকা হয়েছে বৈঠকে৷ তাঁদের কাজের বিষয় নিয়ে খোঁজখবর নেবেন দলনেত্রী স্বয়ং৷
লোকসভা ভোটে বিপর্যয়৷ রাজ্যের প্রায় ১৩০টির মতো বিধানসভা আসনে এগিয়ে বিজেপি৷ শহর কলকাতাতেও নিস্তার নেই৷ সেখানেও গেরুয়া ঝড়ের প্রবণতা৷ কলকাতা পুরনিগমের ১৪৪টির মধ্যে প্রায় ৫০ আসনে পিছিয়ে বর্তমান শাসক শিবির৷ খোদ ভাবানীপুর বিধানসভা মুখ্যমন্ত্রীর কেন্দ্র বলেই পরিচিত৷ এই বিধানসভার আটটির মধ্যে ছয়টিতেই এগিয়ে বিজেপি৷
ফলে পিছিয়ে থাকা ওয়ার্ডের বর্তমান তৃণমূল কাউন্সিলরদের অনেকেই দলত্যাগ করতে পারেন বলে তৃণমূল থিঙ্ক ট্যাঙ্ক মনে করছে৷ শোভন চট্টোপাধ্যায় তৃণমূল নেত্রীর অতত্যন্ত ঘনিষ্ট বলেই বিবেচিত৷ কিন্তু তাঁর ব্যক্তিগত সমস্যার কারণ দেখিয়ে খোদ মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে মেয়র পদ থেকে সরিয়ে দেন৷ বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বেহালা পূর্বের বিধায়ক শোভ চট্টোপাধ্যায় রায়চকে ঘুরতে যান৷ সেখানেও দলীয় কর্মীদের হাতে হেনস্থা হতে হয় তাদের৷ অসন্তুষ্ট তিনি৷
এই অবস্থায়, প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়েছে গেরুয়া নেতৃত্ব৷ দলের ওপর ক্ষোভের কারণে তিনি আপাতত রাজনৈতিক ময়দানে নিষ্ক্রিয়৷ তবে, ভোট বছর গড়ালেও কলকাতা পুরনিগমের ভোট৷ এই অবস্থায় তিনি দল বদল করেলে তার প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছে শাসক শিবির৷
বেহালায় কলকাতা পুরনিগমের অধীনস্থ ১৯টি ওয়ার্ডে রয়েছে তৃণমূল কাউন্সিলর৷ তাঁরা অধিকাংশই শোভনবাবুর অনুগামী৷ স্বভাবিকভাবে, প্রাক্তন মেয়র তৃণমূল ছাড়লে তাদেরও অনেকে একই পথের পথিক হতে পারেন৷ বিজেপির মরিয়া উদ্যোগে ভোটের আগেও ঘটতে পারে এই দল বদল৷ এমনই আশঙ্কা জোড়াফিল নেতাদের৷
যদিও, বর্তমানে ছোট লালবাড়িতে তৃণমূলের যে আসন সংখ্যা সেখানে বেহাল ১৯ কাউন্সির দল বদল করলেও মাথা ব্যাথ্যা হওয়ার কথা নয় শাসক শিবিরের৷ কিন্তু, নিশন্দেহে অস্বস্তি বাড়বে৷ কেন ওই কাউন্সিলরদের ধরে রাখা গেল না তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠবে৷ মনস্তাত্ত্বিক দিক থেকেও সুবিধা পাবে বিজেপি৷
তাই বেহালার দলীয় কাউন্সিলরদের ভাব-গতি বুঝতে এদিন বিধানসভায় তাদের ডেকে পাঠানো হয়েছে৷ জানা গিয়েছে তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন তৃণমূল নেত্রী৷ থাকতে পারেন প্রাক্তন মেয়র তথা ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর শোভন চট্টোপাধ্যায়ও৷ রাফ এন্ড টাফ, নাকি, বড় দিদির মতো আচরণ৷ বৈঠকে দলনেত্রীর বার্তার দিকে তাকিয়ে কাউন্সিলররা৷
বাংলাদেশ সময়: ২০:১৪:২১ ১০১ বার পঠিত