টানা বৃষ্টিতে ডুবে গেছে ফসলি জমি, দিশেহারা কৃষক

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » টানা বৃষ্টিতে ডুবে গেছে ফসলি জমি, দিশেহারা কৃষক
বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫



টানা বৃষ্টিতে ডুবে গেছে ফসলি জমি, দিশেহারা কৃষক

দেশের অন্যান্য জেলার মতো লালমনিরহাটেও গত কয়েকদিন ধরে অবিরাম বৃষ্টিতে জেলার বিস্তীর্ণ ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে ধান, ভুট্টা, শাকসবজি, বাদাম ও কাউনসহ এ মৌসুমের প্রায় সব ধরনের ফসলের মারাত্মক ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ক্ষতির আশঙ্কায় দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন জেলার শত শত কৃষক।

জেলার বিভিন্ন এলাকায় এখনও বোরো ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ শেষ হয়নি। কেউ কেউ ধান কাটলেও বৃষ্টির কারণে তা মাড়াই করতে পারছেন না। আবার অনেকের ক্ষেত এখনও পানির নিচে ডুবে রয়েছে। এতে ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা বেড়েছে।

সরেজমিনে এলাকার কৃষি জমি ঘুরে দেখা যায়, টানা বৃষ্টির কারণে অনেক জমিতেই ফসলের আর তেমন কোনো চিহ্ন নেই। চারদিকে শুধুই থইথই পানি। মনে হচ্ছে যেন বিস্তীর্ণ ফসলি জমি ছোট ছোট নদীতে পরিণত হয়েছে।
মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের চিনি পাড়া গ্রামের কৃষক সিরাজুল ইসলাম জানান, তিনি তিন বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করেছিলেন। চার মাসের পরিশ্রমের পর ধান পেকে গেলেও এখন সবই পানির নিচে। শ্রমিক সংকটের কারণে এখনও দুই বিঘার ধান ঘরে তুলতে পারেননি।

তিনি বলেন, ‘শ্রমিকরা জমিতে পানি দেখে ধান কাটতে রাজি হয় না। বাধ্য হয়ে কেউ কেউ কলাগাছের ভেলা বানিয়ে ধান কেটে নিচ্ছেন। দুই-তিন দিনের মধ্যে ধান কেটে ঘরে না তুলতে পারলে ধান অনেকটাই নষ্ট হয়ে যাবে।’

কৃষি শ্রমিক আকবর আলী বলেন, টানা বৃষ্টির কারণে আশেপাশের এলাকা থেকে ফসলি জমিতে ময়লা পানি জমেছে। মূলত এই দূষিত পানির কারণেই আমরা পানিতে নেমে ধান কাটতে চাই না। পানিতে ময়লা, আবর্জনা, পোকামাকড় ভেসে বেড়াচ্ছে। এতে গায়ে চুলকানি, ঘা, এমনকি জ্বরও হচ্ছে। এর আগে অনেকেই পানিতে নেমে কাজ করে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাছাড়া কৃষকরাও ঠিকমতো মজুরি দিতে চান না। তাই আমরা এই পরিস্থিতিতে পানিতে নেমে ধান কাটতে চাই না ।

চরবাসুরিয়া গ্রামের কৃষক রবিউল ইসলাম বলেন, চরাঞ্চলে বছরে একবারই ভালো ফসল হয়। এবার এক একর জমির সব ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। শুধু ধানই নয়, ভুট্টা, শাকসবজি, বাদাম ও কাউনসহ বিভিন্ন ধরনের ফসলও পানিতে ডুবে গেছে। তিনি হতবিহ্বল কণ্ঠে বলেন, কখন পানি নামবে, সেটাও জানি না!

শুধু ফসলই নয়, ক্ষতি হয়েছে মাছ চাষেও। চিনি পাড়া গ্রামের কৃষক তৌহিদ আলী বলেন, ‘টানা বৃষ্টিতে পুকুরের পাড় ভেঙে আমার সব মাছ ভেসে গেছে। আমার সব শেষ! ’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. সাইখুল আরিফিন বলেন, ‘চলতি মৌসুমে ধান পরিপক্ব অবস্থায় রয়েছে। পানিতে ডুবে গেলেই সব ধান নষ্ট হবে তা নয়। যদি দ্রুত পানি সরে যায়, তাহলে ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা অনেকটা কমে যাবে। তবে কিছু এলাকায় অন্যান্য ফসলের আংশিক ক্ষতি হয়েছে। আমরা কৃষকদের পাশে আছি। আমরা নিয়মিত খোঁজখবর রাখছি এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।’

তিনি ফসলি জমি থেকে সেচের মাধ্যমে কৃষিজমির পানি অপসারণ করে পানি দ্রুত সরানোর ব্যবস্থা করা যেতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ অবস্থা আরো দুই তিন দিন অব্যাহত থাকলে ক্ষতির মাত্রা আরও বাড়বে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮:২২:৫০   ১২০ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

ছবি গ্যালারী’র আরও খবর


১২ অক্টোবর থেকে দেশব্যাপী টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন
ফেব্রুয়ারির পর চলে যেতে হবে, মানুষের জন্য কিছু করে যেতে চাই - অর্থ উপদেষ্টা
সোনারগাঁয়ে মাছের ঘেরের মাচায় ঝুলছে রঙিন তরমুজ
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও হাসিনার বিচার ত্বরান্বিত করতে নির্বাচিত সরকার দরকার: দুদু
জনগণ সত্যের পক্ষে রায় দিলে ৫ বছরের মধ্যেই দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করা সম্ভব: জামায়াত আমির
দেশে এমন কিছু শক্তির উত্থান ঘটছে যা গণতন্ত্রের চর্চার জন্য মারাত্মক হুমকি: রিজভী
নড়াইলে দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা
বাড়িতে ভয়াবহ গোলাগুলি, প্রাণে বাঁচলেন দিশা পাটানির বাবা
মেসির পেনাল্টি মিসের দিনে ২১ বছরের তরুণের কাছে বিধ্বস্ত মায়ামি
ভোলা উপকূলে জেলেদের জালের জীবন জলে বন্দী

News 2 Narayanganj News Archive

আর্কাইভ