তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের মামলায় রিমান্ডে থাকা দৃক গ্যালারির প্রতিষ্ঠাতা খ্যাতিমান আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে চিকিৎসা দিতে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি আগামী সোমবার পর্যন্ত মুলতবি করেছেন আপিল বিভাগ।
বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আর শহিদুলের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার সারা হোসেন।
শহিদুলের পক্ষে সারা হোসেন আদালতকে বলেন, শহিদুল আলমের স্বাস্থ্যের বিষয়ে হাইকোর্টে প্রতিবেদন এসেছে।
এ সময় আদালত বলেন, ‘আপনারা অপেক্ষা করেন। আগামী সোমবার এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।’
গত মঙ্গলবার আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে দ্রুত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। সেইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে শহিদুল আলমের শারীরিক অবস্থার প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন আদালত।
এদিকে সকালে হাইকোর্ট বিভাগে শহিদুল আলমের স্বাস্থ্য পরীক্ষার বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। দুপুর ২টায় বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেনের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হবে।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের করা আন্দোলনের মধ্যে ‘উসকানিমূলক মিথ্যা’ বক্তব্য প্রচারের অভিযোগে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় গ্রেপ্তার শহিদুল আলম সাত দিনের রিমান্ডে আছেন।
তাকে রিমান্ডে পাঠানোর বৈধতার বিষয়ে এবং চিকিৎসার জন্য তাকে হাসপাতালে পাঠানোর নির্দেশনা চেয়ে তার স্ত্রী রেহনুমা আহমেদ মঙ্গলবার একটি রিট করেন। এতে স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ডিআইজি (ডিবি) ও রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বিবাদী করা হয়।
দৃক গ্যালারির প্রতিষ্ঠাতা শহিদুল আলম নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্র বিক্ষোভ চলাকালীন নিয়ে কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আলজাজিরাকে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন।
এতে নিরাপদ সড়কের দাবিতে সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলনের পেছনে সরকারের ‘দুর্নীতি’, ‘অপশাসন’ দায়ী বলে অভিযোগ করেন।
শহিদুল বর্তমান সরকারকে ‘অনির্বাচিত’ দাবি করে এও বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তারা জিতবে না। এ জন্যই সরকার ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে শক্তি প্রয়োগ করছে।
তথ্য-প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় করা এ মামলায় ‘কল্পনাপ্রসূত তথ্যের’ মাধ্যমে জনসাধারণের বিভিন্ন শ্রেণির মধ্যে ‘মিথ্যা প্রচার’ চালানো, উসকানিমূলক তথ্য উপস্থাপন, সরকারকে ‘প্রশ্নবিদ্ধ ও অকার্যকর’ হিসেবে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে উপস্থাপন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ‘অবনতি ঘটিয়ে’ জনমনে ‘ভীতি ও সন্ত্রাস ছড়িয়ে’দেওয়ার ষড়যন্ত্র এবং তা বাস্তবায়নে ইলেকট্রনিক বিন্যাসে ‘অপপ্রচারের’ অভিযোগ আনা হয় এই আলোকচিত্রীর বিরুদ্ধে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:১৮:৩১ ৩৩৮ বার পঠিত