এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা সব প্রতিভায় ঠাঁসা দুটি দল স্পেন ও ফ্রান্স। এক দলে যেমন লামিনে ইয়ামাল, পেদ্রি, নিকো উইলিয়ামসরা আলো ছড়াচ্ছেন, অন্য দলেও কিলিয়ান এমবাপ্পে, ওসমান দেম্বেলে, দিজেরে দুয়ে, মাইকেল অলিসের মতো সময়ের সেরা প্রতিভাদের মিলনমেলা। আবার এই ম্যাচটা ছিল এবারের মৌসুমে ব্যালন ডি’অরের দুই শীর্ষ প্রতিযোগী দেম্বেলে ও ইয়ামালের দ্বৈরথ হিসেবেও। মাঠেও লড়াইয়ে অবশ্য রোমাঞ্চের পারদ ছাড়িয়ে গেছে প্রত্যাশাকেও। ৫৫ মিনিটের মধ্যে ৪-০ গোলে পিছিয়ে পড়া ফ্রান্স নাটকীয়ভাবে ম্যাচে ফিরে এসেছিল। কিন্তু শেষ হাসি হেসেছে স্পেনই।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) এমএইচপিঅ্যারেনায় উয়েফা নেশন্স কাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ফ্রান্সকে ৫-৪ ব্যবধানে হারিয়েছে স্পেন। প্রথমার্ধের ২৫ মিনিটের মধ্যে নিকো উইলিয়ামস ও মিকেল মেরিনোর গোলে এগিয়ে যায় স্পেন। এরপর দ্বিতীয়ার্ধের ৫৫ মিনিটের মধ্যে লামিনে ইয়ামাল ও পেদ্রি আরও দুই গোল করলে ৪-০ গোলে এগিয়ে যায় স্পেন। কিলিয়ান এমবাপ্পে পেনাল্টি থেকে একটি গোল শোধ করলেও ইয়ামাল আবার ব্যবধান বাড়ান।
কিন্তু এরপরেই ঘুরে দাঁড়ায় ফ্রান্স। রায়ান চেরকি, র্যান্ডাল কোলো মুয়ানি ও দানি ভিভিয়ানের গোল করলে শেষ পর্যন্ত লড়াইয়ে টিকে তাকে ফ্রান্স।
আগামী রোববার (৮ জুন) অ্যালিয়াঞ্জ অ্যারেনায় ফাইনালে পর্তুগালের বিপক্ষে খেলবে স্পেন।
এই ম্যাচের আগে ব্যালন ডি’অর নিয়ে ইয়ামালের বক্তব্য বিতর্ক উসকে দেয়। এই তরুণ স্প্যানিশ উইঙ্গার ব্যালন ডি’অরের মাপকাঠি নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। তার মতে বিশেষ বিশেষ ম্যাচের পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে এই পুরস্কার দেয়া হয়, কিন্তু পুরো মৌসুমের পারফরম্যান্সকে বিবেচনা করা উচিত। বার্সেলোনার হয়ে দারুণ মৌসুম কাটানো ইয়ামাল ছাড়াও পেদ্রি ও রাফিনিয়া দীর্ঘ একটা সময় পুরস্কারটির জন্য ফেবারিট বিবেচিত হচ্ছিলেন। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে ইন্টার মিলানের কাছে হেরে বাদ পড়ে বার্সা। অন্যদিকে পিএসজির হয়ে ট্রেবল জিতে ওসমান দেম্বেলেই এখন টপ ফেবারিটের তকমা পাচ্ছেন।
গত রাতের ম্যাচে ইয়ামাল-পেদ্রি ও দেম্বেলে তিনজনই মাঠে ছিলেন। ইয়ামাল ও পেদ্রি স্পেনের হয়ে গোল পেলেও নিষ্প্রভ ছিলেন দেম্বেলে।
২২ মিনিটের মাথায় উইলিয়ামস এগিয়ে দেন স্পেনকে। তিন মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মেরিনো। এই দুই গোলেই সহায়তা করেন মিকেল ওয়ারজাবাল। ২ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় স্পেন।
বিরতি থেকে ফিরেই ফের গোল পায় স্পেন। পেনাল্টি থেকে গোল করেন ইয়ামাল। পরের মিনিটে উইলিয়ামসের বানিয়ে দেয়া বল থেকে গোল করেন পেদ্রি। চার গোল হজম করে ফ্রান্স তখন দিশেহারা।
এর চার মিনিট পর পেনাল্টি পায় ফ্রান্স। স্পটকিক থেকে গোল করে ব্যবধান কমান এমবাপ্পে।
গোলের পর এক সঙ্গে তিন খেলোয়াড় বদল করেন ফ্রান্সের কোচ দেশাম। পিয়েরে কালুলুর বদলি মালো গুস্ত, মাইকেল অলিসের বদলি রায়ান চেরকি ও দিজেরে দুয়ের বদলি হিসেবে ব্র্যাডলি বারকোলাকে নামান তিনি।
স্পেনের কোচ দে লা ফুয়েন্তেসও নিকো উইলিয়ামসকে তুলে দানি ওলমো, পেদ্রির বদলি হিসেবে ফাবিয়ান রুইজকে নামান। বদলি নামানোর ৪ মিনিট পরেই ফের গোল খায় ফ্রান্স। পেদ্রো পোরোর বানিয়ে দেয়া বলে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন ইয়ামাল।
৭২ মিনিটে ক্লেমেন্ত লংলের বদলে লুকাস হার্নান্দেজ ও দেম্বেলের বদলে কোলো মুয়ানিকে নামান দেশাম। দে লা ফুয়েন্তেসও লে নরম্যান্ডকে তুলে দানি ভিভান ও ওয়ারজাবালকে তুলে সামু আঘেহয়াকে নামান।
মাঠে নামার পর থেকেই দারুণ খেলছিলেন চেরকি। তার পা থেকেই আসে ফ্রান্সের দ্বিতীয় গোল। সদ্যই ম্যানসিটিতে যোগ দেয়া চেরকি এমবাপ্পের পাস থেকে গোলটি করেন। ৮৪ মিনিটে ভিভান নিজেদের জালে গোল দিয়ে বসলে ম্যাচে উত্তেজনা তৈরি হয়। সমতা ফেরাতে মরিয়া হয়ে আক্রমণ চালাতে থাকে ফ্রান্স।
কিন্তু গোল পেতে বেশিই দেরি করে ফেলেছে ফরাসিরা। যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে চেরকির পাস থেকে কোলো মুয়ানি আরও একটি গোল শোধ করে। এর তিন মিনিট পর শেষ বাজি বাজায় রেফারি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭:০৫:৩৯ ১৭ বার পঠিত