খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটে কারচুপি এনে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা করার প্রস্তুতি নিয়েছেন বিএনপির প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু। মঞ্জুর পাশাপাশি মামলা করবেন বিএনপির পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থীরাও।
ঢাকাটাইমসকে মঞ্জু বলেন, ‘আমি এবং আমাদের দলের কাউন্সিলর প্রার্থীরা গেজেট প্রকাশের পর ট্রাইবুনালে মামলা করব। এ জন্য গেজেটের অপেক্ষায় আছি।’
গত ১৫ মে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে যে ২৮৯টি কেন্দ্রে ভোট হয়েছে তার মধ্যে ১০০টিতে পুনর্নির্বাচনের দাবি করেছেন মঞ্জু। তার দাবি, এসব কেন্দ্রে ব্যাপকভাবে জাল ভোট দেয়া হয়েছে।
তবে কোট ১০০টি কেন্দ্রে প্রার্থী পুনর্নির্বাচন দাবি করেছেন, সেটি এখনও প্রকাশ করেননি বিএনপির প্রার্থী।
১৫ মে রাতেই ভোটের আওয়ামী লীগ নেতা তালুকদার আবদুল খালেক প্রায় ৬৮ হাজার ভোটে হারিয়েছেন মঞ্জুকে। ওই রাতেই তাকে বেসরকারিভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এখনও এই ফলাফলের প্রজ্ঞাপন প্রকাশ হয়নি।
মেয়রের পাশাপাশি কাউন্সিলর নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরাই বেশি জিতেছেন। ৩১ জন কাউন্সিলরের মধ্যে আওয়ামী লীগের ১২ জন, বিএনপির নয় জন, স্বতন্ত্র পাঁচ জন, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চার জন এবং বিএনপির বিদ্রোহী একজন জিতেছেন।
বড় ব্যবধানে পরাজয়ের পর বিএনপির প্রার্থী মঞ্জুর দাবি, তাকে ভোট ডাকাতি করে হারানো হয়েছে।
ভোটের ফলাফলের বিরুদ্ধে পরাজিত প্রার্থীদের মামলা করার অধিকার আছে। তবে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলার ফলাফল সুখকর নয়। নানা সময় দেখা গেছে, ট্রাইব্যুনালে রায় হলেও আপিল করেই পাঁচ বছরের মেয়াদ পার করেছেন বিজয়ী প্রার্থীরা।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে পিরোজপুরের একটি আসন থেকে নির্বাচিত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সংসদ সদস্য পদ খারিজ করেছিল ট্রাইব্যুনাল। কিন্তু ভোটে কারচুপির বিষয়টি প্রমাণ হলেও তিনি আপিল করে মেয়াদ শেষ করেন।
গত সংসদে আওয়ামী লীগ নেতা মহীউদ্দীন খান আলমগীর এবং জাতীয় পার্টির রত্না আমির হাওলাদারের সংসদ সদস্যপদও খারিজ হয়েছিল ট্রাইব্যুনালের রায়ে। কিন্তু এই মামলাও আপিল মীমাংসা করে শেষ করা যায়নি সংসদের মেয়াদকালে।
একইভাবে উপজেলা, পৌরসভা এবং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও ভোটের কারচুপির অভিযোগের মীমাংসা হয় না কখনও।
এর মধ্যে নবম সংসদে টাঙ্গাইল এবং ভোলার একটি করে আসনে বিজয়ী প্রার্থীর সংসদ সদস্যপদ অবৈধ ঘোষণা হয়। আর টাঙ্গাইলের ওই আসনে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি নেতাকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয় আর ভোলার ওই আসনে হয় উপনির্বাচন।
নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা করার ফল খুব একটা সুখবর হয়, তারপরেও মামলা করে কী লাভ-এমন প্রশ্নে মঞ্জু বলেন, লাভ লোকসান বড় কথা নয়, তিনি আইনের পথ ধরেই শেষ পর্যন্ত যেতে চান।
বাংলাদেশ সময়: ১৪:১৩:৩৬ ৩৪৪ বার পঠিত