আইনগত সহায়তা পাওয়া করুণা নয় : আইনমন্ত্রী

প্রথম পাতা » আইন আদালত » আইনগত সহায়তা পাওয়া করুণা নয় : আইনমন্ত্রী
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪



আইনগত সহায়তা পাওয়া করুণা নয় : আইনমন্ত্রী

সমাজের দরিদ্র-অসহায় নাগরিকদের আইনগত সহায়তা পাওয়ার সঙ্গে দেশের আইনের শাসন, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার ও সামাজিক সমতা জড়িত উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, আর্থিকভাবে অসচ্ছল যেকোনো নাগরিক আইনগত সহায়তা পাবেন, এটাই স্বাভাবিক। আইনগত সহায়তা পাওয়া তার প্রতি করুণা নয়, বরং এটা তার অধিকার।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের মূল সংবিধানেই গণতন্ত্র, মানবাধিকার, সামাজিক সুবিচার ও সমতার বিধানাবলিসহ বিচার প্রক্রিয়ায় ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সব নাগরিকের প্রবেশাধিকারের বিধান সন্নিবেশ করে গেছেন।

রোববার (২৮ এপ্রিল) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে দুজনকে সেরা লিগ্যাল এইড অফিসার ও প্যানেল আইনজীবী হিসেবে পুরস্কৃত করা হয়।

আনিসুল হক দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর দীর্ঘ একুশটি বছর আর্থিকভাবে অসচ্ছল মানুষগুলোর আইনগত সহায়তা পাওয়ার অধিকারের প্রতি কেউ দৃষ্টি দেয়নি। ধন্যবাদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। তিনি প্রথমবার সরকার গঠন করেই ২০০০ সালে ‘আইনগত সহায়তা প্রদান আইন’ প্রণয়ন করেন। ফলে বাংলাদেশে প্রথম রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় অসচ্ছল ও সহায়-সম্বলহীন নাগরিকদের আইনগত অধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত হয়।

তিনি বলেন, আইনি সহায়তা কার্যক্রমকে আরও সফল ও বেগবান করে তুলতে হলে এটিকে অবশ্যই জনগণের দোরগোড়ায় অর্থাৎ যারা আইনি সহায়তা পাওয়ার যোগ্য তাদের কাছে নিয়ে যেতে হবে। আর তা করতে হলে উপজেলা ও ইউনিয়ন লিগ্যাল এইড কমিটিকে অধিকতর কার্যকর করতে হবে। কারাগারগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে হবে। আইন সহায়তা প্রদানকালে পুথিগত আইন প্রয়োগের দৃষ্টির পাশাপাশি সামাজিক ও মানবিক দৃষ্টিকোণকেও স্থান দেওয়া উচিত। পাশাপাশি আইনগত সহায়তার বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধিসহ স্বপ্রণোদিত, দ্রুত ও কার্যকর আইনিসেবা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে অংশীদারিত্ব বৃদ্ধির বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে প্রত্যেক লিগ্যাল এইড কমিটি, লিগ্যাল এইড অফিসার ও প্যানেল আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।

আইনমন্ত্রী বলেন, মামলার সঠিক ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি ‘বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতি’ বা এডিআর মামলাজট নিরসনের সহায়ক একটি পন্থা হিসেবে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। জার্মান সরকারের উন্নয়ন সংস্থা-জিআইজেডের এক সমীক্ষায় দেখা যায়, বাংলাদেশের ৮৭ ভাগ মানুষ স্থানীয় পর্যায়ে বিরোধ নিষ্পত্তিতে আগ্রহী এবং শতকরা ৩০ ভাগ নাগরিকের প্রাথমিক দ্বন্দ্বের কারণ প্রতিবেশীর সঙ্গে ছোটখাটো বিরোধ বা মারামারি, যা স্থানীয়ভাবেই নিষ্পত্তিযোগ্য। এটি খুবই আশার কথা হলেও আমাদের স্থানীয় পর্যায়ে বিরোধ নিষ্পত্তির হার অতি নগণ্য। এর মূল কারণ সামাজিক পরিবর্তন, সামাজিক উন্নয়ন, মানুষের ব্যস্ততা এবং মধ্যস্থতাকারীর প্রতি আস্থার অভাব।

আনিসুল হক বলেন, অবস্থা বিবেচনায় আমরা ২০১৫ সালে ‘আইনি পরামর্শ ও বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি’ বিধিমালা প্রণয়ন করেছি এবং এতে লিগ্যাল এইড অফিসারদের মধ্যস্থতা করার পর্যাপ্ত ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। সুখবর হলো ওই ক্ষমতা প্রয়োগ করে লিগ্যাল এইড অফিসাররা জুলাই ২০১৫ থেকে মার্চ ২০২৪ পর্যন্ত ১ লাখ ১০ হাজার ৮৩৬টি বিরোধ নিষ্পত্তি করেছেন। তারা যেহেতু বিচারক এবং আইনি বিধিবিধানের অধীনে মধ্যস্থতা করে থাকেন, তাই লিগ্যাল এইড অফিসগুলো এখন বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তিতে মানুষের আস্থার প্রতীকে পরিণত হয়েছে। এ আস্থা আমাদের ধরে রাখতে হবে। এ আস্থা আমাদের আরও মজবুত করতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬:০৪:৫১   ৪৩ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আইন আদালত’র আরও খবর


দেশে কোনো রাজনৈতিক মামলা হয় না: অ্যাটর্নি জেনারেল
আইএলওর সঙ্গে সন্তোষজনক আলোচনা চলছে: আইনমন্ত্রী
আইনজীবীদের নৈতিক মানদণ্ড রক্ষায় গুরুত্ব দিতে হবে : প্রধান বিচারপতি
মিল্টন সমাদ্দার ৩ দিনের রিমান্ডে
আইনগত সহায়তা পাওয়া করুণা নয় : আইনমন্ত্রী
শপথ নিলেন আপিল বিভাগের ৩ বিচারপতি
দক্ষ বিচার বিভাগ গঠনে বিশ্বমানের জুডিসিয়াল একাডেমি প্রয়োজন - আইনমন্ত্রী
বরকত-রুবেলসহ ৪৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ
হাইকোর্টে আগাম জামিন পেলেন নাহিদ সুলতানা যুথি
তানভীর-জেসমিনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

News 2 Narayanganj News Archive

আর্কাইভ