ফুল-ফলের আজব রাজ্য, মুখে হাসি টিপু সুলতানের

প্রথম পাতা » খুলনা » ফুল-ফলের আজব রাজ্য, মুখে হাসি টিপু সুলতানের
রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২০



---

ফুলের রাজধানীখ্যাত যশোরের গদখালীর পর ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রিলোচনপুর গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু হয়েছে জারবেরা ফুলের। শুধু জারবেরাই নয়, পাশাপাশি চন্দ্রমল্লিকা, গোলাপ, ভুট্টা ফুল, লিলিয়াম ও স্ট্রবেরি ফল চাষে নজর কেড়েছে টিপু সুলতানের বাগান।

জানা যায়, নিজের প্রায় ১৭ বিঘা জমিতে গড়ে তুলেছেন এ ফুলের বাগান। এই অঞ্চলের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানেও পাঠানো হচ্ছে এই ফুল। ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস, ২১ ফেব্রুয়ারি ও পহেলা ফাল্গুন এই তিন দিবস সামনে রেখে প্রায় অর্ধকোটি টাকার ফুল বিক্রি করবেন বলে তিনি আশাবাদী।

শুধু ফুল বিক্রিই নয়, দূর-দূরান্ত থেকে অনেকে আসেন এই বাগান দেখতে। প্রতিদিন বিকালে দর্শনার্থীরা ভিড় জমান সুলতানের বাগানে। তারা অতিআনন্দে ছবি তুলতে আর ফুল কেনেন।

জানা গেছে, ২০১৬ সালের জুন মাসে প্রায় তিন বিঘা জমিতে প্রথম জারবেরা ফুলের বীজ রোপণ করেন ফুলচাষি টিপু সুলতান। বীজ আনা হয় পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে।

আর ফুল ক্ষেতের ওপর ছাউনি দিতে একই দেশ থেকে আমদানি করা হয় বিশেষ ধরনের পলিথিন, যা তৈরি হয় ইউরোপের দেশগুলোতে।

রোপণের তিন মাস পর গাছে ফুল আসতে শুরু করে। একটি গাছ একাধারে দুই থেকে তিন বছর ফুল দেয়।

চলতি বছর এই উপজেলার ৩৫০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ফুলের চাষ করা হয়েছে। যে কারণে এ এলাকাটি মানুষের কাছে ফুল নগরী বলে পরিচিত। বিদেশি জাতের এই জারবেরা ফুল লাল, সাদা, হলুদ ও গোলাপিসহ আটটি বাহারি রঙের হয়ে থাকে। তবে এই ফুলের কোনো গন্ধ নেই।

বিদেশি জাতের এই ফুলটি ক্ষেত থেকে তোলার পরও ১০ থেকে ১৫ দিন তাজা থাকে। যে কারণে বাজারে এই ফুলের চাহিদা বেশি।

ফুলচাষি টিপু সুলতান বলেন, ২০১৬ সালের জুন মাসে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে বীজ সংগ্রহ করে প্রথম ৯৬ শতক জমিতে রোপণ করি। এর পর তিন মাস পর গাছে ফুল আসতে শুরু করে। বীজ রোপণ, ক্ষেতের চারপাশে বাঁশের বেড়া স্থাপন, ওপরের ছাউনি, সার, ওষুধ ও শ্রমিক খরচসহ এ পর্যন্ত ৩৩ লাখ টাকা খরচ হয়েছে।

এই ফুল পরিচর্যা করার জন্য চারজন শ্রমিক নিয়মিত কাজ করেন। বর্তমানে ১৭ বিঘা জমিতে বিভিন্ন ফুল ও ফলের চাষ করছেন।

তিনি আরও জানান, গত ছয় মাসে ২০ লক্ষাধিক টাকার ফুল বিক্রি করা হয়েছে। বর্তমানে প্রতিদিন দেড় হাজার থেকে ২ হাজার ফুল সংগ্রহ করা যাচ্ছে বাগান থেকে। একটি ফুল ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। চাহিদা অনুযায়ী প্রতিদিন এই ফুল ক্ষেত থেকে সংগ্রহ করে ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠিয়ে দেয়া হয়।

ফুলচাষি টিপু সুলতান আক্ষেপ করে বলেন, শতচেষ্টা করেও তিনি ফুল বাগানে বিদ্যুতের সংযোগ নিতে পারেননি। যে কারণে তার ফুল চাষ ব্যাহত হচ্ছে। ফুলগাছে সেচ দিতেও তাকে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

কৃষিবিদ ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জারবেরা ফুল চাষের জন্য এ অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া বেশ উপযোগী। বছরের যে কোনো সময় চাষ করা যায়। শীত মৌসুমে উৎপাদন বেশি হয়।

এ ছাড়া দেশের বাজারে এই ফুলে দাম ও চাহিদা বেশি। তবে এই ফুল লাভজনক হলেও খরচ বেশি হওয়ায় চাষ করতে পারছেন না সাধারণ কৃষকরা।

কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল করিম জানান, জার্মান পরিবেশবিদ ডা. ট্রগোট জারবের নামানুসারে ফুলটির নামকরণ করা হয়।

জারবেরা ফুল চাষের জন্য এ অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া বেশ উপযোগী। টিপু সুলতান একজন সফল ফুলচাষি। তিনি বিভিন্ন ফুল ও ফলের চাষ করেন। তাকে বিভিন্ন সময়ে উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে সহায়তা দেয়া হয়। এবার কালীগঞ্জে ৩৫০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ফুলের চাষ করা হয়ে

বাংলাদেশ সময়: ১৭:৩০:৪৮   ১৯১ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

খুলনা’র আরও খবর


সাতক্ষীরায় শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা: আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা
মাগুরায় হাজার বোতল ফেনসিডিলসহ গ্রেপ্তার ৩
সাতক্ষীরায় সীমান্তে ১৪৮টি আংটিসহ একজন আটক
খুলনায় হত‌্যা মামলায় একজনের ফাঁসির আদেশ
খুলনা-মংলা ব্রডগেজ লাইনের ৭৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন
যশোর মণিরামপুরে যুবককে কুপিয়ে হত্যা
নড়াইলে সাংসদের স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা
ভারতে পাচারকালে ২২ বাংলাদেশি উদ্ধার, গ্রেফতার ১
সাড়ে ৩ কোটি টাকা আত্মসাত করায় কর কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত
সরকারি সম্পত্তি সুষ্ঠু নজরদারিতে ভূমি ডাটা ব্যাংক ব্যবহার করা হবে- ভূমিমন্ত্রী

আর্কাইভ