নাসিক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, সাধারন কোন মানুষ মাদক ব্যবসা করতে পারে না। প্রশাসন এবং জননেতাদের সহযোগিতায় সমাজে মাদক ব্যবসা পরিচালিত হয়। কিছু মহিলাও সামান্য অর্থের লোভে সন্তানদের মূখে বিষ তুলে দিচ্ছেন। আপনারা সবাই সোচ্চার হোন, প্রতিবাদ করুন তাহলে মাদক ব্যবসায়ীরা ঠাই পাবেনা।
এলাকাবাসী যদি চান যে এলাকায় মাদক চলবেনা, তাহলে চলবে না। কিন্তু ভয়ে প্রতিবাদ করেন না। যারা মাদক ব্যবসা করে তারা সমাজের প্রতিষ্ঠিত লোক। তারা আমাদের মতো কারো ছত্রছায়ায়, কেউ কাউন্সিলরের ছত্রছায়ায়, কেউ এমপির ছত্রছায়ায় নয় কারো না কারোর ছত্রছায়ায় মাদক ব্যবসা করছে।
কাউন্সিলররা জানে তার ওয়ার্ডে কে মাদক ব্যবসা করে। কাউন্সিলর আমার কাছে যত রকম সহযোগিতা কামনা করে আমি তাকে দিতে প্রস্তুত। আমি নারায়ণগঞ্জ শহরকে নেতৃত্ব দিয়েই চালাই, বাঘে মহিষের সাথে সম্পর্ক করে এখানে টিকে আছি, আল্লাহ ছাড়া কাউকে আমি ভয় পাইনা।
বুধবার (১৮ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টায় নাসিক ৩নং ওয়ার্ডের মাদানীনগর চৌরাস্তা এলাকায় ১৬ কোটি ৯৩ লাখ ৭৩ হাজার ৬’শ ৯ টাকা ব্যয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মাদানী নগর ঢাল থেকে নিমাইকাশারী ও লন্ডন মার্কেট হয়ে সানারপাড় লিথি গার্মেন্টস পর্যন্ত ৭টি শাখা রাস্তাসহ প্রায় সাড়ে ৫ কিলোমিটার আরসিসি রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় এলাকাবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি এসব কথা বলেছেন।
জাইকা ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ আর্থিক সহযোগিতায় এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শুরু করেছে মেসার্স রত্না এন্টারপ্রাইজের সত্ত্বাধিকারী মো: জাকির হোসেন।
এসময় মেয়র আইভী আরো বলেন, আমি ভয় পাওয়ার মতো মানুষ না। আমি আপনাদের সামনে নমনীয় হই এই কারনে যে, নবী করীম (সা:) শিক্ষা দিয়েছে নমনীয়তা। আর সে নমনীয়তার কারনেই আমি মানব সেবা করি। আল্লাহর ইচ্ছায় আপনাদের কারনেই আমি এ চেয়ার পেয়েছি। তাই পাশ করার পরতো আর আপনাদের সাথে রাগ করে থাকতে পারিনা বলেই আজ এখানে সাড়ে ১৬ কোটি টাকার কাজ উদ্বোধন হয়েছে। এ ওয়ার্ডে ৭১’র পরে যদি কোন কাজ হয়ে থাকে, তা করেছে আইভী।
তিনি বলেন, আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন আমি যেসব কাজ এখনো শেষ করতে পারিনাই সেগুলো যেন সময় মতো করতে পারি। কারন ২৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে চেষ্টা করেছি সমভাবে কাজ করার জন্য। হয়তো কোথাও একটু কম এবং কোথাও একটু বেশি কাজ হয়েছে আর এটা মূলত নির্ভর করেছে কাউন্সিলর এবং আমার প্রকৌশলীদের উপর।
আমার প্রকৌশলীদের অনেক সময় উদাসিনতা থাকে এবং অর্থেরও কিছু সংকট ছিলো। বিগত সময়ে যখন নতুন সিটি কর্পোরেশন হলো, একটা নতুন জায়গায় কাজ করাটা একটু কঠিন ছিলো। সিদ্ধিরগঞ্জের ৯টি ও বন্দরের ৯টি ওয়ার্ডে বিগত ২০/২৫ বছরে কোন কাজ হয় নাই। যা আমার জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জ ছিলো। বিগত ৫ বছরে আমাকে এ দু’অঞ্চলেই সবচেয়ে বেশি কাজ করতে হয়েছে। বর্তমান মেয়াদে কাজ করতে পারলে হয়তো ছোট খাটো কাজ ছাড়া বাকি থাকবে না।
এছাড়া খেলার মাঠ, প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কমিউনিটি ক্লিনিকের দাবীর প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় সিটি কর্পোরেশনের মালিকানাধীন জায়গার খুব অভাব তাই এগুলো করা সম্ভব হচ্ছেনা। যদি কাউন্সিলর জায়গা দিতে পারে তাহলে সিটি কর্পোরেশন এসব বাস্তবায়নে এগিয়ে আসবে।
জলাবদ্ধতার সমস্যা সমাধানের বিষয়ে মেয়র বলেন, আপনারা জানেন গত রবিবার মন্ত্রী ও এমপিরা ডিএনডি উন্নয়ণ প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন। হয়তো দ্রুত এ কাজ শুরু হবে। সরকার ডিএনডি প্রকল্পের জন্য সাড়ে ৫’শ কোটি টাকা বরাদ্ধ দিয়েছে। ভবিষ্যতে এ প্রকল্পে আরো বরাদ্ধ আসবে। আমাদের দায়িত্ব হলো ড্রেন ও সুয়ারেজ ব্যবস্থা তৈরি করে সেগুলো ডিএনডি খালের সাথে সংযুক্ত করে দেয়া। তাহলেই স্থায়ী ভাবে জলাবদ্ধতার অবসান হবে। সবাই নিজ দায়িত্বে ড্রেনগুলো পরিস্কার রাখবেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, নাসিক ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক শাহজালাল বাদল, ১,২,৩নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর মাকসুদা মোজাফ্ফর, ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর মনোয়ারা বেগম, সিটি কর্পোরেশনের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সুমন চন্দ্র দেবনাথ, সহকারী প্রকৌশলী জীবন কৃষœ সরকার, সিজিপি প্রকল্প পরামর্শক আনোয়ার হোসেন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও যুবলীগ নেতা আবু সুফিয়ান ও শহর যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি কামরুল হুদা বাবুসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ প্রমূখ।
বাংলাদেশ সময়: ২১:০৭:৪৭ ৫৩৭ বার পঠিত