
ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) বাহারুল আলম প্রতিটি পুলিশ সদস্যকে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও জননিরাপত্তা বিধান পুলিশের দায়িত্বের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
আজ বুধবার রাজারবাগের বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে মে-২০২৫ মাসের মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় উপস্থিত ডিএমপির পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি এ নির্দেশনা দেন।
আইজিপি বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) বাংলাদেশ পুলিশের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট। ডিএমপির কাছ থেকে জনগণ উৎকৃষ্ট সেবা ও পেশাদারিত্ব আশা করে। থানা এলাকায় মোবাইল ডিউটি, গার্ড ডিউটি এবং কূটনৈতিক দায়িত্ব পালনকালে সর্বদা সতর্ক ও প্রস্তুত থাকতে হবে। কর্মকর্তাদের মনোযোগ ও দায়িত্ব পালনে যাতে কোনো বিঘ্ন না ঘটে সে কারণে ডিউটি চলাকালে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা যাবে না।
এছাড়া, জনগণকে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে ডিএমপির কর্মকর্তাদের মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেন তিনি।
মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, যেকোনো অপরাধের ক্ষেত্রে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অপরাধীদের শনাক্ত করে গ্রেফতারের হার আরও বাড়াতে হবে। ডিবি পুলিশসহ সকল পুলিশ সদস্যদের আরো কার্যকরভাবে দায়িত্ব পালন করে নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, দলমত নির্বিশেষে জাতীয় স্বার্থে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে জনগণকে একটি সফল নির্বাচন উপহার দিতে হবে। জনগণের কল্যাণে শতভাগ নিরপেক্ষভাবে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করে এই প্রক্রিয়া সফল করতে হবে। নির্বাচনের সময় যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ সবসময় প্রস্তুত থাকবে।
সভায় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) ফারুক আহমেদ বলেন, নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম ও নাশকতার বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। দাগি আসামিদের গুরুত্বপূর্ণ ওয়ারেন্ট তামিল আরো বাড়াতে হবে।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস্) এস এন মো. নজরুল ইসলাম বলেন, মাঠ পর্যায়ে কর্মরত কর্মকর্তাদের কাজের গতি আরো বাড়িয়ে ওয়ারেন্ট তামিলের হার বৃদ্ধি করতে হবে। তাছাড়া ভাড়াটিয়াদের তথ্য হালনাগাদ করে সিআইএমএস-এ দ্রুত অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
তিনি বলেন, জুলাই আন্দোলনের মামলাগুলো সঠিকভাবে তদন্ত করে দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে। ঝটিকা মিছিল বন্ধে থানাগুলোকে সতর্ক ও সজাগ থাকতে হবে।
সভায় যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) মো. ফারুক হোসেন মে-২০২৫ মাসের সার্বিক অপরাধ পরিস্থিতি যেমন-ডাকাতি, দস্যুতা, চুরি, সিঁধেল চুরি, খুন, অপমৃত্যু, সড়ক দুর্ঘটনা, নারী ও শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ, মাদকদ্রব্য ও অস্ত্র উদ্ধারসহ বিভিন্ন মামলা সংক্রান্ত তথ্য উপস্থাপন করেন। এসময় ডিএমপি কমিশনার উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের বিভিন্ন নির্দেশনা প্রদান করেন।
মাসিক অপরাধ সভায় মে মাসে ঢাকা মহানগরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও জননিরাপত্তা বিধানসহ উত্তম কাজের স্বীকৃতি হিসেবে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ডিএমপির বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তাগণকে পুরস্কৃত করেন ডিএমপি কমিশনার।
অপরাধ পর্যালোচনা সভায় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. সরওয়ার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস্, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) হাসান মো. শওকত আলী, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. মাসুদ করিম, যুগ্ম পুলিশ কমিশনাররা, উপ-পুলিশ কমিশনাররা, ডিএমপির সকল থানার অফিসার ইনচার্জরা ও বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৫৭:৩২ ১৩ বার পঠিত