সোনারগাঁয়ে চলছে ৫০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী পাগলা গাছের মেলা

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » সোনারগাঁয়ে চলছে ৫০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী পাগলা গাছের মেলা
শনিবার, ১৭ মে ২০২৫



সোনারগাঁয়ে চলছে ৫০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী পাগলা গাছের মেলা

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের ৫০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী পাগলা গাছের মেলা শুরু হয়েছে। জেলার বৈদ্যোরবাজার ইউনিয়নের হামছাদী গ্রামে বৃস্পতিবার (১৫ মে) থেকে শুরু হয়ে শনিবার (১৭মে) পর্যন্ত এ মেলা চলছে।

একটি গাছ বা খুঁটিকে কেন্দ্র করে তিন দিনব্যাপী ব্যতিক্রমধর্মী এ মেলা উদযাপন হয় বলে জানান স্থানীয়রা।

প্রতি বছর হিন্দুধর্মী পঞ্জিকা অনুযায়ী ৩১ বৈশাখ থেকে শুরু করে ২ জ্যৈষ্ঠ পর্যন্ত এ মেলার আয়োজন করা হয়। যা পাগলা গাছের মেলা হিসেবে স্থানীয়দের কাছে পরিচিত। মূলত পহেলা জ্যৈষ্ঠ দুপুর থেকে হামছাদী গ্রামের বটতলায় মেলার পসরা সাজিয়ে বসেন দোকানিরা। মেলার আনুষ্ঠানিকতা পূজা অর্চনার মধ্য দিয়ে শুরু হয়।

পুরোহিত তপন জানান, প্রায় ৫০০ বছর আগে হামছাদী গ্রামের ফনি সেন ও সুরেন্দ্র সেন নামের দুই ভাই ঘর তৈরির জন্য বার্মা থেকে ২০টি খুঁটি কিনে আনেন। বাংলা মাসের ৩১ বৈশাখ রাতে তারা স্বপ্নে দেখেন তাদের কেনা খুঁটি থেকে ২টি খুঁটি নিজেদেরকে দেবতা হিসেবে পরিচয় দিচ্ছে। খুঁটি দুটি তাদের উদ্দেশ্যে বলছে ‘আমাকে ঘরের খুঁটির কাজে লাগাবে না। আমি তোমাদের দেবতা। আমাদের উপাসনা করো। এতে তোমাদের মঙ্গল হবে। পাপ থেকে মুক্তি পাবে। রোগ নিরাময় হবে।’

এ ঘটনার পর পরের দিন দুই ভাই বাড়ি থেকে প্রায় ৫০০ গজ দূরে একটি পুকুর পারে খুঁটি দুটি দেখতে পায়। তারপর থেকে তারা দুই ভাই খুঁটিগুলোকে দেবতা মনে করে পূজা অর্চনা করতে থাকে। সে থেকে ওই এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন গাছের খুঁটি দুটিকে প্রতিবছর পহেলা জ্যৈষ্ঠে বিশেষ পূজা অর্চনা করে আসছে। পরে দুটি খুঁটি থেকে একটি হারিয়ে যায়।

আরও জানান, খুঁটিটি পূজামণ্ডপের পার্শ্ববর্তী একটি পুকুরে সারা বছর ডুবিয়ে রাখা হয়। পাগল ভক্তরা ভক্তি করার জন্য প্রতিবছর পুকুর থেকে খুঁটিটি উঠিয়ে দুধ দিয়ে গোসল করায়। তাছাড়া ফল ফলাদি ঘি, খাসি ও পাঠাবলি দিয়ে পাগলা খুঁটির নামে উৎসর্গ করে। পূজা শেষে খুঁটিটি আবার ওই পুকুরে পানিতে ডুবিয়ে রাখা হয়। মেলায় দেশের বিভিন্ন পান্ত থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন ছাড়াও বিভিন্ন ধর্মের হাজার হাজার লোকজনের সমাগম ঘটে।

সরজমিনে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, দোকানিরা তাদের পণ্যের পসরা নিয়ে বসেছেন। তাছাড়া অনেকেই মেলায় নাগর দোলা, বাঁশের বাঁশি, কাঠের চেয়ার, হাতপাখা, চৌকি, মোড়া, চুড়ি প্লাস্টিকের খেলনা, মিষ্টির দোকানসহ বিভিন্ন সামগ্রী সাজিয়ে বসেছেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল ছাড়াও পার্শ্ববর্তী ভারত থেকে পুণ্যার্থীরা মেলায় অংশ নেওয়ার জন্য ওই এলাকায় তাদের স্বজনদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছেন।

হামছাদী গ্রামের মনির হোসেন বলেন, এ মেলা হিন্দু সম্প্রদায়ের বড় মিলন মেলা। ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি। এই মেলায় গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে আত্মীয় স্বজনদের মিলনমেলায় এক প্রকার উৎসবে পরিণত হয়। প্রতিবছর এ মেলার জন্য স্বজনরা অপেক্ষা করে থাকে।

পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি কেশব বলেন, পাগলা গাছের মেলা আমাদের হিন্দু সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য বহন করে আসছে। মেলার আনুষ্ঠানিকতা পূজা অর্চনার মধ্য দিয়ে শুরু হয়। মেলা শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপন করার লক্ষ্যে এলাকায় নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা। সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এ মেলায় গীতা পাঠ, কীর্তনসহ সনাতন ধর্মের বিভিন্ন সংগীত পরিবেশিত হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬:৪৬:৫৩   ১৭২ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

ছবি গ্যালারী’র আরও খবর


আজকের রাশিফল
আল কোরআন ও আল হাদিস
আদালতে দায় স্বীকার করলেন সাবেক সিইসি নুরুল হুদা
ঢাকার বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে ‘ডিগ্রেডেড এয়ারশেড’ ঘোষণা করা হবে : পরিবেশ উপদেষ্টা
জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল বাংলাদেশের ঐতিহাসিক পটপরিবর্তন : সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা
জুলাই আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের জন্য মাসুদুজ্জামানের দোয়া ও মিলাদ
হালদা পাড়ে তামাক চাষ বন্ধের আহ্বান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টার
প্রকৃত গণতন্ত্র নিশ্চিত হলেই বৈষম্য নিরসন হয় : গণশিক্ষা উপদেষ্টা
ঐক্য বজায় রাখার আহ্বান বেগম খালেদা জিয়ার
জামালপুরে ভর্তুকি দিয়ে ১৮ হাজার আগ্রাসী চারাগাছ নিধন

News 2 Narayanganj News Archive

আর্কাইভ