মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এখন যেভাবে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, স্বাধীনতার ৪৬ বছরে এই গতিতে এগুতে পারলে বাংলাদেশ আজ উন্নত বিশ্বের কাতারে থাকত। এই উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখে ধাপে ধাপে এগিয়ে যাওয়ার তাগিদ দেন তিনি।
আজ শুক্রবার দুপুরে যশোরের জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে ‘ক্যাটল ব্রিডিং পলিসি ২০১৭’ সংশোধন ও যুগপযোগীকরণ শীর্ষক সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, আমরা সবাই ধর্মপ্রাণ। তারপরও রমজানের আগেই ছোলা-পিঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। এটা কেন হয়; আমাদের উপলব্ধি করতে হবে। আমাদের মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে। এ সময় মন্ত্রী বাজারের অবৈধ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেন।
সেমিনারে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আরও বলেন, দেশ, মাটি ও মানুষের বাইরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কোনো চিন্তা ছিল না। স্বাধীনতার পর তিনি গবাদিপশুর জাত উন্নয়নের কাজ শুরু করেছিলেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও তার সরকার সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করছেন। বর্তমানে আমরা মুরগি এবং মাংসে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করলেও দুধে অর্জন করতে পারিনি। তবে আশার কথা হলো গবাদিপশুর ওজন বাড়াতে পেরেছি বলে দুধের উৎপাদনও বাড়ছে।
এ সময় মন্ত্রী বিজ্ঞানী-গবেষকদের উদ্দেশে বলেন, ১০-২০ বছরের পরিকল্পনা মাথায় রেখে টেকনোলজির উদ্ভাবন করতে হতে- যাতে মানুষ তার সুফল ভোগ করতে পারে।
তবে তিনি খামারীদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, হুজুগে পড়ে অতি উৎসাহ বা আগ্রহ দেখাতে যাবেন না। টেকসই ভাবনাকে মাথায় রেখেই চিন্তা-ভাবনা করতে হবে। এক্ষেত্রে বিজ্ঞানের সুবিধার পাশাপাশি তৃণমূল পর্যায়ের বাস্তব অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, গবাদিপশুর জাত উন্নয়ন এবং প্রজননের জন্য একটি নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চলছে। পাশাপাশি উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিশ্ব ব্যাংকের সহায়তায় নতুন প্রকল্প নেয়া হচ্ছে। খামারীদের জন্য এটা মঙ্গলজনক হবে।
জেলা কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের আয়োজনে সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রইছউল আলম মন্ডল, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আইনুল হক ও মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. গোলজার হোসেন। জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়ালের সভাপতিত্বে সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কৃত্রিম প্রজনন ও ঘাস উৎপাদন বিভাগের উপপরিচালক ড. মীজানূর রহমান ও মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণি প্রজনন ও কৌলিবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. একে ফজলুল হক ভূইঁয়া। সেমিনারে মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন যবিপ্রবি’র সহকারী অধ্যাপক এস খালেদুর রহমান ও ঝিনাইদহ ভেটেরিনারি কলেজের অধ্যক্ষ ডা. আব্দুল হাই। সেমিনারে বক্তব্য দেন খামারি শহীদুল ইসলাম ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন খুলনা বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের উপপরিচালক কল্যাণ কুমার ফৌজদার।
সেমিনারে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ঝিনাইদহ সরকারি ভেটেরিনারি কলেজের শিক্ষক, সরকারি কর্মকর্তা, কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের মাঠকর্মী ও খামারীরা অংশ নেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১:১৭:১৭ ৩৬৪ বার পঠিত